দুই আঙুলের মাঝের চামড়া বড্ড খসখসে? ক্রিম মাখছেন তবু সমাধান হচ্ছে না? ভেবেছিলেন, শীত গেলে হয়তো ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু খসখসে ভাবের সঙ্গে ইদানীং চুলকাচ্ছেও জায়গাটি।
মুখে সামান্য কিছু হলে লোকজন যতটা সতর্ক হন, ততটা কিন্তু হাত বা পা নিয়ে কেউ হন না। অথচ হাতের আঙুলের ফাঁকে চুলকানি, অমসৃণ ভাব ত্বকের সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে।
ত্বকের চিকিৎসক শিফা যাদবের কথায়, মরসুম বদল, শুষ্ক আবহাওয়া, আর্দ্রতা কমে যাওয়ার জন্য হাত খসখসে হয়ে যাওয়া বা আঙুলের মাঝের অংশ শুষ্ক হয়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ। তবে এ ছাড়াও নানা কারণ থাকে।
১. ঘন ঘন সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার ফলেও এই ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। ২০২২ সালে ‘জার্নাল অফ কসমেটিক ডার্মাটোলজি’-তে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন বলছে, ঘন ঘন জল এবং সাবানের ব্যবহারে হাতে র্যাশ, চুলকানি, রুক্ষ হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়। সাবানে অ্যালকোহল, প্যারাবেন, ইথানলের মতো উপাদান থাকলে ত্বক আরও রুক্ষ হয়ে যায়।
আরও পড়ুন:
২. হাতের দুই আঙুলের মাঝের অংশ চুলকানি, র্যাশের মতো লক্ষণ থাকলে ডিসহাইড্রোটিক এগজ়িমা হতে পারে। এটি ত্বকের এক ধরনের অসুখ। হাতে শুধু নয়, পায়ের আঙুলের ফাঁকেও এই ধরনের এগজ়িমা দেখা যায়। অ্যালার্জি, অতিরিক্ত ঘাম-সহ নানা কারণে এই ধরনের চর্মরোগ হতে পারে। এ রকম কোনও লক্ষণ দেখা দিলে দেরি না করে চর্মরোগ চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত।
৩. ছত্রাকজনিত সংক্রমণ থেকেও হাতের আঙুলের মাঝের অংশ খসখসে হয়ে চুলকাতে পারে। অনেক সময় চামড়াও ওঠে। দাদ এবং অন্য সংক্রমণ থেকেই এই ধরনের লক্ষণ দেখা দিতে পারে, বলছেন ত্বকের চিকিৎসকেরা।
৪. ভিটামিন এ-র অভাব ঘটলে ত্বকের এমন সমস্যা দেখা দিতে পারে। ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে সেবাম গ্রন্থি থেকে তেল নিঃসৃত হয়। ভিটামিনের ঘাটতি হলে সেবামের তেল নিঃসরণ কমে যেতে পারে, ক্ষতিগ্রস্ত কোষ পুনরুজ্জীবিত হতেও সময় বেশি লাগতে পারে। তার জেরে হাতের আঙুল খসখসে হতে পারে।
৫. অনেক সময় ঘর মোছার রাসায়নিক, কাপড় কাচার সাবান, বাসন মাজার তরলে থাকা কোনও উপাদানে অ্যালার্জি থাকলেও এমন ধরনের সমস্যা হতে পারে।
সমস্যার সমাধান কী ভাবে হবে?
মরসুম বদলের দরুন হাত রুক্ষ হয়ে গিয়ে যদি সমস্যা হয় তা হলে সেরামাইড, গ্লিসারিন, হায়ালুরোনিক অ্যাসিড জাতীয় ক্রিম, ময়েশ্চারাইজ়ার মাখলেই হবে। অ্যালার্জি থেকে সমস্যা হলে হাতে দস্তানা পরে কাজ করতে পারেন। আবার ছত্রাক ঘটিত সংক্রমণের নির্দিষ্ট ওষুধ এবং মলম রয়েছে। সে ক্ষেত্রে সময় নষ্ট না করে চর্মরোগ চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত।