Advertisement
E-Paper

বিপাকের ঝুঁকি আছে কি না বুঝবেন কী ভাবে? ওজন নয়, দৈর্ঘ্যে-প্রস্থের সহজ অঙ্কেই পেয়ে যাবেন জবাব!

বিপাকের ঝুঁকি বা মেটাবলিক রিস্ক বাড়লে হার্টের অসুখ থেকে শুরু করে ডায়াবিটিস এবং উচ্চ রক্ত চাপের সমস্যাও তৈরি হতে পারে। তবে আশার কথা এই যে, ঝুঁকির বিষয়টি জানতে কোনও মেডিক্যাল পরীক্ষা করাতে হবে না। বাড়িতে কয়েক মিনিটের মধ্যে নিজেই জেনে নিতে পারবেন।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ১০:০৪

ছবি : সংগৃহীত।

বিপাকের হার শুনেছেন। ওজন বাড়বে কি কমবে তা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নির্ভর করে শরীরের বিপাকের হারের উপর। বিপাকের হার যদি বেশি হয়, তবে খাবারের মাধ্যমে শরীরে যাওয়া ফ্যাট, কার্বোহাইড্রেট ইত্যাদি যা যা মেদ বৃদ্ধির কারণ হতে পারে, তা দ্রুত ভাঙে। পরিণত হয় শক্তিতে। ফলে শরীরে বাড়তি মেদ জমতে পারে না। বশে থাকে ওজন। এর উল্টোটা হলে মুশকিল। সে ক্ষেত্রে শরীরে মেদ সহজেই জমতে থাকে। ওজন ঝরাতে ছোটে কালঘাম। খাবারে রাশ টেনেও আশানুরূপ ফল যদি না মেলে তবে বুঝতে হবে তার কারণ বিপাকের ঝুঁকি বা মেটাবলিক রিস্ক। এটি কোনও রোগ নয়। তবে এটি এমন কিছু স্বাস্থ্য সূচকের সমষ্টি, যা শরীরে একসঙ্গে দেখা দিলে নানা রোগের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে।

বিজ্ঞান বলছে, বিপাকের ঝুঁকি বা মেটাবলিক রিস্ক বাড়লে হার্টের অসুখ থেকে শুরু করে ডায়াবিটিস এবং উচ্চ রক্ত চাপের সমস্যাও তৈরি হতে পারে। তবে আশার কথা এই যে, বিপাকীয় ঝুঁকির বিষয়টি জানতে কোনও মেডিক্যাল পরীক্ষা করাতে হবে না। যেতে হবে না চিকিৎসকের কাছেও। বাড়িতে কয়েক মিনিটের মধ্যেই নিজের মেটাবলিক রিস্ক কতটা বেশি বা কম অথবা আদৌ কোনও ঝুঁকি আছে কি না, তা একটি সহজ হিসাব কষে বার করে নেওয়া যায় নিজে নিজেই।

হিসাব করার পদ্ধতিটি শিখিয়েছেন মুম্বইয়ের তারকা পুষ্টিবিদ পূজা মাখিজা। যিনি অভিনেত্রী দীপিকা পাড়ুকোনের পুষ্টিবিদ। কাজ করেছেন রণবীর কপূর, শাহিদ কপূর, সোনম কপূর, বিদ্যা বালনের মতো বলিউড তারকাদের সঙ্গেও। পূজা জানিয়েছেন, বাড়িতে একটি লম্বা দড়ির সাহায্যেই নিজের বিপাকীয় ঝুঁকি মেপে নেওয়া যেতে পারে।

কী ভাবে নিজের মেটাবলিক রিস্ক মাপবেন?

১। একটি প্রমাণ মাপের দড়ি নিতে হবে। যা দৈর্ঘ্যে আপনার উচ্চতার থেকেও বেশি হতে হবে।

২। প্রথমে ওই দড়ি দিয়ে নিজের উচ্চতা মাপুন। ঠিক যতটুকু উচ্চতা হচ্ছে, তা বাদে বাকি অংশটুকু কেটে বাদ দিন।

৩। এই বার ওই দড়ির মাঝামাঝি অংশ থেকে সমান ভাবে ভাঁজ করুন।

৪। ভাঁজ করা দড়িটি দিয়ে কোমরের মাপ নিন। পেট না টেনে, স্বাভাবিক শ্বাস বজায় রেখে, সোজা দাঁড়িয়ে নাভির বিন্দু বরাবর ওই মাপ নিতে হবে।

৫। যদি দেখেন মাপে ছোট হচ্ছে অর্থাৎ ভাঁজ করা দড়ি দিয়ে কোমরের পুরোটা মাপা যাচ্ছে না তবে আপনার মেটাবলিক রিস্ক আছে।

৬। যদি দেখেন মাপে মাপে মিলে যাচ্ছে, তাহলে ঝুঁকির মাত্রা কম।

৭। আর যদি দেখা যায় ওই ভাঁজ করা দড়ির বেড়ের থেকেও আপনার কোমরের মাপ কম, তবে মেটাবলিক রিস্ক বা বিপাকীয় ঝুঁকি প্রায় নেই বললেই চলে।

অথবা সহজ অঙ্ক

দড়ির পরীক্ষা জটিল মনে হলে একটি সহজ অঙ্কও কষে নিতে পারেন। ব্রিটেনের সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবা সংস্থা ন্যাশনাল হেল্থ সার্ভিসের নিজস্ব ওয়েবসাইটে মেটাবলিক রিস্ক মাপতে ওই অঙ্ক কষার কথা বলা হয়েছে। তারা বলছে, “মেটাবলিক রিস্ক মাপার সহজ পদ্ধতি হল একটি অঙ্ক। যেখানে আপনার কোমরের মাপকে উচ্চতা দিয়ে ভাগ করতে হবে। ভাগ ফল যদি ০.৫০ বা তার কম হয় তবে মেটাবলিক রিস্ক কম। যদি ০.৫১ হয় তবে মেটাবলিক রিস্ক রয়েছে। তার মানে, রয়েছে নানা ধরনের জটিল রোগের ঝুঁকিও।”

অর্থাৎ কারও কোমরের মাপ যদি ৮০ সেন্টিমিটার হয় আর উচ্চতা যদি হয় ১৬০ সেন্টিমিটার তবে ৮০÷১৬০=০.৫০। এক্ষেত্রে মেটাবলিক রিস্ক কম। কিন্তু কারও উচ্চতা যদি ১৬৫ সেমি আর কোমর ৮৫ সেমি বা তার বেশি হয় তবে অঙ্কের হিসাব দাঁড়াচ্ছে ৮৫÷১৬৫=০.৫২। অর্থাৎ তাঁর শরীরে মেটাবলিক রিস্ক বেশি। অর্থাৎ তাঁকে অবিলম্বে খাওয়াদাওয়া নিয়ন্ত্রণ করে শরীরচর্চা করে চেহারায় সাযুজ্য আনতে হবে, যাতে শরীর সুস্থ এবং রোগমুক্ত থাকে।

কেন এই ভাবে মেটাবলিক রিস্ক বোঝা যায়?

পুষ্টিবিদ জানাচ্ছেন, অনেকেই সুস্বাস্থ্যের লক্ষণ মাপার সময় বডি মাস ইনডেক্স বা বিএমআই-এ বেশি গুরুত্ব দেন। যেখানে শরীরের ওজন আর উচ্চতার একটি বিশেষ অনুপাত হিসাব করে বার করা হয়। কিন্তু সেটি সঠিক পদ্ধতি নয়। পূজা বলছেন, ওজন এ ক্ষেত্রে ততটাও গুরুত্বপূর্ণ নয়। জরুরি হল, শরীরের দৈর্ঘ্য-প্রস্থের অনুপাত।

বিশেষ করে ভারতীয়দের ক্ষেত্রে এই অঙ্কটি জরুরি। কারণ, অনেক সময়েই দেখা যায় এদেশের মানুষের ওজন কম হলেও শরীরের কিছু বাড়তি মেদ পেটে এবং কোমরের অংশে জমেছে। এ ক্ষেত্রে ওজন কম হলেও তাকে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী বলা যাবে না।

আসলে, বুকের নীচ থেকে তলপেট পর্যন্ত অংশে শরীরের নানা গুরুত্বপূর্ণ প্রত্যঙ্গ রয়েছে। তার আশেপাশে মেদ বা অস্বাস্থ্যকর চর্বির বাহুল্য থাকলে তা নানা রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। মেটাবলিক রিস্কের পরীক্ষা সেই ঝুঁকি স্পষ্ট করে চিনিয়ে দেয়। ফলে সুস্থ থাকার মানদণ্ড নিজের হাতেই থাকে।

Metabolic Rate Metabolism Health Care Tips
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy