মধুর পুষ্টিগুণ অনেক। ছবি: ফ্রিপিক।
পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ মধু শরীরের জন্য ভীষণ উপকারী। মধুর উপকারিতার শেষ নেই। অনেকেই ভাবেন, মধু বুঝি শীতকালেই খাওয়া যায়। তা নয়। মধু যে কোনও মরসুমের জন্যই স্বাস্থ্যকর। কেউ সর্দি-কাশি কমানোর জন্য মধু খান, আবার কেউ ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে উষ্ণ গরম জলে মধু মিশিয়ে খান। খাঁটি মধুতে যথেষ্ট পরিমাণে থাকে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, বেশ কিছু ভিটামিন ও খনিজ— যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। মধু হার্টের স্বাস্থ্যও ভাল রাখে। শরীরের যে কোনও প্রদাহ কমাতেও মধুর জুড়ি মেলা ভার।
এখন প্রশ্ন হল, মধু কখন ও কী ভাবে খেলে বেশি উপকার পাওয়া যাবে। এই বিষয়ে পুষ্টিবিদ শম্পা চক্রবর্তী পরামর্শ দিচ্ছেন, দিনের যে কোনও সময়েই মধু খাওয়া যাবে। তাতে কোনও সমস্যা নেই। তবে দিনের বেলা মধু খেলেই বেশি ভাল। এই নিয়ম যে সকলের জন্যই প্রযোগ্য তা নয়। কিছু ক্ষেত্রে মধু রাতেও খাওয়া যায়।
পুষ্টিবিদ জানাচ্ছেন, সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে এক গ্লাস উষ্ণ গরম জলে মধু ও লেবু মিশিয়ে খাওয়ার উপকারিতা কম নয়। ওজন যেমন নিয়ন্ত্রণে থাকবে, তেমনই হজমশক্তিও বাড়বে। সকাল থেকেই শরীর তরতাজা থাকবে, ক্লান্তিভাব কমবে। যদি অম্বলের সমস্যা বেশি থাকে, তা হলে লেবু বাদ দিতে পারেন। সে ক্ষেত্রে উষ্ণ গরম জলে মধু মিশিয়ে খেতে পারেন অথবা এক চামচ মধু এমনিই খেয়ে নেবেন। এতে সর্দি-কাশি বা অ্যালার্জির সমস্যা থাকলে তা কমে যাবে। মধু খেলে ত্বকের স্বাস্থ্যও ভাল থাকবে।
শরীরচর্চা করার আগে বা পরে মধু খেলে শরীর তরতাজা থাকে। সাধারণত দেখা যায়, শরীরচর্চা করার পরে ক্লান্তিভাব বাড়ে। তখন মধু খেলে শরীরে জোর পাওয়া যাবে। আবার যাঁদের ঘুমের সমস্যা রয়েছে তাঁরা রাতে শোয়ার আগে এক চামচ মধু খেতে পারেন। এতে শরীরের টক্সিন বেরিয়ে যাবে, হজমের গোলমাল থাকলে তা ঠিক হবে। শরীরের আর্দ্রতা বজায় থাকবে। তবে যদি ডায়াবিটিসের সমস্যা থাকে তা হলে কিন্তু মধু না খাওয়াই ভাল।
অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি এবং অ্যান্টিবায়োটিক উপাদান থাকায় মধু ক্ষত সারাতে সাহায্য করে। খাদ্যনালিতে সংক্রমণ হলে তার জন্যও মধু উপকারী। অন্ত্রে ক্ষতিকর ব্যাক্টেরিয়ার প্রভাব কমায় মধু। তবে মধু খেতে হবে পরিমিত। এক বা দু’চামচের বেশি নয়। আর সদ্যোজাত শিশুকে মধু খাওয়ানো ঠিক নয়। এতে অন্ত্রের সমস্যা হতে পারে। বিশুদ্ধ মধু এখন প্রায় বিরল। তাই বাজারে যে মধু পাওয়া যায় তা কতটা খাঁটি বোঝা যায় না। মধুর মধ্যে অনেক সময়েই রেণু থেকে যায় যা অ্যালার্জির কারণ হতে পারে। তাই শিশুদের ঘন ঘন মধু খাওয়ালে পেটের গোলমাল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
এখন অনেকেই জৈব মধু খান। তবে দেখে নেওয়া দরকার সেটি পরিশোধিত মধু কি না। শুধু কেনা নয় মধু ঠিকমতো সংরক্ষণ করাও জরুরি। মধুর শিশি কখনওই ফ্রিজে রাখবেন না। ঘরের সাধারণ তাপমাত্রায় রাখবেন। না হলে মধু নষ্ট হয়ে যাবে।
এই প্রতিবেদন সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা। মধু সকলের জন্য উপকারী না-ও হতে পারে। যদি ডায়াবিটিস বা অন্য কোনও অসুখ থাকে, তা হলে মধু খাবেন কি না বা খেলেও কী পরিমাণে খাবেন তা চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদের থেকে জেনে নেওয়াই ভাল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy