হাঁটতে চলতে গিয়ে শরীরের ভারসাম্য হারিয়ে বারে বারে পড়ে যাওয়ার প্রবণতা অনেক শিশুরই থাকে। ছোট থেকেই বেশি দৌড়ঝাঁপ করতে গেলে পায়ে যন্ত্রণা হয়। খেলতে গিয়ে আঘাতও পায় বেশি। আজ পা কেটে যাচ্ছে, তো কাল হাতের নানা জায়গা ফুলে গিয়ে কালশিটে পড়ছে। বেড়ে ওঠার বয়সে শিশুর যদি হাড়ের গঠন মজবুত না হয়, তা হলে পড়ে গিয়ে হাড় ভেঙে যাওয়া, হাড়ে চির ধরার মতো ঘটনা ঘটবেই। পরবর্তীতে তারাই অস্টিয়োপোরোসিসে আক্রান্ত হতে পারে। যাতে হাড় ভঙ্গুর হয়ে যাবে এবং হাড়ের ক্ষয় শুরু হবে বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে।
অনেক অভিভাবকই মনে করেন, হাড়ের যত্নে শুধু দুধ খেলেই পর্যাপ্ত পুষ্টি পাওয়া যাবে। তা নয়। হাড়ের শক্তি বৃদ্ধি করতে সঠিক খাওয়াদাওয়ার যেমন প্রয়োজন, তেমনই জরুরি ব্যায়ামও। শিশুদের অভ্যাস করাতে পারেন, এমন কিছু ব্যায়ামেই হাড় ও পেশির শক্তি বৃদ্ধি হবে। হাড়ের ঘনত্ব বাড়বে।
হাড়ের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে কী কী ব্যায়াম করাবেন?
সেতুবন্ধাসন
প্রথমে ম্যাটের উপর চিত হয়ে শুতে হবে। পায়ের পাতা মাটিতে ঠেকে থাকবে। ধীরে ধীরে মাটি থেকে কোমর তুলতে হবে। দুই হাত টানটান করে, গোড়ালি স্পর্শ করার চেষ্টা করতে হবে। ওই অবস্থানে ২০ সেকেন্ড থেকে আগের অবস্থানে ফিরে আসতে হবে। ৪ থেকে ৫ বার এই ভাবে অভ্যাস করাতে হবে।
বৃক্ষাসন
সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে নিজের দু’টি হাত নমস্কারের ভঙ্গিতে বুকের কাছে আনতে হবে। তার পর শরীরের ভারসাম্য রেখে ডান হাঁটু ভাঁজ করে পায়ের পাতাটি বাম ঊরুর উপর রাখতে হবে। ধীরে ধীরে মেরুদণ্ড সোজা রেখে হাত নমস্কার ভঙ্গিতে মাথার উপর তুলতে হবে। ওই ভঙ্গিতে এক পায়ের উপর দাঁড়িয়ে থাকতে হবে ২০ সেকেন্ড। এই ব্যায়াম হাড়ের শক্তিও বৃদ্ধি করবে, শরীরের ভারসাম্যও ঠিক রাখবে।
কোটিচক্রাসন
প্রথমে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে হাত দু'টিকে দু'পাশে টানটান করে ছড়িয়ে দিতে হবে। দুই পায়ের মধ্যে অন্তত দু’মিটারের মতো ব্যবধান রাখতে হবে। এ বার হাত দু'টি কোমরের দিকে যতটা পারা যায় মুড়িয়ে ডান দিকে ঘোরাতে হবে। এই সময়ে ডান হাত থাকবে ডান কোমরের পিছনে। বাঁ হাত থাকবে ডান দিকের কাঁধে। এই ভাবে অপর দিকেও করতে হবে বেশ কয়েক বার।
পদহস্তাসনসোজা হয়ে পা দু’টি একটু ছড়িয়ে দাঁড়াতে হবে। এ বার কোমর থেকে শরীরের সামনের অংশ মেঝের দিকে ঝুঁকিয়ে দিতে হবে। হাঁটু না ভেঙে গোড়ালি স্পর্শ করতে হবে। এই ভঙ্গিতে ২০ সেকেন্ড থেকে আগের অবস্থানে ফিরে যেতে হবে।