আমরা প্রবাহিত নদীর জলে কয়েন ফেলি। পিছন ঘুরে, চোখ বন্ধ করে নিজের মনের ইচ্ছা জানানোর পর নদীতে কয়েন ছুড়ে ফেলে দিই। এর ফলে আমাদের মনের ইচ্ছা পূরণ হয় বলে কথিত রয়েছে। এই প্রথা বহু যুগ ধরে প্রচলিত রয়েছে। ভিন্ন ভিন্ন ধর্মের নানা ধরনের প্রচলিত কিছু রেওয়াজ রয়েছে যেগুলি তাঁরা প্রজন্মের পর প্রজন্ম পালন করে আসছেন। সেগুলির মধ্যে একটা প্রচলিত রেওয়াজ হল মনের ইচ্ছা পূরণ করার উদ্দেশ্যে নদীতে কয়েন ছুড়ে ফেলা।
আরও পড়ুন:
আমাদের দেশের অনেক জায়গাতেই নদীতে প্রদীপ ভাসানোর নিয়ম রয়েছে। সেই নিয়মও বহু দিন ধরে চলে আসছে এবং আজও পালন করা হচ্ছে। সে রকমই নদীতে কয়েন ফেলার নিয়মের নেপথ্যেও বিশেষ কারণ রয়েছে। অনেক জায়গায় আবার কূপের মধ্যে কয়েন ফেলার নিয়মও রয়েছে। এই নিয়ম যে পুরোপুরি অন্ধবিশ্বাস তা একেবারেই নয়।
সভ্যতা শুরুর প্রথম দিকে তামার মুদ্রা ব্যবহারের প্রচলন ছিল। সেই সময় কেনাবেচা বা অন্যান্য যা কিছু হত, সব কিছু তামার মুদ্রার বিনিময়েই হত। বৈজ্ঞানিক অর্থ অনুযায়ী, তামা জল পরিশুদ্ধ রাখতে সাহায্য করে। তাই আগেকার দিনে নদীতে কয়েন ফেলার নিয়মের প্রচলন হয়েছিল। এই নিয়মের আসল উদ্দেশ্য হল নদীর জল পরিশুদ্ধ করা। যে হেতু তখন নদীর জল পানীয় হিসাবে ব্যবহার করা হত তাই এই নিয়ম তৈরি করা হয়েছিল।
তবে জ্যোতিষশাস্ত্র অনুযায়ী, নদীতে কয়েন ভাসানোর অন্য আর একটি ব্যাখ্যা রয়েছে। বিশ্বাস করা হয়, নদীতে যা কিছুই ভাসানো হোক না কেন, যেমন— কয়েন, ফুল, ফল, বস্ত্র প্রভৃতি। এগুলি ফেলার ফলে মানুষের পাপমুক্তি ঘটে। নদী না হলে অন্যান্য জলাশয়েও ভাসানো যেতে পারে। তবে অবশ্যই প্রবাহিত জলে ভাসাতে হবে, স্থির জলে ভাসালে হবে না।