নিকটজনের পরামর্শে জিমে ভর্তি হয়েছিলেন। কিন্তু কয়েক দিনের মধ্যেই শরীরচর্চা বন্ধ। আর জিমে যেতে ইচ্ছে করে না। ভাবা যেতে পারে, এর নেপথ্যে ব্যক্তির অলস মানসিকতা দায়ী হতে পারে। কারণ এক দিন বা দু’দিন জিমে গেলে কোনও সুফল পাওয়া যায় না। উপকার পেতে গেলে নিয়মিত জিমে যেতে হবে। তবে সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, শরীরচর্চা চালিয়ে যাওয়ার নেপথ্যে মানুষের ব্যক্তিত্ব অনেকাংশে দায়ী। একই সঙ্গে সেই ব্যক্তি জিমে কোন ধরনের ব্যায়াম বেছে নিচ্ছেন, তার নেপথ্যেও রয়েছে মানুষের স্বভাব এবং চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য।
আরও পড়ুন:
কী জানা গিয়েছে
সম্প্রতি, ‘ফ্রন্টিয়ার্স ইন সাইকোলজি’তে জিম সম্পর্কিত গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে ব্যক্তির চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে শরীরচর্চার যোগসূত্র সন্ধান করা হয়েছে। গবেষকেরা জানতে পেরেছেন, যাঁরা অন্তর্মুখী স্বভাবের, তাঁরা সাধারণত জিমে গিয়ে সহজ ব্যায়াম করেন। পেশিবহুল সতীর্থদের সামনে প্রকাশ্যে শরীরচর্চা করতে তাঁরা পছন্দ করেন না। অন্য দিকে যাঁরা মেলামেশা করতে পছন্দ করেন, তাঁরা ওজন-সহ ব্যায়ম করতে পছন্দ করেন। তাঁরা নিয়মিত জিম যেতেও পছন্দ করেন। গবেষক ফ্লেমিনিয়া রঙ্কা বলেন, ‘‘আমরা জানতে পেরেছি, মানুষের পছন্দের ব্যায়ামের সঙ্গে তাঁর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের মধ্যে যোগসূত্র বর্তমান। এই গবেষণার উপর নির্ভর করে ব্যক্তির জন্য আদর্শ শরীরচর্চা রুটিন তৈরি করা যেতে পারে, যা তাঁকে জিমে যেতে উদ্বুদ্ধ করবে।’’
চমকপ্রদ তথ্য
এই পর্যবেক্ষণে ১৩২ জন মানুষকে আট সপ্তাহের জন্য সাইক্লিং এবং স্ট্রেন্থ ট্রেনিংয়ের আওতায় নিয়ে আসা হয়। শরীরচর্চার শেষে অংশগ্রহণকারীদের ক্লান্তি এবং ‘বিগ ফাইভ মডেল’-এর (পাঁচটি চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য) উপর নির্ভর করে নিয়মিত তাঁদের ওয়ার্কআউট রুটিনের বিশ্লেষণ করা হয়। শরীরচর্চাকে তাঁর উপভোগ করছেন কি না, তা-ও জানা হয়। ১৩২ জনের মধ্যে ৮৬ জন শরীরচর্চার রুটিনটি শেষ করেন এবং তাঁরা দু’মাসে আরও ফিট হয়ে ওঠেন। যাঁরা বিচক্ষণ এবং নিষ্ঠাবান, তাঁদের ক্ষেত্রে আবার শরীরচর্চা উপভোগ করার তুলনায়, সুস্থ থাকা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে জানা গিয়েছে। অর্থাৎ, শরীরচর্চায় অনীহার নেপথ্যে অনেক সময়েই অপছন্দের বা ভুল ব্যায়াম দায়ী হতে পারে। বিষয়টি অনেকাংশেই ব্যক্তির বিভিন্ন চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের উপর নির্ভরশীল বলেই জানা গিয়েছে।
কী করা উচিত
গবেষকদের অনুমান, চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য যেহেতু ব্যক্তিকে শরীরচর্চায় উদ্বুদ্ধ করে, তাই আগে শরীরচর্চার ধরন নির্বাচন প্রয়োজন। যে ধরনের ব্যায়াম পছন্দ, সেগুলি করতে পারলে নিয়মানুবর্তিতায় ছেদ পড়বে না। ফলে সময়ের সঙ্গে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যপূরণও সহজ হবে।