ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে শুল্ক নিয়ে যে জটিলতা তৈরি হয়েছে, তার সমাধানের জন্য আলোচনার পথ এখনও খোলা আছে। সরকারি সূত্র উল্লেখ করে বুধবার রাতে এমনটাই দাবি করল সংবাদ সংস্থা পিটিআই। সূত্রের দাবি, এই জটিলতাকে আপাতত ‘সাময়িক’ হিসাবেই দেখছে সরকার। শীঘ্রই আলোচনার মাধ্যমে সমাধান সূত্র মিলবে বলে তারা আশাবাদী।
রাশিয়ার কাছ থেকে খনিজ তেল কেনার কারণে ভারতের উপর বাড়তি ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফলে মোট শুল্কের পরিমাণ দাঁড়িয়েছিল ৫০ শতাংশ, যা বুধবার থেকে কার্যকর হয়েছে। চ়ড়া হারে শুল্কের কারণে ভারত থেকে আমেরিকায় বিভিন্ন পণ্যের রফতানি ধাক্কা খেয়েছে। কিন্তু সরকারি সূত্রের দাবি, এখনই এত ভয় পাওয়ার কিছু নেই। দুই দেশের সম্পর্ক দীর্ঘমেয়াদি। এখনও আলোচনার রাস্তা খোলা আছে। এ ক্ষেত্রে ভারতের রফতানির বৈচিত্র্যের কথাও তুলে ধরা হয়েছে। সূত্রের দাবি, ভারত এত রকমের পণ্য এত জায়গায় রফতানি করে যে, মার্কিন শুল্কের তেমন প্রভাব পড়বে না সার্বিক বাণিজ্যে।
আরও পড়ুন:
পাশাপাশি, মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স বিজ়নেস-কে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে বুধবারই ট্রাম্প প্রশাসনের অর্থসচিব স্কট বেসেন্ট জানিয়েছেন, ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে আবার সব ঠিকঠাক হয়ে যাবে। বেসেন্টের কথায়, ‘‘এটা খুব জটিল একটা সম্পর্ক। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আর প্রধানমন্ত্রী মোদীর মধ্যে শীর্ষ স্তরে খুব ভাল সম্পর্ক রয়েছে। তা কেবল রাশিয়ার তেলের উপর নির্ভর করে না। আমি মনে করি, দিনের শেষে আমরা আবার এক হয়ে যাব।’’
সরকারি সূত্র উল্লেখ করে পিটিআই জানিয়েছে, ভারত এবং আমেরিকা, উভয়ের তরফ থেকেই বাণিজ্য নিয়ে ইতিবাচক সঙ্কেত পাওয়া যাচ্ছে। তা ছাড়া, কী ভাবে এই শুল্কের কোপ থেকে দেশীয় রফতানিকারকদের রক্ষা করা যায়, সরকার তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা করছে। কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রক বিভিন্ন ক্ষেত্রের স্বার্থসংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীর সঙ্গে চলতি সপ্তাহে বৈঠকে বসছে। রাসায়নিক, গয়নাগাটি কিংবা মূল্যবান পাথরের ব্যবসাকে কী ভাবে নতুন বাজারে প্রতিষ্ঠিত করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা হবে ওই বৈঠকে।
বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, ট্রাম্পের ৫০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হওয়ার ফলে ভারতের ৪.২ লক্ষ কোটি টাকার রফতানি মার খাবে। ক্ষতি হতে পারে বস্ত্র, গয়না, পাথর, চামড়া, জুতো, চিংড়ি, পশুজাত পণ্য, রাসায়নিক পণ্য এবং বিভিন্ন যন্ত্রপাতির বাণিজ্যে। ওষুধ, জ্বালানি এবং বৈদ্যুতিন পণ্যকে এই শুল্কের আওতার বাইরে রাখা হয়েছে। সূত্রের খবর, বস্ত্রশিল্পের জন্য ব্রিটেন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়ার মতো অন্তত ৪০টি দেশে ঢালাও প্রচারের পরিকল্পনা রয়েছে ভারত সরকারের।