ওজন কমাতে কেউ কার্ডিয়ো করেন, কেউ আবার ভরসা রাখেন স্ট্রেংথ ট্রেনিংয়ে। ইদানীংকালে জ়ুম্বা ও অ্যারোবিক্সও অভ্যাস করছেন অনেকে। তবে সকলের কি আর জিমে গিয়ে ভারী ভারী ওজন তুলে ব্যায়াম করতে ভাল লাগে। একঘেয়ে শরীরচর্চায় অনীহা এলে ব্যায়ামের ধরন বদলে দেখতে পারেন। শরীরচর্চার নতুন এক পদ্ধতি নিয়ে এখন চর্চা হচ্ছে বেশি। পদ্ধতি কঠিন নয়, বরং মজাদার। আর তাতেই কসরত হবে সারা শরীরের। ওজন তো কমবেই, ভাল থাকবে হার্ট-লিভারও। বাড়ির ছোটদেরও অভ্যাস করানো যাবে মজার ছলেই। ব্যায়ামের এই ধরনের নাম ‘কোয়াড্রোবিক্স’।
কী এই কোয়াড্রোবিক্স?
নানা ধরনের ব্যায়ামের মিশ্রণ। দৌড়নো, হামাগুড়ি দেওয়া, লাফানো, ব্যালান্স অভ্যাস করার নানা পদ্ধতি রয়েছে কোয়াড্রোবিক্সে। নানা রকম পশুর হাঁটাচলা নকল করাও হয়। যেমন, বিড়ালের মতো হাঁটতে বলা হয়, আবার বাঁদর যে ভাবে লাফায়, তা-ও অনুকরণ করতে বলা হয়, চিতাবাঘ শিকার ধরার সময়ে যে ভাবে এগোয়, তেমন ভাবে হাত ও বুকে ভর দিয়ে ধীরে ধীরে এগিয়ে যাওয়াও কোয়াড্রোবিক্স ব্যায়ামের মধ্যে পড়ে।
নানা ধরনের পদ্ধতি রয়েছে, যেমন—
ক্র্যাব ওয়াক: মাটিতে হামাগুড়ি দেওয়ার মতো ভঙ্গি করতে হবে। এ বার দু’হাতে ভর দিয়ে কোমর ও নিতম্ব খানিকটা উপরে তুলতে হবে। সেই ভঙ্গিতেই এলোমেলো ভাবে হাঁটুন ঠিক কাঁকড়ার মতো। ছোটদেরও এই ভঙ্গি শিখিয়ে দিন। এতে খেলার ছলেই তাদের শরীরচর্চা হয়ে যাবে। ক্র্যাব ওয়াক শুনতে মজাদার মনে হলেও, এই ব্যায়াম খুবই কাজের। এতে হাত-পায়ের পেশি, শরীরের নিম্নাংশের ব্যায়াম হবে। হার্টে রক্ত চলাচল ভাল হবে, হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমবে।
মাঙ্কি ওয়াক: দু’পা শূন্যে তুলে লাফিয়ে যেতে হবে ঠিক বাঁদরের মতো। অথবা স্কোয়াটের ভঙ্গিতে অর্ধেক বসে সেই ভাবেই লাফাতে হবে। এই ব্যায়ামে মেদ ঝরবে খুব তাড়াতাড়ি, সারা শরীরের স্ট্রেচিং হবে। পেশির নমনীয়তা বৃদ্ধি হবে, পাশাপাশি শরীরের ভারসাম্যও বজায় থাকবে।
লেপার্ড ক্রল: হামাগুড়ি দিয়ে চিতা বাঘের মতো হাঁটতে হবে, আবার হাত ও বুকে ভর দিয়ে চলতে হবে। এই ব্যায়ামে শরীরের উপরের অংশের পাশাপাশি নীচের অংশেরও ব্যায়াম হবে। চাপ পড়বে তলপেটে, ফলে ভুঁড়ি কমবে।
এ ছাড়াও কোয়াড্রোবিক্সে আরও নানা ধরনের ব্যায়ামের পদ্ধতি আছে যেমন— ফ্রগ জাম্প, গোরিলা ওয়াক, লিজ়ার্ড ক্রল, স্পাইডার ওয়াক ইত্যাদি। প্রতিটি ব্যায়ামের উপকারিতা আলাদা আলাদা। জিমে গিয়ে শরীরচর্চা করতে যাঁদের অনীহা রয়েছে, তাঁরা কোয়াড্রোবিক্স অভ্যাস করে দেখতে পারেন। তবে যে কোনও ব্যায়াম করার আগেই প্রশিক্ষকের পরামর্শ নিতে হবে।