জ্যোতিষশাস্ত্রে কেতুকে গ্রহের মর্যাদা দিলেও, কেতুর অন্যান্য গ্রহের ন্যায় শারীরিক কোনও অস্তিত্ব নেই। কেতু গাণিতিক বিন্দু বা নোড। জ্যোতিষশাস্ত্রে কেতুকে গ্রহের মর্যাদা দেওয়ার কারণ হল তাঁর প্রভাব দানের ক্ষমতা। রাহু-কেতুর সঙ্গে বা খুব কাছাকাছি কোনও গ্রহ অবস্থান করলে উক্ত গ্রহের পূর্ণ ফলদানের ক্ষমতা হ্রাস পায়। নির্দিষ্ট কৌণিক দূরত্বে অবস্থান অনুযায়ী ফলের তীব্রতারও পরিবর্তন হয়। জ্যোতিষশাস্ত্র মতে, কেতুর সঙ্গে মঙ্গলের সাদৃশ্য রয়েছে। কেতুকে মঙ্গলের সঙ্গে তুলনা করার অর্থ হল জ্যোতিষশাস্ত্রে কেতুর গুরুত্ব বৃদ্ধি করা। কেতুকে রাহুর মতো অশুভ গ্রহের স্থান দেওয়া হলেও কেতু কেবল অশুভ ফলই দান করে এই ভাবনা সঠিক নয়। জন্মসময়ে কেতুর অবস্থান, অর্থাৎ জন্মছকে কেতুর অবস্থান অনুযায়ী শুভ বা অশুভ ফল প্রাপ্তি হয়। কেতু সর্বদা চূড়ান্ত ফল দান করে। অশুভ বা শুভ, সমস্ত ক্ষেত্রেই কেতু চূড়ান্ত ফল দেয়।
আরও পড়ুন:
যে সব ব্যক্তির জন্মছকে কেতু ভাল অবস্থানে থাকে, তাঁরা নিজেকে লুকিয়ে রাখতেই বেশি পছন্দ করেন। নিজের মধ্যে থাকা গুণাগুণ জাহির করা তাঁদের মোটেই পছন্দ নয়। এঁদের পার্থিব ফল ভোগ করার মানসিকতা প্রায় নেই বললেই চলে। কেতু আধ্যাত্মিক ক্ষেত্রে শুভ ফল দান করে। এই কারণে কেতুকে আধ্যাত্মিক গ্রহও বলা হয়। কেতু কখনও সূর্য, কখনও মঙ্গল, কখনও বৃহস্পতির ন্যায় ফল দান করে। কেতু কেমন ফল দান করবে তা অবশ্য নির্ভর করে কেতুর অবস্থানের উপর।
জন্মপত্রিকায় কেতু শুভ ঘরে অবস্থান করলে বা সঞ্চারকালে শুভ ঘরে অবস্থান করলে দারুণ শুভ ফল দান করে।
আরও পড়ুন:
কেতুর শুভ অবস্থানে সম্মান, রাজপূজ্য, সুখ, অর্থ এবং পুণ্য প্রাপ্ত হয়।
কেতুর অশুভ অবস্থানে অনিষ্ট, দেহপীড়া, জটিল রোগ, চর্মরোগ, রাজদণ্ড, হত্যাকাণ্ড, সম্পদহানি ইত্যাদি ঘটে।
কেতুর প্রতিকারে সর্বাধিক ব্যবহৃত রত্ন হল ক্যাটসআই। আপেক্ষিক গুরুত্ব ৩.৫-৩.৮। কঠিনতা ৮.৫।
আরও পড়ুন:
ক্যাটসআই বায়ু, পিত্ত এবং কফ সংক্রান্ত সমস্যায় সুফলদায়ী। কেতু গুপ্তরোগের কারণ, রোগ নির্ধারণেও সমস্যা দান করে। এমন ক্ষেত্রে ক্যাটসআই ধারণ খুবই ফলদায়ী।
জন্মপত্রিকায় কেতু তৃতীয়, চতুর্থ, নবম, দশম এবং একাদশ ঘরের সঙ্গে সম্পর্কে থাকলে ক্যাটসআই ধারণে সুফল মেলে।
বুধবার বা শনিবার বা অশ্বিনী, মঘা অথবা মুলা নক্ষত্রের সকালে শোধন করে ক্যাটসআই ধারণ করা উচিত।