Advertisement
০৩ মে ২০২৪
Maharashtra

‘পওয়ার’-দ্বন্দ্ব জারি, মরাঠাভূম উত্তপ্ত দাবি পাল্টা দাবিতে

দিল্লিতে গত কাল জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠক ডেকে নিজের শক্তি জাহির করেছিলেন এনসিপি প্রধান শরদ। দাবি করেছিলেন, ন’জন সাংসদের মধ্যে সাত জন ছাড়াও ২৮টি রাজ্য কমিটি তাঁর সঙ্গে।

sharad pawer and ajit pawer.

(বাঁ দিকে) শরদ পওয়ার এবং (ডান দিকে) অজিত পওয়ার। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৩ ০৬:২৭
Share: Save:

শরদ না অজিত—কার শক্তি বেশি, তা নিয়ে আজও বিবাদ জারি রইল। গত কাল দিল্লিতে নিজের শক্তি জাহির করেছিলেন শরদ পওয়ার। বিদ্রোহী শরদ-ভাইপো অজিতের দাবি, দলের ৫৩ জনের মধ্যে অন্তত ৪০ জন বিধায়কের সমর্থন তাঁর দিকে। তাই দলের নাম ও প্রতীক তাঁরই পাওয়া উচিত। শরদ শিবিরের পাল্টা যুক্তি, বিধায়কেরা নন, দলের সংগঠন যার পক্ষে তার কাছেই দলের নাম-প্রতীক থাকার কথা।

দিল্লিতে গত কাল জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠক ডেকে নিজের শক্তি জাহির করেছিলেন এনসিপি প্রধান শরদ। দাবি করেছিলেন, ন’জন সাংসদের মধ্যে সাত জন ছাড়াও ২৮টি রাজ্য কমিটি তাঁর সঙ্গে। শরদ-গোষ্ঠীর তরফে দাবি করা হয়েছিল, বিদ্রোহীদের শিবিরে ভাঙন ধরেছে।

সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়ে আজ অজিতের দাবি, ‘‘আমাদের মধ্যে কোনও ভাঙন নেই। এনসিপির ৫৩ জন বিধায়কের মধ্যে ৪০ জন আমার সঙ্গে। তাই দলের নাম ও নিশান আমাদেরই পাওয়া উচিত।’’ এনসিপি-তে ভাঙনের পিছনে শরদ-কন্যা সুপ্রিয়া সুলেকেই পরোক্ষে দায়ী করেন তিনি। অজিতের অভিযোগ, পিতার উপরে সুপ্রিয়া নিজের সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়ার কারণেই দলে ভাঙন ধরেছে। শরদ শিবিরের পাল্টা, বিধায়ক সংখ্যা দিয়ে কোনও দলের নেতৃত্ব কার হাতে থাকবে তা নির্ধারণ হয় না। বরং দলের সংগঠন কার পক্ষে তার উপরে ঠিক হয় নাম ও নিশান কে পাবেন। গত কালের জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে, সংগঠনের শীর্ষ নেতারা সকলেই শরদ পওয়ারের পাশে রয়েছে। দল আশা করছে নির্বাচন কমিশন অবশ্যই সেই বিষয়টি বিবেচনা করবে।

মহারাষ্ট্রে বিজেপ-শিবসেনা সরকারে যোগ দেওয়া অজিতকে কোনও মন্ত্রক দেওয়া হবে তা নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে। সূত্রের মতে, অজিত অর্থ দফতর চান। এখন সেই দফতরের দায়িত্বে রয়েছেন আর এক উপমুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা দেবেন্দ্র ফডণবীস। তাঁর কাছ থেকে অর্থ দফতর কেড়ে নিয়ে তা অজিতকে দেওয়ার মতো ঝুঁকি মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্দে নিতে পারেন কি না তা এখন দেখার।

এ দিকে ৪০ বিধায়ক নিয়ে অজিত যদি সত্যিই সরকারে যোগ দেন, সে ক্ষেত্রে শিন্দের প্রয়োজনীয়তা কার্যত থাকবে না বলে প্রথম দিন থেকেই চর্চা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে এনসিপি ও বিজেপি—হাত মিলিয়ে সরকার গড়ে ফেলতে পারবে। ফলে অজিতের সরকারে অন্তর্ভুক্তির পর থেকেই শিন্দের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। সংশয় দূর করতে আজ শিন্দের দাবি, ‘‘অজিতের অন্তর্ভুক্তিতে আমার মুখ্যমন্ত্রিত্বের কোনও বিপদ নেই। সবই অপপ্রচার।’’ এনসিপি-তে অজিতের ‘বিদ্রোহ’কে সমর্থন করে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘যোগ্য ব্যক্তিরা দলে সম্মান না পেলে এমন ঘটনা ঘটবেই।’’ তাঁর যুক্তি, অতীতে শরদও একই কাজ করেছিলেন। শিন্দের কথায়, ‘‘১৯৭৮ সালে তৎকালীন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী বসন্তদাদা পাটিলের বিরুদ্ধে, পরে ১৯৯৯ সালে কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গান্ধীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিলেন শরদ।’’ মরাঠাভূমে এই রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে আজ শিন্দের সঙ্গে এসে দেখা করেন মহারাষ্ট্র নব নির্মাণ সেনার প্রধান রাজ ঠাকরে। বৈঠকের কারণ জানা না গেলেও, সূত্রের মতে, আগামী লোকসভায় মহারাষ্ট্রে ৪৮টি আসনের মধ্যে ৪৫টি জিততে রাজ ঠাকরেকেও জোটের শরিক করে এগোতে চাইছে বিজেপি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Maharashtra Sharad Pawar Ajit Pawar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE