নিয়মিত ডায়েট করলে, মাঝে অনেকে ‘চিট ডে’ও রাখেন। ধরা যাক, কেউ সপ্তাহে ৬ দিন স্বাস্থ্যকর খাবার খাচ্ছেন। সপ্তম দিনটি তিনি মনের মতো ফাস্টফুড খেলেন। অনেকেই মনে করেন, নিয়মিত ডায়েট করার ফাঁকে এক দিন ইচ্ছে মতো খাবার খেলে কোনও ক্ষতি হয় না। কিন্তু সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় অন্য তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে। সেখানে দেখা গিয়েছে, ডায়েটে থাকাকালীন একটি দিনও নিজেকে ঠকালে বিপত্তি ঘটতে পারে।
আরও পড়ুন:
সম্প্রতি ‘ইমিউনিটি’ জার্নালে ফ্যাটের উপর একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, এক দিনও পাকস্থলীতে অধিক মাত্রায় ফ্যাট প্রবেশ করলে, দীর্ঘকালীন কোনও ক্ষতি হতে পারে। ফ্যাট পরিপাকতন্ত্রের মধ্যে রোগ প্রতিরোধী কোষের ক্ষতি করতে পারে।
গবেষণালব্ধ ফল
ইঁদুরের উপরে এই গবেষণাটি করা হয়েছে। পরীক্ষায় এক দল ইঁদুরকে নিয়মিত সুষম আহার দেওয়া হয়। অন্য দিকে বাকিদের যে খাবার দেওয়া হয়, তার মধ্যে ৩৬ থেকে ৬০ শতাংশ ছিল ফ্যাট। দেখা গিয়েছে, দ্বিতীয় গোত্রের ইঁদুরদের মধ্যে অতিরিক্ত ফ্যাটের কারণে পরিপাকতন্ত্রের উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হয়েছে। এই গবেষণার নেপথ্যে ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার সিরিল সিলেট এবং এলাইজ়া হল নামের দুই গবেষক। তাঁরা যৌথ বিবৃতিতে বলেছেন, ‘‘আমরা যত বেশি স্যাচুরেটেড খাবার খাই, শরীরে তত বেশি প্রদাহ সৃষ্টি হয়। শরীরে তা দীর্ঘ দিন কোনও লক্ষণ ছাড়াই রয়ে যায়। তার পর কোনও এক সময়ে তা মারাত্মক আকার ধারণ করে।’’
ফ্যাট এবং পাকস্থলী
গবেষকরা জানতে পেরেছেন, ডায়েটে ফ্যাটের পরিমাণ খুব বেশি হলে ‘আইএলসিথ্রিএস’ নামক একটি রোগ প্রতিরোধী কোষের কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়। এর ফলে তারা তখন নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে ইন্টারলিউকিন ২২ (আইএল ২২) নামক একটি ‘এজেন্ট’ তৈরি করে। আইএল ২২ কিছু অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল পেপটাইড, প্রোটিন উৎপাদন করে ক্ষতিকারক উপাদান এবং জীবাণুকে পরিপাকতন্ত্রে প্রবেশ করতে বাধা দেয়। কিন্তু উচ্চ ফ্যাট ডায়েট খেলে, তখন আইএল ২২-এর কার্যক্ষমতা কমে যায়। ফলে পাকস্থলী তখন খুবই দুর্বল হয়ে প়ড়ে। এর ফলে পেটের নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে।
এই গবেষণায় আরও দেখানো হয়েছে, কী ভাবে বেশি ফ্যাট জাতীয় ডায়েট খাওয়ার পর ব্যক্তির পেটের সমস্যা দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি, বিশ্বের যে সমস্ত দেশে ফাস্ট ফুডের চল বেশি তাদের সঙ্গে যে সমস্ত দেশে সুষম আহারের চল বেশি, উভয়ের মধ্যে তুলনামূলক আলোচনাও করা হয়েছে।