গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
দু’সপ্তাহ আগে বিহারে ক্ষমতার পালাবদলের পরেই তাঁর ইস্তফার দাবি উঠেছিল। কিন্তু স্পিকার বিজয়কুমার সিন্হা তা খারিজ করে দিয়েছিলেন। পদে থাকার সুবাদে বিজেপির এই বিধায়ক আস্থাভোট বানচাল করতে পারেন বলে অভিযোগ তোলা হয়েছিল মহাগঠবন্ধন সরকারের তরফে। বুধবার বিহার বিধানসভায় আস্থাভোটের আগেই নাটকীয় ভাবে পদত্যাগের কথা ঘোষণা করেলন বিজয়।
বিজয় বলেন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে গত কয়েক দিন ধরে ধারাবাহিক ভাবে ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলা হয়েছে। স্পিকার পদের মর্যাদা ও গরিমা রক্ষার স্বার্থে আমি তাই সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’ এর পরেই বিরোধী বিজেপি শিবিরের বিধায়কদের তুমুল হট্টগোলের মধ্যে বেলা ২টো পর্যন্ত সভা মুলতুবির ঘোষণা করেন তিনি।
সাধারণ ভাবে, রাজ্যে ক্ষমতা বদলের পর সংশ্লিষ্ট আইনসভার স্পিকার ইস্তফা দেওয়াই দস্তুর। সাম্প্রতিক অতীতে কর্নাটকে এমনটা দেখা গিয়েছে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচনের পরও বিরোধী দলের বিধায়কের স্পিকার পদ আঁকড়ে থাকার ঘটনা কার্যত নজিরবিহীন। এই পরিস্থিতিতে বিজয়ের বিরুদ্ধে আগেই অনাস্থা প্রস্তাব জমা দিয়েছিলেন আরজেডি-জেডি(ইউ)-কংগ্রেস-হাম-বাম জোটের বিধায়কেরা। তিনি ইস্তফা দেওয়ায় আস্থাভোট পরিচালনা করবেন ডেপুটি স্পিকার তথা জেডি(ইউ) বিধায়ক মহেশ্বর হজারী।
বিজেপির সঙ্গ ছাড়ার পরে গত ১০ অগস্ট বিহারের নয়া সরকারের মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেন জেডি(ইউ) প্রধান নীতীশ। উপমুখ্যমন্ত্রী পদে আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব। সেই সরকারের আস্থাভোট বুধবার। পরিষদীয় পাটিগণিতের হিসেবে আস্থাভোটে নীতীশের জয় নিশ্চিত। ২৪৩ আসনের বিহার বিধানসভায় একটি আসন বর্তমানে খালি রয়েছে। গরিষ্ঠতা প্রমাণের জন্য প্রয়োজন ১২২ জন বিধায়কের সমর্থন। হিসাব বলছে, সরকারের পাশে রয়েছেন অন্তত ১৬৪ জন। অন্য দিকে, দু’সপ্তাহ আগে বিরোধী দলে পরিণত বিজেপির রয়েছে ৭৭ জন বিধায়ক।
অর্থাৎ গত দু’বছর সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার চালানো নীতীশ এ বার দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার চালাতে পারবেন। আরজেডির ৭৯, জেডি(ইউ)-র ৪৫, কংগ্রেসের ১৯ এবং ১৬ জন বাম বিধায়কের পাশাপাশি হাম-এর চার জন রয়েছেন নীতীশের পাশে। রয়েছেন একমাত্র নির্দল বিধায়ক তথা নীতীশ মন্ত্রিসভার সদস্য সুমিত সিংহও। হায়দরাবাদের সাংসদ আসাদউদ্দিন ওয়েইসির দল ‘অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন’ (এআইএমআইএম বা মিম)-এর একমাত্র বিধায়ক নীতীশকে সমর্থন না করলেও বিজেপির দিকে যাবেন না বলেই রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনুমান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy