ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে আবার সব ঠিকঠাক হয়ে যাবে। এমনটাই মনে করছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অর্থসচিব স্কট বেসেন্ট বুধবার থেকেই ভারতীয় পণ্যের উপর ৫০ শতাংশ কার্যকর করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। তা নিয়ে কূটনৈতিক চাপানউতরের মাঝেই এই দাবি করলেন বেসেন্ট ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ট্রাম্পের মধ্যে শীর্ষ স্তরে খুব ভাল সম্পর্ক রয়েছে বলেও জানান তিনি। তবে এই সম্পর্ককেও একটি ‘জটিল সম্পর্ক’ বলে ব্যাখ্যা করেন বেসেন্ট।
ট্রাম্প দ্বিতীয় বার আমেরিকার ক্ষমতায় আসার পরে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে হোয়াইট হাউসে গিয়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার পর থেকেই ভারত এবং আমেরিকার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যচুক্তির বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়। চুক্তি যে প্রায় চূড়ান্ত হয়ে এসেছে, আমেরিকা এবং ভারত— দু’দেশই এমন আভাস দিয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হয়ে ওঠেনি। বরং, ভারতের উপর প্রথমে ২৫ শতাংশ, পরে রাশিয়া থেকে তেল কেনার জন্য আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপিয়ে দিয়েছে আমেরিকা।
বুধবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম ‘ফক্স নিউজ়’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে মন্তব্য করেন আমেরিকার অর্থসচিব। বেসেন্টের দাবি, মে-জুন মাসের মধ্যেই ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি চূড়ান্ত হয়ে যাবে বলে আশা করছিলেন তিনি। বেসেন্ট বলেন, “একেবারে শুরুর দিকে ভারত আমাদের সঙ্গে শুল্ক নিয়ে আলোচনা শুরু করেছিল। তবে এখনও আমাদের মধ্যে কোনও চুক্তি হয়নি। আমি ভেবেছিলাম মে বা জুনের মধ্যেই আমাদের মধ্যে চুক্তি হয়ে যাবে। আমি ভেবেছিলাম সকলের আগে যে দেশগুলির সঙ্গে আমাদের চুক্তি হবে, তার মধ্যে অন্যতম থাকবে ভারত। তারা আমাদের সঙ্গে দর কষাকষি করে গিয়েছে। পাশাপাশি রাশিয়া থেকে অশোধিত তেল কেনারও একটি বিষয় রয়েছে। সেটিকে তারা (ভারত) নিজেদের লাভের জন্য ব্যবহার করে আসছে।”
আরও পড়ুন:
বস্তুত, মোদী এবং ট্রাম্পের মধ্যে সুসম্পর্ক রয়েছে বলে দীর্ঘদিন ধরে প্রচলিত ধারণা রয়েছে। তবে এর পরেও ভারতের উপর চড়া হারে শুল্ক চাপিয়েছে আমেরিকা। তার পর থেকেই দু’দেশের মধ্যে কূটনৈতিক টানাপড়েন বৃদ্ধি পেয়েছে। ভারত স্পষ্ট করে দিয়েছে, দেশের স্বার্থের সঙ্গে কোনও আপস করা হবে না। এ আবহে মোদী এবং ট্রাম্পের মধ্যে সম্পর্ক নিয়েও মন্তব্য করেন বেসেন্ট। মার্কিন অর্থসচিবের কথায়, “এটি একটি অত্যন্ত জটিল সম্পর্ক । মোদী এবং ট্রাম্পের মধ্যে শীর্ষ স্তরে খুব ভাল সম্পর্ক রয়েছে। আমি মনে করি ভারত বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র এবং আমেরিকা বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতি। দিনের শেষে আমরা আবার এক হব বলে আমি মনে করি।”
বেসেন্টের দাবি, নয়াদিল্লি এবং ওয়াশিংটনের মধ্যে যখন বাণিজ্যিক আলোচনা চলছিল, তখন ভারতের বেশ ‘কার্যকর’ ভূমিকা ছিল। সেই কারণেই তিনি মনে করেছিলেন মে-জুনের মধ্যে চুক্তি সম্পন্ন হয়ে যাবে। তবে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য প্রসঙ্গে ট্রাম্পের দাবিই আবার তুলে ধরেন বেসেন্ট। তাঁর কথায়, ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে বাণিজ্যে ঘাটতি রয়েছে। তিনি বলেন, যখন এমন ফারাক তৈরি হয়, তখন যে দেশ ঘাটতিতে রয়েছে তাদেরই সুবিধা হয়। যে দেশের উদ্বৃত্ত রয়েছে, চিন্তা তাদেরই বেশি। ভারত আমাদের কাছে পণ্য বিক্রি করছে। তাদের শুল্ক খুব বেশি।”