ভারত বনাম পাকিস্তান নয়। যমুনা ও সিন্ধুর জল ঘিরে এ বার দ্বন্দ্ব শুরু হল বিজেপিশাসিত দিল্লি এবং হরিয়ানার সঙ্গে আম আদমি পার্টি (আপ) পরিচালিত পঞ্জাব সরকারের।
দিল্লির জলসম্পদ মন্ত্রী প্রবেশ বর্মা বৃহস্পতিবার একটি এক্স পোস্টে লিখেছেন, ‘‘পঞ্জাব সরকার হরিয়ানা এবং দিল্লিতে জল সরবরাহ বন্ধ করে নোংরা রাজনীতি করেছে। ভোটে হেরে যাওয়ার পর, এখন তারা দিল্লিতে জলসঙ্কট তৈরি করতে চাইছে।’’ আপ নেতা তথা হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মানের পাল্টা অভিযোগ, বিজেপি ‘ভাকরা-বিপাশা (বিয়াস) ব্যবস্থাপনা বোর্ড’ (বিবিএমবি)-এর মাধ্যমে হরিয়ানার দাবি পূরণের জন্য পঞ্জাব সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করছে।’’
আরও পড়ুন:
প্রসঙ্গত, বিপাশা আদতে সিন্ধু নদের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপনদী। অন্য দিকে, সিন্ধুর আর এক উপনদী শতদ্রুর (সাটলুজ়) উপরে রয়েছে ভাকরা-নাঙাল বাঁধ। পঞ্জাব এবং হরিয়ানার বিস্তীর্ণ অঞ্চলের কৃষিক্ষেত্রে জল সরবরাহ করা হয় এই বাঁধের খালগুলির মাধ্যমে। কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে গত ২২ এপ্রিলের জঙ্গিহানার পরে সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার। যার জবাবে কার্যত যুদ্ধের হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইসলামাবাদ। এই আবহে পাক সীমান্তবর্তী পঞ্জাবের সঙ্গে বিজেপিশাসিত হরিয়ানা ও দিল্লির সংঘাত বিষয়টিকে অন্য মাত্রা দিয়েছে। যদিও বর্মার অভিযোগ কার্যত খারিজ করে দিল্লি জল বোর্ড (ডিজেবি)-এর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে, বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত জল সরবরাহ স্বাভাবিক অবস্থায় রয়েছে।
অন্য দিকে, হরিয়ানার বিজেপি সরকারের মুখ্যমন্ত্রী নয়াব সিংহ সাইনির দাবি, গত ২৬ এপ্রিল তিনি মানকে চিঠি পাঠিয়ে বিবিএমবির টেকনিক্যাল কমিটির পঞ্জাব, হরিয়ানা, দিল্লি এবং রাজস্থানে জল ছাড়ার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের বার্তা দিয়েছিলেন। কিন্তু তাতে সাড়া মেলেনি। অতীতে, দিল্লিতে আপ ক্ষমতায় থাকাকালীন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল বিজেপিশাসিত হরিয়ানার এবং সে সময় পঞ্জাবে ক্ষমতাসীন কংগ্রেস সরকারের বিরুদ্ধে যমুনার জল সরবরাহ বন্ধ করার অভিযোগ করেছিলেন। কিন্তু পঞ্জাব ও দিল্লিতে ক্ষমতায় পালাবদলের পরে বদলে গিয়েছে সংঘাতের অভিমুখ। প্রতি বছর গ্রীষ্মকালে উত্তর ভারতে জলের চাহিদা বৃদ্ধি পায়। সে সময় রাজ্যগুলির মধ্যে তৈরি হয় টানাপড়েন।