এক মাসের মধ্যে ওজন কমানো সহজ ব্যাপার নয়। তার উপরে আলসেমি যদি বেশি থাকে, তবে তা এক প্রকার অসম্ভবই বলা যায়। ইউটিউব বা ফেসবুকের রিল দেখে ব্যায়াম তো শিখছেন, কিন্তু করতে গেলেই একরাশ আলস্য চেপে বসছে। তার উপরে কঠিন যোগব্যায়াম বা এক ঘণ্টার শারীরিক কসরতের ভিডিয়ো দেখে ভয় আরও বাড়ছে। ডায়েট করেও যে খুব কিছু লাভ হচ্ছে, তা-ও নয়। কারণ একটানা কঠোর ভাবে নিয়ম মেনে খাওয়াদাওয়া করা অনেকের পক্ষেই সম্ভব হয় না। তা হলে উপায়?
ওজন যদি এক মাসের মধ্যে অনেকটা কমাতে হয় এবং শরীরও সুস্থ রাখতে হয়, তা হলে ৩*৩ রুল আদর্শ। তিন মিনিট করে মাত্র তিনটি ব্যায়াম রোজ সকালে বা বিকেলে করলেই ওজন কমতে থাকবে। শরীরের সমস্ত পেশির সক্রিয়তা বাড়বে, রক্ত সঞ্চালন ঠিকমতো হবে। ব্যায়ামগুলি করতে শুরু করলেই বোঝা যাবে, আলস্য কতখানি কমেছে। দিনভর কাজের শেষেও শরীর চনমনে থাকবে, ঝিমুনি আসবেই না। ভুঁড়ি কমাতে যদি নাকানিচোবানি খেয়ে থাকেন, তা হলে তিন মিনিট করে তিনটি ব্যায়াম শিখে রাখাই ভাল। জিমে না গিয়ে, ওয়েট ট্রেনিং না করেও ৩০ দিনের মধ্যে ভুঁড়ি কমবে। তবে ব্যায়াম তিনটি করতে হবে পর পর।
৩x৩ রুল
স্কোয়াট
স্কোয়াট। ছবি: ফ্রিপিক।
শুরুটা স্কোয়াট দিয়ে করবেন। ইন্টারনেটের দৌলতে ক্রাঞ্চেস, লাঞ্জেস, পুশ-আপ, প্ল্যাঙ্ক বা স্কোয়াটের মতো ব্যায়ামের নাম এখন অনেকেই জানেন। তবে জেনে রাখা ভাল, অন্যান্য ‘অ্যাব-ওয়ার্কআউট’-এর মতো স্কোয়াট অত কঠিন নয়। কমবয়সিরা তো বটেই, চল্লিশের বেশি বয়সিদের জন্যও স্কোয়াট উপকারী। পেট, কোমর, নিতম্ব, ঊরু সবেরই ব্যায়াম হয়। বেসিক স্কোয়াটে দু’টি পা অল্প ফাঁক করে সোজা হয়ে দাঁড়াতে হবে। এ বার চেয়ারে বসার মতো ভঙ্গি করতে হবে। দু’টি জিনিস মাথায় রাখতে হবে। এক, শরীরের উপরের অংশ সামনে ঝুঁকবে না, কাঁধ সোজা থাকবে। নয়তো কোমরে চাপ পড়বে। দুই, ওঠা-বসার সময়ে গোড়ালিতে জোর দিতে হবে। ওজন হাতে নিয়ে বেসিক স্কোয়াটও বেশ উপকারী। কেটল বেল বা ডাম্বেল হাতে নিয়ে স্কোয়াট করা যায়। তবে ওজন তুলে করতে হলে প্রশিক্ষকের পরামর্শ নিতে হবে।
লাঞ্জেস
লাঞ্জেস। ছবি: ফ্রিপিক।
স্কোয়াটের পরে করতে হবে লাঞ্জেস। লাঞ্জেস খুব ভাল স্ট্রেচিং এক্সারসাইজ়। নিয়মিত করলে পা, পেট, কোমর ও নিতম্বের মেদ কমবে। পায়ের পেশির জোর বাড়বে। একটি পা সামনে এগিয়ে হাঁটু ভাঁজ করতে হবে, আর একটা পা পিছনে দিয়ে স্ট্রেচ করে বসার মতো করে শরীর উপর-নীচ করতে হবে। কাঁধ যেন সোজা থাকে। তিন মিনিট করে পা বদলে দুই পায়েই করতে হবে এই ব্যায়াম।
জাম্পিং জ্যাক
জাম্পিং জ্যাক। ছবি: এআই সহায়তায় প্রণীত।
শরীরের উপরের অংশ, নীচের অংশ, সবেরই ব্যায়াম হয়। সারা শরীরের পেশির নমনীয়তা বাড়ে। এই ব্যায়াম করলে ওজন কমা ছাড়াও আরও নানা উপকার হয়। ব্যায়ামটির নাম জাম্পিং জ্যাক। এই ব্যায়াম যেমন কার্ডিয়োর মতো উপকার পাওয়া যায়, তেমনই সারা শরীরের স্ট্রেচিংও হয়।
দুই পায়ের মধ্যে ব্যবধান রেখে দাঁড়াতে হবে। দুই হাত রাখুন মাথার উপরে। এই অবস্থাতেই লাফাতে হবে। লাফানোর সময় দুই হাত ও দুই পায়ের মধ্যে দূরত্ব কমে কাছাকাছি আসবে। প্রতিটি ব্যায়ামই তিন মিনিট করে করতে হবে।