Advertisement
০৪ অক্টোবর ২০২৩
Cholesterol

কোলেস্টেরল কমাতে কী খাবেন?

খাদ্যাভ্যাসে কয়েকটি পরিবর্তন আনলেই কোলেস্টরলকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

Representational image of healthy lifestyle.

কোলেস্টেরলকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনতে হবে। প্রতীকী ছবি।

ঈপ্সিতা বসু
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০২৩ ০৭:৩৩
Share: Save:

উচ্চ কোলেস্টেরলের সমস্যা দিনদিন বেড়েই চলেছে। আমরা যা খাই তা শরীরে প্রভাব ফেলে এবং উচ্চ কোলেস্টেরলের ঝুঁকি বাড়ায়। শরীরকে সুস্থ রাখতে সুষম খাদ্য গ্রহণ করা প্রয়োজন। পুষ্টিকর উপাদান সমৃদ্ধ খাদ্য কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে পারে এবং অন্যান্য রোগের ঝুঁকিও কমায়।

তাই কোলেস্টেরলকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনতে হবে। রোজকার ডায়েটে অদলবদল করতে হবে, বলছেন ডায়াটিশিয়ান সুবর্ণা রায়চৌধুরী। তাঁর মতে, ‘‘রোজকার ডায়েট থেকে অতিরিক্ত চর্বি, কার্বোহাইড্রেট, চিনি বাদ দিন। প্রতিদিন পাঁচ চা চামচের বেশি তেল খাওয়া চলবে না। উপায়, একই রান্না দুপুরে ও রাতে খান। যত বেশি পদ খাবেন, তত বেশি তেল খাবেন। আর এমন খাবারই খান, যাতে ওজন না বাড়ে। ওজন যথাযথ থাকলে কোলেস্টেরলের মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।’’

কোলেস্টেরল কমাতে ডায়েটে কী রাখবেন?

গোটা শস্য, প্রচুর পরিমাণ শাক-সবজি, ফল রাখতে হবে ডায়েটে।

বিভিন্ন শস্যদানা কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে উপকারী। শস্যে পুষ্টি এবং খনিজ পদার্থ থাকে যা উচ্চ কোলেস্টেরলের কারণে সৃষ্ট সমস্যা প্রতিরোধে সাহায্য করে। খাদ্যতালিকায় পরিমাণমতো গম, চাল, ভুট্টা ইত্যাদি রাখুন।

সবুজ শাকসবজি স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণেও সহায়তা করে। এ ছাড়া সবুজ আনাজে রয়েছে অনেক পুষ্টিকর উপাদান যেমন ফাইবার, পটাশিয়াম, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি ইত্যাদি। তাই খাদ্যতালিকায় পালং, মেথি, কলমি, পুঁই, কচু, যে কোনও শাক রাখতে পারেন।

বিভিন্ন রকম ফল খান। কারণ, ফলে ক্যালরি কম এবং পুষ্টিগুণ বেশি। কয়েকটি ফল আবার ফাইবার, পটাশিয়াম এবং ভিটামিন সি-র মতো খনিজ পদার্থ সমৃদ্ধ, যা শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। তরমুজ‌, পেয়ারা, কিউই, আপেল, কমলা, কলা, পেঁপে স্বাস্থ্যের জন্য ভাল।

ডিম খাওয়া যেতে পারে নিয়ম মেনে। সপ্তাহে তিনদিন গোটা ডিম খেতে পারেন। বাকি চারদিন শুধুমাত্র ডিমের সাদা অংশ খাবেন।

কী খাবেন না

রেড মিট, ফাস্ট ফুড, জাঙ্ক ফুড সম্পূর্ণ এড়িয়ে চলা উচিত। এগুলো কোলেস্টেরল বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য দায়ী।

প্রক্রিয়াজাত খাবার, কেক, কুকিজ়, পেস্ট্রি, পনির, ঘি, মাখন, চিজ়, জ্যাম বাদ দিতে পারলেই ভাল। এতে শরীর থাকবে সুস্থ।

ক্রিমযুক্ত দুধ এবং তা থেকে তৈরি খাবার, ঘি-মাখন যতটা সম্ভব কম খাওয়ার চেষ্টা করুন।

রোজকার ডায়েট...

দিন শুরু করুন এক কাপ চা (চিনি ছাড়া), দু’টি বিস্কিট দিয়ে। সকালের জলখাবারে সবচেয়ে ভাল হল ওটস, পোহা, ডালিয়া, রুটি-সবজি, উপমা, চিঁড়ের পোলাও ইত্যাদি খাওয়া। বেলায় খান একবাটি ফল। দুপুরের খাবারে থাকবে ভাত, ডাল, সবজি, এক টুকরো মাছ, একবাটি বাড়িতে পাতা টক দই। বিকেলে দু’পিস টোস্ট বা সকালের জলখাবারের যে সব খাবারের কথা বলা হয়েছে, তা পুনরায় খেতে পারেন। রাতে দুটো রুটি, স্যালাড, সবজি আর একপিস মাছ বা চিকেন এবং স্যালাড।

এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভাল হয় যদি কোনও বিশেষজ্ঞের কাছ থেকে ডায়েট চার্ট বানিয়ে নেওয়া যায়, কারণ প্রতিটি মানুষের খাদ্যতালিকা আলাদা হবে।

শুধুমাত্র খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে পারে না, আরও কিছু পরিবর্তন প্রয়োজন।

ধূমপানের অভ্যেস অবিলম্বে ত্যাগ করতে হবে। কারণ ধূমপান কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে।

স্বাস্থ্যকর খাবারের পাশাপাশি রোজ শারীরচর্চা করা উচিত। বাড়িতে ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ়, যোগব্যায়াম, হাঁটা ইত্যাদি আপনার কোলেস্টেরল কমিয়ে আনতে সহায়ক হবে।

একজন ব্যক্তির রাতে কমপক্ষে সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুমানো উচিত। পর্যাপ্ত ঘুম কোলেস্টেরলের সঙ্গে সম্পর্কিত অন্যান্য রোগের ঝুঁকিও কমায়। আর খাওয়ার এক ঘণ্টা পরে ঘুমোতে যাবেন।

কোলেস্টেরল কমাতে ডায়েটের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তবে কী ওষুধ খাবেন এবং খাওয়াদাওয়া কেমন হবে, সবটাই মেনে চলতে হবে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE