Advertisement
E-Paper

বিপাকহার ভাল না হলে শত চেষ্টাতেও ওজন কমবে না! পদহস্তাসন অভ্যাসে সেই কাজ সহজ হবে

সংস্কৃতে ‘পদ’ শব্দের অর্থ ‘পা’। ‘হস্ত’ শব্দের অর্থ ‘হাত’। এই দু’টি সংস্কৃত শব্দের সমন্বয়ে এই আসনটির নাম হয়েছে পদহস্তাসন। এই আসন কী ভাবে অভ্যাস করতে হয়, সেই পদ্ধতি শিখে নিন।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০২৫ ১০:০৬
কী ভাবে করবেন পদহস্তাসন?

কী ভাবে করবেন পদহস্তাসন? চিত্রাঙ্কন: শৌভিক দেবনাথ।

অনেকেরই ধারণা, কিছু দিন ভাত-রুটি খাওয়া বন্ধ রাখলে এবং সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে ঈষদুষ্ণ জলে লেবুর রস আর মধু মিশিয়ে খেলেই বোধ হয় তরতরিয়ে মেদ ঝরে যাবে। কিন্তু বিষয়টা মোটেই ততটা ‘জলবৎ তরলং’ নয়। তার জন্য বিপাকহার সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকা প্রয়োজন।

দৈনন্দিন নানা কাজে শক্তির জোগান মেলে খাবার থেকে। খাবার মানে মূলত কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট এবং শর্করা। সেই খাবার বিপাক করে শরীর যত তাড়াতাড়ি তা শক্তিতে রূপান্তরিত করবে, শারীরবৃত্তীয় কাজ পরিচালনা করতে ততটাই সুবিধা হবে। কিন্তু শরীর এই কাজটা কত তাড়াতাড়ি করবে, তা নির্ভর করে শরীরের বিপাকক্রিয়ার উপর। এই কাজটি কিন্তু এক এক জনের শরীরে এক এক রকম ভাবে হয়। বিপাকক্রিয়া ভাল হলে বিপাকহারও উন্নত হয়। শারীরবৃত্তীয় সমস্ত কাজ পরিচালনা থেকে হরমোনজনিত রোগ— সবই নির্ভর করে এই বিপাকহারের উপর।

চিকিৎসকেরা বলছেন, বিপাকহার ভাল করতে গেলে জীবনযাপনে পরিবর্তন আনা দরকার। খাওয়া এবং ঘুমের পাশাপাশি শরীরচর্চার উপরেও বিশেষ ভাবে নজর দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন যোগ প্রশিক্ষকেরা। তাঁদের মতে, প্রতি দিন পদহস্তাসন অভ্যাস করলে বিপাক সংক্রান্ত সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে।

সংস্কৃতে ‘পদ’ শব্দের অর্থ ‘পা’। ‘হস্ত’ শব্দের অর্থ ‘হাত’। এই দু’টি সংস্কৃত শব্দের সমন্বয়ে আসনটির নাম হয়েছে পদহস্তাসন। ইংরেজিতে যাকে ‘হ্যান্ড-টু-ফুট পোজ়’ বলা হয়। নাম শুনে খানিকটা আন্দাজ করা যাচ্ছে যে, এই আসন অভ্যাস করার সময়ে হাত এবং পায়ের বিশেষ ভূমিকা থাকে। পদহস্তাসন কী ভাবে করতে হয়, সেই পদ্ধতি শিখে নিন।

কী ভাবে করবেন?

প্রথমে ম্যাটের উপর টান টান হয়ে দাঁড়ান। দুই পায়ের মধ্যে সামান্য ব্যবধান রাখুন। দু’হাত থাকুক দেহের দু’পাশে। সমস্ত শরীর শিথিল করে দাঁড়িয়ে স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস নিন।

ধীরে ধীরে শ্বাস নিতে নিতে কানের পাশ দিয়ে দু’হাত সোজা মাথার উপরে তুলুন। সমস্ত শরীর টান টান থাকবে।

এ বার শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে মেরুদণ্ড, নিতম্বের পেশি টেনে সামনের দিকে ঝোঁকার চেষ্টা করতে হবে। হাত দু’টি মাটির দিকে ঝুলন্ত অবস্থায় থাকবে।

হাঁটু যেন কোনও ভাবে ভাঁজ না হয়, সে দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। কোমর ভাঁজ হবে। কিন্তু পা পর্যন্ত পৌঁছোনোর জন্য কোমরে কোনও ভাবে চাপ দেওয়া যাবে না। বরং, নিতম্ব থেকে শরীরের উপরিভাগ টেনে সামনের দিকে ঝুঁকতে হবে।

কব্জি ভাঁজ করে দু’হাতের তালু এমন ভাবে মাটিতে রাখুন, যেন তার উপর পায়ের পাতার সামনের অংশটুকু তুলে রাখা যায়। একান্ত না পারলে হাত দিয়ে পায়ের পাতা ছুঁয়ে থাকুন। আরামদায়ক ভাবে যতটুকু করা সম্ভব, ততটুকুই করতে হবে।

খেয়াল রাখুন, ঘাড়, মাথায় যেন কোনও ভাবেই আঘাত না লাগে। এই অবস্থানে থাকুন ৩০ সেকেন্ড। চাইলে ৬০ সেকেন্ড পর্যন্ত থাকতে পারেন।

এ বার শ্বাস নিতে নিতে আবার আগের অবস্থানে ফিরে আসুন। পাশে রেখে শুরুর অবস্থানে ফিরে আসুন। এক রাউন্ড সম্পূর্ণ হল। এই ভাবে ৫–৭ রাউন্ড অভ্যাস করতে হবে।

শরীরের ভঙ্গির সঙ্গে তাল মিলিয়ে শ্বাস নেওয়া-ছাড়া অভ্যাস করতে পারলে ভাল হয়।

কেন করবেন?

পদহস্তাসন নিয়মিত অভ্যাস করলে শরীরের নমনীয়তা বজায় থাকে। বয়সকালে অনেকেই দেহের ভারসাম্য ধরে রাখতে পারেন না। তাঁদের জন্যেও এই আসনটি উপকারী। যাঁরা হজমের গোলমাল কিংবা গ্যাস-অম্বল নিয়ে জেরবার, তাঁরাও এই আসন অভ্যাস করতে পারেন। মেরুদণ্ড, পিঠ-কোমর সংলগ্ন পেশিতে রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে তুলতে পারে পদহস্তাসন। তাই পিঠ-কোমরের ব্যথা-বেদনা বশে থাকে।

সতর্কতা:

যদি সায়াটিকা, স্লিপ্‌ড ডিস্কের মতো রোগ থাকে, তা হলে পদহস্তাসন করবেন না। এ ছাড়া হার্টের অসুখ, উচ্চ রক্তচাপ, হাঁটুর ব্যথা, হার্নিয়া, স্পনডিলাইটিসের সমস্যা থাকলেও আসন করা যাবে না। প্রসূতিদেরও এই আসন অভ্যাস করা উচিত নয়।

Yoga Exercise Metabolism Metabolic Rate
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy