ন্যায়বিচারের প্রতি প্রেম থাকতে হবে বিচারকদের। তাঁদের টাকার মোহ থাকা উচিত নয়। এমনটাই জানালেন দেশের প্রধান বিচারপতি বিআর গবই। শনিবার ‘সেন্ট্রাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনাল’ (সিএটি)-এর সম্মেলনে বক্তৃতা করছিলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি। সেখানেই এই মন্তব্য করেন তিনি। বিচারকদের নম্র এবং দায়িত্বশীল হয়ে নিজেদের ক্ষমতার প্রয়োগ করা উচিত বলে মনে করছেন তিনি। তাঁর মতে, কয়েক জন বিচারকের আচরণ খারাপ হলে, তা সার্বিক ভাবে বিচার ব্যবস্থার সুনাম ক্ষুণ্ণ করতে পারে।
সম্প্রতি দিল্লি হাই কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি যশবন্ত বর্মার নাম জড়িয়েছিল ‘নগদকাণ্ডে’। তা নিয়ে বিতর্কও দানা বেঁধেছিল। ওই ঘটনার অনুসন্ধানের জন্য তিন হাই কোর্টের বিচারপতিকে নিয়ে একটি কমিটিও গঠন করেছিল শীর্ষ আদালত। বিতর্কের আবহে বিচারপতি বর্মার অপসারণেরও সুপারিশ করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্না। ‘নগদকাণ্ড’ নিয়ে বিতর্কের পরবর্তী সময়ে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির এই মন্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।
আইনি খবর পরিবেশনকারী ওয়েবসাইট ‘বার অ্যান্ড বেঞ্চ’ অনুসারে, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি বলেন, “আমি আশা করি বিচার বিভাগের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা (বিচারকেরা) টাকার মোহে পড়বেন না। বরং ন্যায়বিচার এবং স্বাধীনতার মতো মহৎ উদ্দেশ্যের প্রতিই তাঁদের ভালবাসা থাকবে।” তিনি আরও জানান, মামলাকারী এবং আইনজীবী উভয়েরই আস্থা বজায় রাখতে হবে আদালতকে।
আরও পড়ুন:
প্রধান বিচারপতি জানান, বিচার ব্যবস্থার প্রতি আস্থা রেখেই সাধারণ নাগরিকেরা আদালতে আসেন। তাঁরা যে ন্যায়বিচার পাবেন, এই বিশ্বাসটি সাধারণ মানুষের মধ্যে অটুট রাখতে হবে। তিনি বলেন, “আমাদের দায়িত্ব এবং ন্যায় ছাড়া অন্য কোনও রং আমাদের রায়ে লাগতে দেওয়া যাবে না।”
বস্তুত, ‘নগদকাণ্ড’ প্রকাশ্যে আসার পরে বিচারপতি বর্মাকে দিল্লি হাই কোর্ট থেকে ইলাহাবাদ হাই কোর্টে বদলির সুপারিশ করেছিল সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম। তাতে ছাড়পত্র দেয় কেন্দ্র। কিন্তু ইলাহাবাদ হাই কোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশন এই বদলির বিরোধিতা করে। এর পরেই স্থির করা হয় যে, যত দিন বিচারপতি বর্মার বিরুদ্ধে তদন্ত চলবে, তত দিন তাঁকে বিচারবিভাগীয় কোনও কাজ দেওয়া হবে না। যদিও ইলাহাবাদ হাই কোর্টের বিচারপতি হিসাবে শপথ নিয়েছিলেন তিনি।