ছেলে আর স্বামীর দেওয়া লিভারেই প্রাণ ফিরে পেলেন ৫৭ বছরের রামিশ রানি। দিল্লির গঙ্গারাম হাসপাতালে টানা ১৮ ঘণ্টা ধরে জটিল অস্ত্রোপচারের পর ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন তিনি। গত বছরের জুন মাসে তাঁর লিভার প্রতিস্থাপন হয়।
অনেক বছর ধরেই তিনি লিভারের ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন। পরিস্থিতি এতটাই জটিল হয়ে ওঠে যে লিভার প্রতিস্থাপন করার প্রয়োজন হয়। কিন্তু তেমন কোনও দাতা পাওয়া যাচ্ছিল না। শেষে তাঁর ছেলে আর স্বামীর লিভারের অংশ নিয়েই তাঁর জন্য আস্ত একটা লিভার বানিয়ে ফেললেন রামিশ রানির চিকিৎসকেরা। তবে এই অস্ত্রোপচার সহজ তো ছিলই না, উল্টে অন্যান্য প্রতিস্থাপন সার্জারির থেকেও ছিল বেশ জটিল।
রামিশ রানির চিকিৎসক নাইমিস মেহতা জানান, দু’টো আলাদা মানুষের লিভার নিয়ে তাকে জোড়া লাগিয়ে আলাদা একটা লিভার তৈরি করা মোটেই সহজ ব্যাপার নয়। তার উপরে বিষয়টি আরও কঠিন ছিল। কারণ, দুই দাতারই ডান দিকের লিভার নেওয়া হয়েছে।
কী রকম?
তিনি জানান, লিভারের ডান এবং বাঁ এই দু’টি অংশ রয়েছে। তার মধ্যে ডান দিকের অংশটিই বড়। তা প্রায় লিভারের ৬৫%। কিন্তু, দুই দাতার ক্ষেত্রেই ডান দিকের অংশ সাধারণের থেকে আরও বড় ছিল। সম্পূর্ণ লিভারের ৭০%। এখন একটি আলাদা লিভার গঠন করার জন্য দুই দাতার এক জনের থেকে বাঁ এবং অন্য জনের ডান লিভারের অংশ প্রয়োজন। কিন্তু দু’জনেরই বাঁ দিকের লিভার খুব ছোট হওয়ায় তা নেওয়া যায়নি। দু’জনের থেকেই যেহেতু ডান লিভারের অংশ নেওয়া হয়েছে তাই তা জোড়া লাগানো ছিল খুব কঠিন। একটি ডান লিভারের অংশকে উল্টে অন্যটির সঙ্গে জুড়তে হয়েছে। এতে অর্গান রিজেকশনের আশঙ্কা আরও বেড়ে যায়।
ওই চিকিৎসক জানান, প্রথমে লিভারের অংশ দুটিকে বাইরে এনে জোড়া লাগানো হয়। লিভারের অভ্যন্তরীণ গঠনের সবটাই একে অপরের সঙ্গে জোড়া লাগানো হয়। তার পর তা গ্রহীতার দেহে স্থাপন করা হয়। সময় লাগে ১৮ ঘণ্টা। দীর্ঘ ৬ মাস ওই হাসপাতালে থাকার পর সম্প্রতি রামিশ রানি বাড়ি ফিরেছেন। এখন তিনি অনেকটাই সুস্থ।