কোনও রকম চিকিৎসা না হলে কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা দেয় ক্যানসার। ছবি: সংগৃহীত
মুখের এক দিকের মাংস যেন গলে পড়ছে। গলে পড়ছে কান, চোখ, নাক। সেই ঝুলন্ত মাংসপিণ্ড নিয়েই কোনওক্রমে বেঁচে আছেন তিনি। নাম, গোবর্ধন দাস। থাকেন পঞ্জাবে। ৫২ বছর বয়সি গোবর্ধন ‘নিউরোফাইব্রোমাটোসিস’ নামের এক বিরল রোগে আক্রান্ত। সেই রোগেই বদলে গিয়েছে তাঁর মুখের আদল।
গোবর্ধনের অসুখটি টাইপ-১ নিউরোফাইব্রোমাটোসিস। ব্রিটেনের ন্যাশনাল হেল্থ সার্ভিস বলছে, এই রোগে ত্বকের নীচে স্নায়ু বরাবর একাধিক নরম টিউমর তৈরি হয় শরীরে। সাধারণ ভাবে এই টিউমরগুলি ক্যানসার সৃষ্টিকারী টিউমর নয়। বিজ্ঞানের ভাষায় এগুলিকে বলে, নিউরোফাইব্রোমাস। বছরের পর বছর এই টিউমর ক্রমশ বৃদ্ধি পেতে থাকে। দেখা দেয় আনুষঙ্গিক বিভিন্ন উপসর্গ। কোনও রকম চিকিৎসা না হলে কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা দেয় ক্যানসার। এনএফ১ নামের একটি জিনে সমস্যা থাকলে এই রোগ হতে পারে। পরিসংখ্যান অনুসারে, ৫০ শতাংশ রোগীর ক্ষেত্রেই, বাবা-মায়ের দেহ থেকে এই জিন সন্তানের দেহে সঞ্চারিত হয়।
গোবর্ধন জানিয়েছেন, ২০ বছর বয়স পর্যন্ত কোনও উপসর্গ ছিল না তাঁর। কিন্তু তার পরই ছোট ছোট উপবৃদ্ধির মতো মুখের ডান দিকে টিউমর দেখা দিতে শুরু করে। এর পর প্রায় ৩০ বছর ধরে ক্রমাগত বাড়তে বাড়তে এখন এই অবস্থা তাঁর। ডান চোখের দৃষ্টি শক্তি হারিয়ে গিয়েছে, নাক দিয়ে শ্বাস নিতেও কষ্ট হয় তাঁর। সঙ্গে ত্বকের জ্বালা-যন্ত্রণা তো রয়েছেই। খাওয়াদাওয়া করতেও বেশ সমস্যা হয়। শারীরিক সমস্যার সঙ্গে তাঁকে সহ্য করতে হয় মানুষের কটাক্ষও। রাস্তাঘাটে নিত্যদিন মুখের আকৃতির জন্য কটূক্তি শুনতে হয় তাঁকে। তাঁর একমাত্র সান্ত্বনা, বাড়ির লোকের ভালবাসা। প্রৌঢ় জানিয়েছেন, শারীরিক অসুস্থতার কারণে পরিবারের সদস্যদের ভালবাসায় কখনও ঘাটতি হয়নি। সেই ভালবাসা নিয়েই বেঁচে থাকতে চান তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy