আগামী ১৪ মার্চ দোলপূর্ণিমা। দোল উৎসব ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে বিভিন্ন নামে পালিত হয়। বাংলায় দোল, অন্যান্য প্রদেশে এই উৎসব হোলি নামে পালন করা হয়।
বাংলার বসন্ত উৎসব বা দোলযাত্রা ভগবান রাধা-কৃষ্ণের প্রেমকেন্দ্রিক। দোল উৎসবের সূচনা হয় দোলের আগের দিন নেড়াপোড়ার মধ্যে দিয়ে। ভাগবত পুরাণ অনুযায়ী, রাজা হিরণ্যকশিপু তাঁর বিষ্ণুভক্ত পুত্র প্রহ্লাদকে অগ্নিদগ্ধ করে হত্যার চেষ্টা করেন। রাজাকে সেই কাজ করতে সাহায্য করেন তাঁর বোন হোলিকা। কিন্তু সেই আগুনে পুত্র প্রহ্লাদের পরিবর্তে অগ্নিদগ্ধ হয়ে রাজার বোন হোলিকারই মৃত্যু ঘটে। কথিত রয়েছে, সেই মতে শুভ উৎসবের আগে অশুভ শক্তির বিনাশের উদ্দেশ্যে দোলের আগের দিন নেড়াপোড়ার মাধ্যমে দোল উৎসবের সূচনা করা হয়। পরের দিন, অর্থাৎ দোলের দিন শ্রীকৃষ্ণ-রাধার বিগ্রহে রং এবং আবির মাখিয়ে পালন করা হয় মূল উৎসব। হোলি উৎসব হল হিরণ্যকশিপু এবং হোলিকা নিধন, সঙ্গে বিষ্ণুভক্ত প্রহ্লাদ এবং ভগবান বিষ্ণুর আরাধনার উৎসব।
আরও পড়ুন:
দক্ষিণ ভারতে এই উৎসব হর-পার্বতীর আরাধনার উৎসব হিসাবে পালিত হয়। মহাদেবের প্রেমে ব্যাকুল হয়ে দেবী পার্বতী মহাদেবকে বিয়ে করার উদ্দেশ্যে মহাদেবের ধ্যান ভাঙাতে প্রেমের দেবতা কামদেবের সাহায্য চান। কামদেব সম্মত হয়ে দেবাদিদেবের ধ্যান ভাঙানোর চেষ্টা করেন। ধ্যানভঙ্গের ফলে মহাদেব ক্ষিপ্ত হয়ে কামদেবকে ভস্মীভূত করেন। কামদেবের স্ত্রী রতি, স্বামীকে ফিরে পেতে মহাদেবকে তুষ্ট করার উদ্দেশ্যে কঠোর তপস্যা করেন। রতির তপস্যায় তুষ্ট হয়ে মহাদেব কামদেবের জীবন ফিরিয়ে দেন এই পবিত্র হোলির দিনেই।
হোলি বা দোল যা-ই বলুন, এই উৎসব হল ধর্মীয় উৎসব। এই উৎসব কখনও শ্রীকৃষ্ণ এবং রাধিকাকেন্দ্রিক, কখনও বা বিষ্ণুভক্ত প্রহ্লাদকেন্দ্রিক, আবার কখনও ভগবান শিব-পার্বতী কেন্দ্রিক।
আরও পড়ুন:
দোলপূর্ণিমার তিথি শ্রীশ্রী গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুর জন্মেরও তিথি। বাংলার নবদ্বীপ, মায়াপুর-সহ ভারতের বিভিন্ন স্থানে এই দিন মহা সমারোহে মহাপ্রভুর জন্ম উৎসব পালিত হয়।
এই পূর্ণিমায় যে কোনও দেব-দেবীর পুজো করলেই ভাল ফল লাভ হয়। মনস্কামনা পূর্ণ হয়। এই দিনে ভক্তি সহকারে রাধা-কৃষ্ণ, ভগবান শ্রীবিষ্ণু এবং হর-পার্বতীর উপাসনা করতে পারলে জীবনের সমস্ত বাধা কেটে গিয়ে সফলতার পথ উন্মুক্ত হয়। এই দিন চন্দ্রের আরাধনা করতে পারলেও শুভ ফল প্রাপ্ত হয়।