বার্ষিক গতির হিসাবে বর্ষ বা বছরের হিসাব করা হয়। জ্যোর্তিবিজ্ঞানের হিসাবে সূর্য মেষ রাশিতে (০ ডিগ্রিতে) গমনের দিন বাংলা বছরের প্রথম দিন ধরা হয়, অর্থাৎ সেই দিনই হয় বৈশাখ মাসের প্রথম দিন।
আরও পড়ুন:
বাংলা বছরের প্রচলনের সঙ্গে কর আদানপ্রদানের সম্পর্ক রয়েছে। সম্রাট, রাজা বা জমিদারদের বিভিন্ন ধরনের কর দেওয়ার রীতি আগেও ছিল। প্রজারা কর দিতে বাধ্য ছিলেন। সেই কর আদায় হত হিজরী পঞ্জিকা অনুসারে। বাংলা কৃষি প্রধান অঞ্চল, ফসল ওঠার সঙ্গে হিজরী বছরের অসামঞ্জস্য থাকায় মুঘল শাসনকালে বাংলা পঞ্জিকা বা বাংলা বছরের প্রচলন শুরু হয় (যদিও এই বিষয়ে মতবিরোধ রয়েছে)। বাংলা বছরের শেষে, অর্থাৎ চৈত্র মাসে প্রাপ্ত কর বা পাওনা মিটিয়ে নতুন বছরের প্রথম দিনে আনন্দে মাতার রীতি ছিল। বর্তমানেও এই রীতি অনুসরণ করা হয়। দোকান বা ব্যবসাক্ষেত্রে হিসাবের খাতা চৈত্র মাসে শেষ করে বৈশাখের প্রথম দিন আরাধ্য দেবদেবীর পূজা করে ব্যবসার সঙ্গীদের মিষ্টি মুখ করিয়ে নতুন খাতায় হিসাব লেখা শুরু করা হয়। এই প্রথা হালখাতা নামে পরিচিত। শাস্ত্রমতে যে কোনও কাজ শুরুর আগে গণেশের আরাধনা করলে কাজে সিদ্ধি লাভ বা সফলতা প্রাপ্তি হয়। মালক্ষ্মী দেবীর আরাধনায় লক্ষ্মী অর্থাৎ অর্থ লাভ হয়। সারা বছর ব্যবসায় লাভ, সমৃদ্ধি, শ্রীবৃদ্ধি এবং লক্ষ্মীলাভের উদ্দেশে বাংলা বছরের প্রথম দিন সিদ্ধিদাতা গণেশ এবং লক্ষ্মীদেবীর পূজা করে, নতুন খাতায় স্বস্তিক চিহ্ন এঁকে ব্যবসা নতুন করে শুরু করা হয়।
আগামী ১৫ এপ্রিল, মঙ্গলবার পয়লা বৈশাখ ১৪৩২।