E-Paper

তথ্য সুরক্ষার আড়ালে কি ‘বন্ধু-প্রীতি’!

ডিজিটাল দুনিয়ায় আমজনতার ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা ও গোপনীয়তা বজায় রাখার যুক্তিতেই এই বিল এনেছে কেন্দ্র। কিন্তু সেই আইন থেকে গোয়েন্দা, নিরাপত্তা ও তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে ছাড় দেওয়ার ক্ষমতা তারা নিজেদের হাতে রাখছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০২৩ ০৮:৫১
PM Narendra Modi.

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।

কেন্দ্রের প্রস্তাবিত ডিজিটাল ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা বিল নিয়ে আগেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন বিরোধী ও বিশেষজ্ঞদের একাংশ। সোমবার সেটি লোকসভায় পাশ হওয়ার পরে তার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করল ব্যাঙ্ক শিল্প-সহ বিভিন্ন শিল্পের কর্মী সংগঠনগুলিকে নিয়ে তৈরি ‘ব্যাঙ্ক বাঁচাও দেশ বাঁচাও’ মঞ্চ। ওই নাগরিক মঞ্চের অভিযোগ, বিলটি আগামী দিনে আইনে পরিণত হওয়ার পরে মোদী সরকার সেটিকে ঋণখেলাপিদের আড়াল করার কাজে ব্যবহার করতে পারে, যারা আসলে তাদের ‘বন্ধু’ এবং তহবিল সরবরাহকারী। এমনকি ওই বিলকে হাতিয়ার করে নাগরিকদের অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানার অধিকার থেকে বঞ্চিতও করা হতে পারে।

ডিজিটাল দুনিয়ায় আমজনতার ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা ও গোপনীয়তা বজায় রাখার যুক্তিতেই এই বিল এনেছে কেন্দ্র। কিন্তু সেই আইন থেকে গোয়েন্দা, নিরাপত্তা ও তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে ছাড় দেওয়ার ক্ষমতা তারা নিজেদের হাতে রাখছে। তাতে এটাও বলা আছে, দেশের নিরাপত্তা, সার্বভৌমত্ব রক্ষা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে সরকার যে কোনও সরকারি সংস্থাকে আমজনতার ব্যক্তিগত তথ্য কাজে লাগানো বা তাতে নজরদারি করার ক্ষমতা দিতে পারে। এর আগে এই ছাড় দিলে তার অপব্যবহার হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।

‘ব্যাঙ্ক বাঁচাও দেশ বাঁচাও’ মঞ্চের যুগ্ম আহ্বায়ক সৌম্য দত্ত এবং বিশ্বরঞ্জন রায়ের দাবি, “বিশেষত আমাদের আশঙ্কা, ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি সংস্থারগুলির নাম গোপন রাখার জন্য কেন্দ্র এবং রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক প্রস্তাবিত নতুন আইনকে হাতিয়ার করতে পারে। বকেয়া ঋণের টাকা হিসাবের খাতা থেকে মুছে দেওয়া (রাইট অফ) এবং দেউলিয়া আইনে বহু ক্ষেত্রে সিংহভাগ বকেয়া ছাড় দিয়ে মামলার ফয়সালা করার জন্য সরকার ইতিমধ্যেই সমালোচিত হচ্ছে। ওই দুই তথ্য গোপন করার জন্যও ব্যবহৃত পারে তথ্য সুরক্ষা আইন।“ তাঁদের তোপ, মোদী সরকারের লক্ষ্য, তথ্য সুরক্ষিত রাখার অছিলায় দেশবাসীর তথ্যের অধিকার কেড়ে নেওয়া। এ দিন মঞ্চের বার্তা, বিলটি আইনে পরিণত হওয়া আটকাতে রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ হবে তারা।

ওই নাগরিক মঞ্চের তরফে আশঙ্কা প্রকাশ করে বলা হয়েছে, সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে কাউকে বিশেষ সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হলেও, আগামী দিনে তথ্য সুরক্ষা আইন দেখিয়ে সেই কথা জনগণের সামনে আসতে দেবে না সরকার। এই প্রসঙ্গে সৌম্যবাবু পিএম কেয়ার্স ফান্ডের উদাহারণ টেনে বলেন, ‘‘তহবিলটিকে তথ্য জানার অধিকার আইনের বাইরে রাখায় তার আর্থিক তথ্য মানুষ জানতে পারেননি।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Narendra Modi Lok Sabha

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy