ফাইল চিত্র।
ভোটমুখী পাঁচ রাজ্যে টিকাকরণের হার অবিলম্বে বাড়ানোর লক্ষ্যে সে রাজ্যের মুখ্যসচিবদের চিঠি দিয়ে নির্দেশ দিল নির্বাচন কমিশন। বিশেষ করে সমস্ত ভোটকর্মী যেন দ্বিতীয় দফা টিকার ডোজ় নিয়ে তবেই ভোটের কাজে নামেন, তা নিশ্চিত করতে রাজ্য প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছে কমিশন।
আগামী সাত দিনের মধ্যে পাঁচ রাজ্যে ভোট ঘোষণা করতে চলেছে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান বলছে, ভোটমুখী রাজ্যগুলির মধ্যে গোয়া ও উত্তরাখণ্ড বাদে বাকি তিন রাজ্যেই টিকাকরণের হার বেশ খারাপ। এর মধ্যে দ্বিতীয় দফা টিকাকরণের ক্ষেত্রে পঞ্জাব ও উত্তরপ্রদেশের স্থান জাতীয় গড়ের চেয়ে অনেক নীচে। অন্য দিকে মণিপুরে প্রথম দফা টিকাকরণের হারই আশানরূপ না হওয়ায় অবিলম্বে ওই রাজ্যে টিকাকরণের হার বাড়াতে সে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে আলাদা করে নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। পাঁচ রাজ্যের মুখ্যসচিবকে লেখা চিঠিতে কমিশন জানিয়েছে, ভোটের কাজে যে ভোটকর্মীদের ব্যবহার করা হবে, তাঁদের ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কার হিসাবে গণ্য করতে হবে রাজ্যগুলিকে। সে ক্ষেত্রে তাঁদের দুই দফা টিকা নেওয়া বাধ্যতামূলক। সূত্রের মতে, ভোটকর্মীদের সংক্রমণ ও মৃত্যু ঠেকাতে কমিশন চাইছে, প্রতিষেধকের দু’টি টিকা পেয়েছেন, এমন ব্যক্তিদেরই কেবল ভোটের কাজে ব্যবহার করতে। যাঁরা দু’টি ডোজ় ইতিমধ্যেই পেয়ে গিয়েছেন এবং ভোটের সময়ে সতর্কতামূলক বা বুস্টার ডোজ় পাওয়ার যোগ্য, তাঁদের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে তা দেওয়ার উপরে জোর দিয়েছে কমিশন।
গত সপ্তাহে ভোটমুখী রাজ্যগুলিকে ভোটকর্মীদের ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কার হিসাবে গণ্য করে টিকাকরণের গতি বাড়াতে নির্দেশ দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ। করোনার তৃতীয় ঢেউ দেশে আছড়ে পড়েছে বলে স্বীকার করে নিচ্ছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যকর্তারা। এই আবহে সংক্রমণের বিস্ফোরণ রুখতে ভোট পিছিয়ে দেওয়ার পক্ষে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের একাংশ। সেখানে কমিশন এখনও পর্যন্ত নির্দিষ্ট সময়ে ভোট করানোর পক্ষপাতী। কিন্তু এ ক্ষেত্রে ঝুঁকির হল, ভোটের পরে রাজ্যগুলিতে সংক্রমণ যদি বৃদ্ধি পায়, সে ক্ষেত্রে যাবতীয় দায় এসে পড়বে কমিশনের উপরে। তা বুঝেই ভোটমুখী রাজ্যগুলিতে সার্বিক টিকাকরণের হার বাড়িয়ে সংক্রমণ যাতে রোখা যায়, তা নিশ্চিত করতে সক্রিয় হল নির্বাচন কমিশন।
ওমিক্রন নিয়ে উদ্বেগ এবং নির্বাচন কমিশনের চিঠির মধ্যেও নেতাদের জনসভা কিন্তু থেমে নেই। কাল, মঙ্গলবার বিজেপি-শাসিত ত্রিপুরা এবং ভোটমুখী মণিপুরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। একাধিক প্রকল্পের শিলান্যাস করে জনসভা করবেন সেখানে। এর মধ্যে মণিপুরে প্রথম ডোজ় টিকাদানের হার উদ্বেগজনক ভাবে কম। ফলে সেখানে মোদীর সফর নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বুধবার প্রধানমন্ত্রী যাবেন আর এক ভোটমুখী রাজ্য পঞ্জাবে। সেখানেও একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধন এবং সভা করবেন তিনি। এ দিকে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ আবার ওমিক্রন নিয়ে সব উদ্বেগ উড়িয়ে এই রোগকে মামুলি জ্বর এবং ইনফ্লুয়েঞ্জার সঙ্গে তুলনা করেছেন। খোদ মুখ্যমন্ত্রীর এমন বক্তব্যে বিস্মিত স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। আর বিরোধীরা মনে করাচ্ছেন, এই যোগীর শাসনেই উত্তরপ্রদেশের করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় গঙ্গায় লাশ ভেসেছে দেদার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy