Advertisement
E-Paper

৩৭০ অনুচ্ছেদ রদের ষষ্ঠ বার্ষিকীতে প্রয়াত জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের শেষ রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক

বিভিন্ন সময়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শোনা গিয়েছিল সত্যপাল মালিককে। দিল্লিতে কৃষক সংগঠনগুলির জমায়েতের সময় তিনি মোদী সরকারের দিকে আঙুল তুলেছিলেন।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০২৫ ১৫:৩৩
সত্যপাল মালিক।

সত্যপাল মালিক। — ফাইল চিত্র।

জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের শেষ রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক প্রয়াত। দীর্ঘ দিন ধরে ভুগছিলেন তিনি। মঙ্গলবার দুপুর ১টার সময়ে দিল্লির রামমনোহর লোহিয়া হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। সত্যপালের বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর। প্রসঙ্গত, তিনি জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের রাজ্যপাল থাকার সময়েই ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ করে নরেন্দ্র মোদী সরকার। বিশেষ ক্ষমতা প্রত্যাহার করা হয় জম্মু ও কাশ্মীরের। রাজ্যের তকমাও হারায়। ২০১৯ সালের ৫ অগস্ট সেই পদক্ষেপ করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। ঘটনাচক্রে, ছ’বছর পরে ৫ অগস্ট মৃত্যু হল সত্যপালের। তাঁর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

২০১৮ সালের অগস্ট থেকে ২০১৯ সালের অক্টোবর পর্যন্ত জম্মু ও কাশ্মীরের রাজ্যপাল ছিলেন সত্যপাল। তাঁর আমলেই জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ ক্ষমতা প্রত্যাহার করে কেন্দ্র। সে সময় সত্যপাল জানিয়েছিলেন, তিনি কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে কিছু জানতেন না। সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ওয়্যার’-কে একটি সাক্ষাৎকার দিয়ে তিনি দাবি করেছিলেন, কেন্দ্রীয় সরকার তাঁকে এ বিষয়ে কিছু জানায়নি। যদিও পরে একটি সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দিয়ে তিনি ৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহারের ‘কৃতিত্ব’ দাবি করেছিলেন। সেই নিয়ে তৈরি হয়েছিল বিতর্ক।

সত্যপাল ছিলেন তিন বারের সাংসদ। কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীও ছিলেন তিনি। ২০১৭ সালে কম সময়ের জন্য তিনি বিহারের রাজ্যপাল হয়েছিলেন। ২০১৮ সালে ওড়িশার রাজ্যপাল হিসাবে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়। জম্মু ও কাশ্মীরের রাজ্যপাল পদ সামলানোর পরে গোয়া এবং তার পরে মেঘালয়ের রাজ্যপাল হয়েছিলেন তিনি।

১৯৬০-এর দশকে ছাত্র রাজনীতি করতেন সত্যপাল। তার পরে বার বার দল পরিবর্তন করেছেন তিনি। চৌধরি চরণ সিংহের ভারতীয় ক্রান্তি দল, কংগ্রেস, ভিপি সিংহের হাত ধরে জনতা দলে যোগ দেন তিনি। শেষে ২০০৪ সালে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। চরণ সিংহের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার সুবাদে ১৯৭৪ সালে উত্তরপ্রদেশের বাঘপত আসন থেকে বিধানসভা ভোটে লড়েছিলেন সত্যপাল। জয়ীও হন তিনি। চরণ সিংহের হাত ধরে লোকদলে যোগ দেন সত্যপাল। ১৯৮০ সালে লোকদলের হয়ে রাজ্যসভার সাংসদ হন তিনি। ১৯৮৪ সালে তিনি কংগ্রেসে যোগ দেন। ১৯৮৬ সালে আবার কংগ্রেসের হয়ে রাজ্যসভার সাংসদ হন। বোফোর্স দুর্নীতি প্রকাশ্যে আসার পরে ১৯৮৭ সালে কংগ্রেস থেকে পদত্যাগ করেন তিনি। ভিপি সিংহের হাত ধরে যোগ দেন জনতা দলে। ১৯৮৯ সালে আলিগড় থেকে জনতা দলের টিকিটে লোকসভা ভোটে জয়ী হন তিনি। সংসদীয় বিষয়ক এবং পর্যটন দফতরের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হন তিনি। ২০০৪ সালে তিনি অটল বিহারী বাজপেয়ীর নেতৃত্বে বিজেপিতে যোগ দেন। যদিও সেই বছর লোকসভা নির্বাচনে তিনি বাগপত আসনে হেরে যান আরএলডি নেতা অজিত সিংহের কাছে।

মোদী সরকারের প্রথম মেয়াদকালে জমি অধিগ্রহণ বিল পর্যালোচনার জন্য তৈরি সংসদীয় প্যানেলের প্রধান নিযুক্ত হন সত্যপাল। তাঁর নেতৃত্বাধীন প্যানেল ওই বিলের বিরোধিতা করে। তার পরে বিলটি হিমঘরে পাঠিয়ে দেয় মোদী সরকার। বিভিন্ন সময়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শোনা গিয়েছে তাঁকে। দিল্লিতে কৃষক সংগঠনগুলির জমায়েতের সময় তিনি মোদী সরকারের দিকে আঙুল তুলেছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, এক দিকে আদানি সব চেয়ে ধনী ব্যক্তি হয়ে উঠছেন আর কৃষকদের লড়তে হচ্ছে এমএসপি-র জন্য। মুখ্যমন্ত্রী মমতা সমাজমাধ্যমে তাঁর মৃত্যুতে লিখেছেন, ‘‘ভারতীয় রাজনীতিতে তিনি বিখ্যাত হয়েছিলেন, কিছু সত্য কথা বলে, যা খুব অল্পসংখ্যক লোকই পারেন। তিনি ভারতীয় কৃষকদের সমর্থনে সাহসী হয়ে মুখ খুলেছিলেন।’’

Jammu and Kashmir Atricle 370 Governor
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy