Advertisement
০৬ মে ২০২৪
Electoral Bonds

রাজনৈতিক অনুদানে নির্বাচনী বন্ড ব্যবহারেই কেন এত আগ্রহ মোদী সরকারের? উঠছে প্রশ্ন

বিরোধী দলগুলি ও নির্বাচনী প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে আন্দোলনকারীরা অভিযোগ তুলেছেন, নির্বাচনী বন্ডে অস্বচ্ছতা বাড়বে। বিশ্বের কোনও গণতান্ত্রিক দেশেই এমন ব্যবস্থা চালু নেই।

গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০২২ ১২:১৯
Share: Save:

রাজনৈতিক দলগুলিকে অনুদান দেওয়ার ক্ষেত্রে নির্বাচনী বন্ডের ব্যবহারে কোনও অস্বচ্ছতা নেই। সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্নের জবাবে শুক্রবার এ কথা জানিয়েছে কেন্দ্র। নরেন্দ্র মোদী সরকারের তরফে সলিসিটর জেনারেল তুষায় মেহতা শীর্ষ আদালতে দাবি করেছেন, নির্বাচনী বন্ড পুরোপুরি স্বচ্ছ প্রক্রিয়া। আর মোদী সরকারের এই অবস্থান নিয়েই উঠেছে নানা প্রশ্ন।

নির্বাচনী বন্ড ব্যবহার বন্ধের আবেদন জানিয়ে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের দায়ের করা ওই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ৬ ডিসেম্বর হবে বলে জানিয়েছে বিচারপতি বি আর গাভাই ও বিচারপতি বি ভি নাগরত্নকে নিয়ে গঠিত সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ। প্রায় ৫ বছর ধরে সুপ্রিম কোর্টে ঝুলে থাকা মামলা চলাকালীন ৫ জন প্রধান বিচারপতি এসেছেন। প্রতি বারেই মোদী সরকারের অনড় বন্ড-প্রীতি স্পষ্ট হয়েছে শীর্ষ আদালতে।

প্রসঙ্গত, ভোটে কালো টাকার খেলা বন্ধ করার কথা বলে কয়েক বার নির্বাচনী বন্ড চালু করেছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী থাকাকালীন ২০১৮ সালে প্রয়াত অরুণ জেটলি নির্বাচনী বন্ডের কথা ঘোষণা করেছিলেন। ২০১৭-র অর্থ বিলের মাধ্যমে আইনে একগুচ্ছ সংশোধনী এনে মোদী সরকার ২০১৮ থেকে নির্বাচনী বন্ড চালু করেছিল। এর ফলে কোনও ব্যক্তি বা কর্পোরেট সংস্থা রাজনৈতিক দলগুলিকে চাঁদা দিতে চাইলে, বন্ড কিনে সংশ্লিষ্ট দলকে দিতে হবে। ১ হাজার, ১০ হাজার, ১ লক্ষ, ১০ লক্ষ এবং ১ কোটি টাকা মূল্যের বন্ড পাওয়া যাবে। রাজনৈতিক দলগুলি নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টে সেই বন্ড ভাঙিয়ে নিতে পারবে। কিন্তু কে, কত টাকা দিচ্ছেন তা বোঝা যাবে না।

নির্বাচনী বন্ড চালু হওয়ার পর বিষয়টির স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। বিরোধী দল এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেন, এতে অস্বচ্ছতাই বাড়বে। বিশ্বের কোনও দেশেই এমন ব্যবস্থা নেই, বন্ড ভাঙাচ্ছে রাজনৈতিক দল। ফলে কোন কর্পোরেট সংস্থা কাকে ভোটে সাহায্য করছে, তার বিনিময়ে ক্ষমতাসীন দলের থেকে কী সুবিধে আদায় করছে, তার জানার উপায় নেই।

আর এখানেই প্রশ্ন বন্ড-বিরোধীদের। তাঁদের দাবি, কেন্দ্র এবং অধিকাংশ রাজ্যে ক্ষমতায় থাকার সুবাদে নির্বিবাদে অর্থ আমদানির কার্যত ‘চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত’ করে ফেলতে চাইছে গেরুয়া শিবির। আর সে কারণেই তারা নির্বাচনী বন্ড চালু রাখতে মরিয়া। পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, মূলত ১০ লক্ষ টাকা ও ১ কোটি টাকার বন্ড কেনা হচ্ছে। যা থেকে স্পষ্ট, কর্পোরেট সংস্থাগুলিই রাজনৈতিক দলকে চাঁদা দিয়ে সুবিধা আদায় করতে চাইছে। আর সেই চাঁদা পাওয়ার নিরিখে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি।

অন্য দিকে সরকারের যুক্তি, চাঁদা কারা দিচ্ছেন তা প্রকাশ করতে গেলে এত দিনের মতো নগদে, কালো টাকার লেনদেনই হবে। শেষ পর্যন্ত বিষয়টি গড়ায় আদালতে। এ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় সিপিএম এবং ‘অ্যাসোসিয়েশন অব ডেমোক্র্যাটিক রাইটস’ (এডিআর) নামে একটি সংগঠন। তাদের আর্জি, নির্বাচনী বন্ড বিক্রি নিষিদ্ধ করা হোক, কিংবা বন্ড কারা কিনছে, তাদের নাম জানানো হোক। কিন্তু, দাতার নাম জানানোর দাবিতে সায় দিতেও নারাজ কেন্দ্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Electoral Bonds Supreme Court Election Commission
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE