শীতের শাকসব্জি গুণ কম নয়। তবে শাকপাতা খেয়েও পুষ্টির অভাব হতেই পারে, সতর্ক করছেন পুষ্টিবিদেরা। কারণ, সবুজ সব্জি শুধু খেলেই হল না, সেই পুষ্টিগুণ কী ভাবে শরীরে শোষিত হয় তা জানাও জরুরি। পুষ্টিগুণ শোষণে বাধা পড়লেই, স্বাস্থ্যকর খাবার খেয়েও অপুষ্টির শিকার হতে পারেন যে কেউ।
যেমন পালং শাক, মেথিপাতা, অমরন্থ, সজনেপাতা— পুষ্টিগুণে একে-অন্যকে টেক্কা দেওয়ার ক্ষমতা রাখে।ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, আয়রন, অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টে ভরপুর সব্জিগুলি কিন্তু ক্ষেত্র বিশেষে অপুষ্টিরও কারণ হতে পারে। দিল্লির পুষ্টিবিদ লভনীত বাত্রা বলছেন, এই সব্জিগুলিতে অক্সালেট এবং ফাইটেটও থাকে, যা বিভিন্ন খনিজের সঙ্গে জোট বেঁধে পুষ্টি শোষণে বাধা সৃষ্টি করে। তার ফলে সব্জি খেলেও, সব সময় শরীর সঠিক ভাবে সেই পুষ্টি পায় না।
পুষ্টিবিদের মতে, তিল, মাখন, ঘি, তাহিনি( মধ্য প্রাচ্যের খাবার, সাদা তিল দিয়ে তৈরি সস্)-তে থাকে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট। এই ধরনের ফ্যাট পরিপাকের গতি কমিয়ে দেয়, ফলে অন্ত্র থেকে খাবারের পুষ্টিগুণ শোষণ ভাল ভাবে হয়।ক্যালশিয়াম, আয়রনের মতো খনিজ এতে ভাল ভাবে শোষিত হয়।
সবুজ শাকসব্জিতে থাকে ভিটামিন এ, কে, ই। এগুলি ফ্যাটে দ্রবীভূত ভিটামিন। ফলে এই ধরনের ভিটামিনের গুণ পেতে হলে খাবার ফ্যাট থাকা দরকার।লভনীতের কথায়, ঠিক এই কারণে, ভারতীয় খাবারে ফোড়ন দেওয়ার চল রয়েছে। রান্নার শেষে ঘি বা মাখন মিশিয়ে নেওয়ার এই যে প্রক্রিয়া তাতে শুধু স্বাদ বাড়ে না, সব্জির পুষ্টিগুণ শোষণও সহজ হয়।
স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে ফ্যাট উপাদান কী ভাবে খাবারে জুড়বেন?
• সাদা তিল শুকনো খোলায় নাড়িয়ে শাক রান্নার সময় উপর থেকে ছড়িয়ে দেওয়া যায়।
• শাকসব্জি হালকা ভাপিয়ে, অলিভ অয়েলে সাঁতলে তাহিনি (সাদা তিলের সস্) দিয়ে খাওয়া যেতে পারে।
• পালং হোক বা মেথি শাকের পদ— শেষ ধাপে অল্প ঘি বা মাখন যোগ করুন।
• শাকসব্জি হালকা ভাপিয়ে চিজ় সস্ দিয়েও খাওয়া যায়। কিংবা স্যালাডের সঙ্গে যোগ করতে পারেন টক দই বা গ্রিক ইয়োগার্ট।
• তরি-তরকারি ফোড়ন দিলে যেমন স্বাদ-গন্ধ বাড়বে, তেমনই তা পুষ্টিগুণ শোষণেও সহায়ক হবে।