বোয়িংয়ের বিমানে জ্বালানির সুইচ নিয়ে যাবতীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পন্ন করল এয়ার ইন্ডিয়া। পরীক্ষা শেষে বিমান সংস্থা জানিয়ে দিল, বোয়িং ৭৮৭ এবং বোয়িং ৭৩৭ বিমানগুলির জ্বালানি সুইচে কোনও সমস্যা নেই! অহমদাবাদের বিমান দুর্ঘটনার পরই বোয়িংয়ের বিমানে জ্বালানির সুইচ ছিল আতশকাচের নীচে। সংশ্লিষ্ট বোয়িংয়ের বিমানগুলির জ্বালানি সুইচে কোনও সমস্যা রয়েছে কি না, তা পরীক্ষা শুরু করেছিল এয়ার ইন্ডিয়া।
এয়ার ইন্ডিয়া প্রথম থেকে দাবি করছিল তাদের বোয়িং ৭৮৭ এবং বোয়িং ৭৩৭ বিমানগুলির জ্বালানির সুইচে ‘লকিং সিস্টেম’ সুরক্ষিত। পরীক্ষা শেষে মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিক ভাবে তা বিবৃতি দিয়ে জানাল এয়ার ইন্ডিয়া। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘পরীক্ষার সময় জ্বালানি সুইচের ‘লকিং সিস্টেম’-এ কোনও সমস্যা পাওয়া যায়নি। অসামরিক বিমান চলাচল নিয়ামক সংস্থা ডিজিসিএ নির্দেশের আগেই এয়ার ইন্ডিয়া ১২ জুলাই স্বেচ্ছায় বোয়িংয়ের জ্বালানি সুইচ পরীক্ষা শুরু করেছিল। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই আমরা সেই পরীক্ষা শেষ করেছি। ডিজিসিএ-কে বিষয়টি জানানো হয়েছে। যাত্রী এবং ক্রু সদস্যদের নিরাপত্তার জন্য এয়ার ইন্ডিয়া সব সময়ই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’’
গত ১২ জুন অহমদাবাদ থেকে লন্ডনের অদূরে গ্যাটউইকের উদ্দেশে রওনা হয়েছিল বোয়িং সংস্থার এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান এআই১৭১। রানওয়ে ছাড়ার ৩২ সেকেন্ডের মধ্যে সেটি সামনের বহুতলে ধাক্কা খেয়ে ভেঙে পড়ে। বিমানের ২৪২ জনের মধ্যে ২৪১ জন-সহ মোট ২৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে এই ঘটনায়। উল্লেখ্য, অহমদাবাদে যে বিমানটি ভেঙে পড়েছিল, সেটি বোয়িংয়ের ৭৮৭ মডেলের ছিল। দুর্ঘটনার পর পরই এয়ার ইন্ডিয়া এবং এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের সব বিমানে পরীক্ষা শুরু করেছিলেন কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন:
গত মাসে ডিজিসিএ একটি নির্দেশিকা জারি করে। সেই নির্দেশিকায় বিমান সংস্থাগুলিকে তাদের বোয়িং এবং অন্য বিমানের জ্বালানি সুইচের ‘লকিং সিস্টেম’ পরীক্ষা করতে বলা হয়। সেই নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতেই মঙ্গলবার এয়ার ইন্ডিয়া জ্বালানির সুইচ সংক্রান্ত বিবৃতি জারি করে।
উল্লেখ্য, দিন কয়েক আগে অহমদাবাদের বিমান দুর্ঘটনার প্রাথমিক তদন্ত-রিপোর্ট প্রকাশ্যে এসেছিল। ভারতের এয়ারক্র্যাফ্ট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো (এএআইবি) তদন্ত করে রিপোর্ট দেয়। তাতে প্রাথমিক ভাবে জ্বালানির সুইচে সমস্যাকেই দুর্ঘটনার কারণ হিসাবে দেখানো হয়। রিপোর্টে বলা হয়, জ্বালানির সুইচ ‘রান’ থেকে ‘কাটঅফ’-এ পৌঁছে গিয়েছিল এয়ার ইন্ডিয়ার ওই বিমান রানওয়ে ছাড়ার পরেই। এর ফলে ইঞ্জিনে জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। এক সেকেন্ডের ব্যবধানে দু’টি ইঞ্জিনই বন্ধ হয়ে যায়। সময় থাকতে থাকতে তা আর চালানো যায়নি।
বিমানটির ককপিটে শেষ মুহূর্তে দুই পাইলটের মধ্যে যে কথাবার্তা হয়েছিল, তা-ও রিপোর্টে প্রকাশ করা হয়েছে। এক পাইলটের উদ্দেশে অপরকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘কেন তুমি বন্ধ (জ্বালানির সুইচ) করে দিলে?’’ তখন অন্য জন উত্তর দেন, ‘‘আমি কিছু বন্ধ করিনি।’’ তার ভিত্তিতেই প্রাথমিক ভাবে দুর্ঘটনার জন্য জ্বালানি সুইচের সমস্যাকে তুলে ধরা হয়।