ঘুমের সমস্যা অনেকেরই হয়। তবে যদি দেখেন, দিন দিন ঘুমের চক্র নষ্ট হচ্ছে, রাতে শুয়ে ঘুম আসে না, দিনে ঝিমুনি আসে, দিনভর ক্লান্তি— তা হলে বুঝতে হবে, মানসিক চাপ মাত্রাতিরিক্ত বেড়েছে। পাশাপাশি, শরীরে ভিটামিন ও খনিজের ঘাটতিও শুরু হয়েছে। এর কারণ যেমন রোজের যাপনের কিছু বদভ্যাস, তেমনই শরীরচর্চার অভাব। কর্মব্যস্ততার কারণে শারীরিক কসরত করার সময় হয় না। এতে শরীরের বিভিন্ন পেশির সক্রিয়তা কমে। আবার কাজের চাপে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বেড়ে গেলে মনও ক্লান্ত হয়। দুইয়ের জাঁতাকলে পড়ে ঘুমের দফারফা হয়ে যায়। তাই নিশ্চিন্তের ঘুম চাইলে আগে শরীর ও মনের ক্লান্তি দূর করা প্রয়োজন। তার জন্য উপকারে আসতে পারে ভ্রামরী প্রাণায়াম।
এই প্রাণায়াম অভ্যাসের সময়ে শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে মুখ দিয়ে গুণগুণ করে ভ্রমরের মতো শব্দ করতে হয়। প্রাণায়ামের ভঙ্গিমা ও শব্দ স্নায়ুতন্ত্রের উপর প্রভাব ফেলে, ফলে মন স্থির হয়।
কী ভাবে করবেন?
১) আরামদায়ক ভঙ্গিতে বসুন। পদ্মাসন বা সুখাসনে বসতে পারেন। পিঠ সোজা থাকবে। চোখ বন্ধ রাখুন।
২) শ্বাসপ্রশ্বাস স্বাভাবিক ভাবে নিন। মুখ বন্ধ থাকবে।
৩) এ বার নাক দিয়ে ধীরে ধীরে শ্বাস নিন। কিছু ক্ষণ ধরে রেখে নাক দিয়েই শ্বাস ছাড়ুন। আর শ্বাস ছাড়ার সময়ে গলা দিয়ে গুনগুন করে আওয়াজ বার করতে হবে। কিন্তু ঠোঁট ফাঁক করলে চলবে না। মুখ বন্ধ রেখে আওয়াজ করতে হবে।
আরও পড়ুন:
৪) প্রক্রিয়াটি করার সময়ে দুই হাতের আঙুল দিয়ে কান বন্ধ করে রাখবেন।
৫) শ্বাস নেওয়া ও ছাড়ার প্রক্রিয়াটি ৩ সেট করে অন্তত ৫ বার করুন।
উপকারিতা:
রাতে শোয়ার আগে বা সকালে উঠে ভ্রামরী অভ্যাস করলে মন শান্ত হবে, অস্থিরতা কমবে।
দুশ্চিন্তা ও অবসাদ গ্রাস করলে ভ্রামরী অভ্যাস করে দেখতে পারেন, সুফল পাবেন।
মনোযোগ বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এই প্রাণায়াম।
স্নায়ুর রোগে ভুগলে এই প্রাণায়াম নিয়মিত অভ্যাস করতে পারেন। এতে মন শান্ত থাকবে, শারীরিক অস্বস্তিও কমবে।
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতেও ভ্রামরী উপকারী।
অনিদ্রার সমস্যা দূর করতে ভ্রামরী রোজ অভ্যাস করতে পারেন।
অস্ত্রোপচার বা কোনও অসুস্থতা কাটিয়ে ওঠার পরে ভ্রামরী অভ্যাস করলে শরীর ও মনের সতেজতা ফিরে আসবে।
কারা করবেন না?
জ্বর হলে বা সর্দি-কাশি ভোগালে আসনটি করবেন না।
মৃগীরোগ থাকলে আসনটি করা যাবে না।