বাংলাদেশকে বিদ্যুতের জন্য আর কোনও ছাড় দিতে রাজি নয় ভারতের আদানি গোষ্ঠী। তাদের সম্পূর্ণ বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে ভারত থেকে। কিন্তু কোনও বাড়তি ছাড় বা কর ছাড়ের সুবিধা ঢাকা পাবে না। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, বাংলাদেশের এই সংক্রান্ত অনুরোধ খারিজ করে দিয়েছে আদানিদের বিদ্যুৎ সংস্থা আদানি পাওয়ার।
ঝাড়খণ্ডে আদানি গোষ্ঠীর বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র থেকে সমগ্র বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়ে থাকে। ২০১৭ সালের চুক্তি অনুসারে, ঝাড়খণ্ডের গোড্ডায় তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশে রফতানি করা হয় ১৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। কিন্তু গত অক্টোবরে এই সরবরাহের পরিমাণ অর্ধেকে নামিয়ে এনেছিল মুহাম্মদ ইউনূস পরিচালিত অন্তর্বর্তী সরকার। তাদের কাছে আদানিদের বিদ্যুতের খরচ বাবদ বকেয়া রয়েছে সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকার বেশি। এই বিপুল বকেয়ার কথা মাথায় রেখে এবং শীতকালে বিদ্যুতের চাহিদা কম থাকায় সরবরাহের পরিমাণ অর্ধেক করার কথা জানিয়েছিল ঢাকা। এর পর নভেম্বর থেকে গোড্ডায় একটি ইউনিট চালু রেখেছিল আদানি গোষ্ঠী।
আরও পড়ুন:
সম্প্রতি গ্রীষ্মের কথা ভেবে আবার আদানিদের কাছে সম্পূর্ণ বিদ্যুৎ সরবরাহের আবেদন জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে বাড়তি কর ছাড় এবং মোট বকেয়া অর্থে ছাড়ের অনুরোধ করেছিল ঢাকা। বাংলাদেশের বিদ্যুৎ সংস্থা বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড (বিপিডিবি) আদানি পাওয়ার কর্তৃপক্ষের কাছে এই মর্মে অনুরোধ জানিয়েছিল। কিন্তু তা খারিজ হয়েছে। ২০১৭ সালের চুক্তি অনুযায়ী, ২৫ বছর আদানি পাওয়ার বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে।
বিপুল বকেয়া পরিশোধ করার জন্য আদানি গোষ্ঠী ইতিমধ্যে তাড়া দিয়েছে বাংলাদেশকে। অক্টোবরেই তারা একটি চিঠি দেয় বিপিডিবি-কে। সেখানে জানানো হয়েছিল, টাকা না-মেটালে চুক্তির শর্ত মেনে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হবে। তার পর তিন মাসের জন্য অর্ধেক বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রইল। আবার সম্পূর্ণ সরবরাহ চালু হচ্ছে। সূত্রের খবর, গত মঙ্গলবার এ বিষয়ে বিপিডিবি-র সঙ্গে আদানি পাওয়ারের আধিকারিকদের বৈঠক হয়েছে।
রয়টার্সের সূত্র বলছে, আদানিরা এ বার বাংলাদেশকে সামান্যতম ছাড় দিতেও রাজি হয়নি। বিপিডিবি পারস্পরিক বোঝাপড়ার কথা বলেছিল। কিন্তু তাতেও আদানি কর্তারা রাজি হননি। বিপিডিবি-র কোনও কর্তা এ বিষয়ে মন্তব্য করতে চাননি। তবে আদানি পাওয়ারের বকেয়া মেটানোর চেষ্টা চলছে বলে এর আগে দাবি করেছিলেন বিপিডিবি-র চেয়ারপার্সন মহম্মদ রেজাউল করিম।