তিন বছর অপেক্ষার পর মাস্কের সংস্থাকে অবশেষে ছাড়পত্র দিল ভারত সরকার! আসছে নতুন ইন্টারনেট পরিষেবা

ইলন মাস্কের সংস্থা স্টারলিঙ্ককে অবশেষে ছাড়পত্র দিল ভারত সরকার। ভারতে বাণিজ্য করার জন্য প্রয়োজনীয় লাইসেন্স পেয়ে গিয়েছে স্টারলিঙ্ক। ২০২২ সাল থেকে এই ছাড়পত্রের জন্য সংস্থাটি অপেক্ষা করছিল। শুক্রবার সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ভারতের টেলিকম মন্ত্রক স্টারলিঙ্ককে লাইসেন্স দিয়ে দিয়েছে। তবে কেন্দ্রীয় সরকার বা মাস্কের সংস্থার তরফে এ বিষয়ে এখনও কোনও মন্তব্য করা হয়নি।

স্টারলিঙ্ক একটি ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থা। কৃত্রিম উপগ্রহ বা স্যাটেলাইটের মাধ্যমে এই সংস্থা দূরদূরান্তে ইন্টারনেট পৌঁছে দেয়। দীর্ঘ দিন ধরেই ভারতের বাজারে তারা প্রবেশ করতে চাইছিল। কিন্তু জাতীয় নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে এবং আরও কিছু কারণে বার বার স্টারলিঙ্কের সরকারি ছাড়পত্র পাওয়া পিছিয়ে গিয়েছে। অবশেষে মাস্কের সংস্থা কাঙ্ক্ষিত সেই ছাড়পত্র পেল। এখনও অ্যামাজ়নের কুপিয়েরকে লাইসেন্স দেয়নি কেন্দ্র।

ভারতের অন্যতম প্রধান দুই টেলিকম তথা ইন্টারনেট প্রদানকারী সংস্থা এয়ারটেল এবং রিলায়্যান্স জিয়ো-র সঙ্গে ইতিমধ্যে স্টারলিঙ্কের চুক্তি হয়েছে। ভারতের বাজারে স্টারলিঙ্কের ইন্টারনেট আনার জন্য গত মার্চে মাস্কের স্পেসএক্সের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক চুক্তি করেছিল এয়ারটেল। পরে মুকেশ অম্বানীরাও একই চুক্তি করেন। তবে উভয়ক্ষেত্রেই চুক্তি ছিল শর্তাধীন। বলা হয়েছিল, ভারত সরকারের ছাড়পত্র পেলে তবেই স্টারলিঙ্কের ইন্টারনেট এ দেশে ব্যবহার করবে এয়ারটেল বা জিয়ো।

স্টারলিঙ্কের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটের তথ্য বলছে, ‘লো আর্থ অরবিট’-এ অবস্থিত ছোট ছোট স্যাটেলাইটের মাধ্যমে ইন্টারনেট পরিষেবা দিয়ে থাকে এই সংস্থা। পৃথিবীপৃষ্ঠের ১৬০ থেকে ২০০০ কিলোমিটার উচ্চতার মধ্যে কক্ষপথগুলিকে ‘লো আর্থ অরবিট’ বলা হয়ে থাকে। নিচু অবস্থানের কারণে এই স্যাটেলাইট থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চলেও ইন্টারনেট পৌঁছে দেওয়া যায়। ভারতের বাজারে স্টারলিঙ্ক ব্যবসা শুরু করলে ইন্টারনেট পরিষেবা আরও জোরদার হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এই মুহূর্তে স্টারলিঙ্কের অধীনে রয়েছে ৬,৭৫০টি স্যাটেলাইট। সারা বিশ্বে লক্ষ লক্ষ মানুষ স্টারলিঙ্কের ইন্টারনেট ব্যবহার করেন।

উল্লেখ্য, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সম্প্রতি মাস্কের সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে। ট্রাম্প প্রশাসন থেকে ইস্তফা দিয়েছেন মাস্ক। প্রকাশ্যেই ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করেছেন। তার পরিপ্রেক্ষিতে মাস্কের সংস্থার ভর্তুকি বাতিল এবং তাঁর সঙ্গে সরকারি চুক্তি বাতিলের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ট্রাম্প। মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে এই দ্বৈরথের মাঝেই মাস্কের বিভিন্ন সংস্থার শেয়ারের দর পড়ে গিয়েছে হু-হু করে। কয়েক হাজার কোটি টাকার ব্যক্তিগত ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন মাস্ক। সেই আবহেই ভারতের বাজারে মাস্কের সংস্থার ছাড়পত্রের খবর প্রকাশ্যে এল।