জন্মাষ্টমী কেবল শ্রীকৃষ্ণেরই জন্মতিথি নয়। এই দিন ধরাধামে এসেছিলেন লোকনাথ ব্রহ্মচারীও। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার কচুয়া গ্রামে এক ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্ম হয়েছিল তাঁর। লোকনাথদেবের বাবা ছিলেন রামনারায়ণ ঘোষাল আর মা কমলা দেবী। কথিত রয়েছে, লোকনাথ বাবা নাকি স্বয়ং মহাদেবের অবতার। তাঁর ভক্তদের মাঝে তিনি খুবই জাগ্রত। জন্মাষ্টমী, অর্থাৎ লোকনাথ ব্রহ্মচারীর জন্মতিথিতে বহু ভক্তই তাঁর আরাধনা করেন।
এমনিতে বাবা লোকনাথের আরাধনা করার বিশেষ কোনও নিয়ম নেই। মন থেকে, নিষ্ঠা সহযোগে পুজো করলেই বাবা তুষ্ট হন। যৎসামান্য ভোগেই খুশি হন লোকনাথ ব্রহ্মচারী। কিন্তু যে কোনও পুজোর মতনই, এই পুজোতেও বিশেষ কিছু নিয়ম মেনে চললে ভাল হয়। সেগুলি সম্বন্ধেই জানানো হল।
জন্মাষ্টমীতে লোকনাথ পুজো করার সময় কী কী জিনিস মাথায় রাখতে হবে?
- লোকনাথ পুজো করার বিশেষ কোনও সময়সূচি নেই। তবে জন্মাষ্টমীর পুজোর তিথি থাকাকালীন পুজো করলেই ভাল হবে বলে মনে করা হয়। গোপালের পুজো করার উপযুক্ত সময় যেমন রাত্রিবেলা, তেমনই লোকনাথ বাবার পুজো সূর্যের আলো থাকাকালীন সময়ে করতে পারলে ভাল হয়।
- লোকনাথ বাবা মিছরি খেতে খুব ভালবাসেন বলে বিশ্বাস করা হয়। লোকনাথ ব্রহ্মচারীর ভোগের তালিকায় মিছরি অবশ্যই রাখতে হবে।
- মিছরি ছাড়া অমৃতিও লোকনাথ ব্রহ্মচারীকে ভোগ হিসাবে দিতে পারেন। অমৃতিও লোকনাথের প্রিয় খাবার বলে মনে করা হয়। এ ছাড়া যে কোনও সাদা রঙের মিষ্টি, যেমন— চিনির পায়েস, সন্দেশ প্রভৃতি দিতে পারলে খুব ভাল হয়।
আরও পড়ুন:
- সাদা রং লোকনাথ ব্রহ্মচারী খুব পছন্দ করেন। যে কোনও সাদা ফুল তাঁকে দিতে পারেন। এ ছাড়া, লোকনাথ বাবার চরণে যদি নীল শাপলা ফুল দিতে পারেন, তা হলেও খুব ভাল হয়।
- লোকনাথ বাবা মহাদেবের অবতার। তাই তাঁকে বেলপাতা নিবেদন বাঞ্ছনীয়।
- যে কোনও প্রকার মরসুমি ফল লোকনাথ বাবাকে ভোগ হিসাবে দিতে পারেন। বাবা ফলমূল খেতেও ভালবাসতেন বলে বিশ্বাস করা হয়।
- পুজোর ভোগ হিসাবে পোলাও-আলুর দমের থেকে ভাত, ডাল, চচ্চড়ি বা খিচুড়ি, লাবড়ার তরকারি দিতে পারলে খুব ভাল হয়।
আরও পড়ুন:
-
কর্কটে বুধের বাঁকা চাল সোজা হওয়ায় ভাগ্য খুলবে পাঁচ রাশির! মার্গী বুধের কল্যাণে শুরু হবে মঙ্গলময় সময়
-
কম বয়সে কষ্ট করে বেশি বয়সে ‘কেষ্ট’ পান চার রাশি! যাঁদের জীবন ‘বুড়ো বয়সে’ কাটে সফলতার সিংহাসনে বসে
-
শ্রাবণে সবুজ চুড়ি পরলে মহাদেব প্রসন্ন হন, কিন্তু মাস শেষের পর চুড়িগুলো কী করবেন? ফেলে দেবেন না পরে থাকবেন?
- পুজোর পর প্রসাদ সবার আগে বাড়ির বাচ্চাদের দিতে হবে, তার পর বড়রা গ্রহণ করবেন। বাড়ির আশপাশের বাচ্চাদের ডেকে সেই প্রসাদ দিলে বিশেষ ফলপ্রাপ্তি ঘটতে পারে। বাবা লোকনাথ ও মহাদেবের আশীর্বাদ লাভ করবেন।
লোকনাথ পুজোর উপকারিতা কী?
যে সকল ব্যক্তিদের কোষ্ঠীতে দারিদ্রযোগ রয়েছে, তাঁরা অবশ্যই লোকনাথ বাবার পুজো করুন। এতে অর্থসমস্যা দূর হয়। কোষ্ঠীতে থাকা দারিদ্র সংক্রান্ত দোষও লোপ হয়। জীবনে আর্থিক সচ্ছলতা ও সমৃদ্ধি আসে। যদিও বছরের এক দিন বাবার আরাধনা করলেই যে দোষমুক্তি ঘটবে তা নয়। প্রতি সোমবার করে মহাদেবের পুজোর সঙ্গে সঙ্গে বাবা লোকনাথেরও পুজো করতে হবে। ‘জয় বাবা লোকনাথ, জয় ব্রহ্ম লোকনাথ, জয় শিব লোকনাথ, জয় গুরু লোকনাথ।’— এই মন্ত্রোচ্চারণ করতে হবে। তা হলেই সব বিপদ কেটে যাবে, জীবনে আসবে সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য।