জম্মু ও কাশ্মীরের পুঞ্চে বুধবারও যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর এলোপাথাড়ি গুলি চালিয়েছে পাকিস্তান। এমনটাই খবর সেনা সূত্রে। পাকিস্তানকে পাল্টা জবাব দিয়েছে ভারতও। যার জেরে পাক সেনার ‘ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি’ হয়েছে বলে খবর।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, মঙ্গলবার জম্মু ও কাশ্মীরের আখনুরে নিয়ন্ত্রণরেখায় তল্লাশি অভিযানের সময় বিস্ফোরণে নিহত হন দুই সেনা জওয়ান। সেই ঘটনার এক দিনের মাথায় কৃষ্ণা ঘাটি সেক্টরে ফের যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করেছে পাক সেনা। অভিযোগ, কোনও রকম উস্কানি ছাড়াই ভারতীয় সেনাকে লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গুলি চালানো হয়। যোগ্য জবাব দেয় ভারতীয় সেনাও। তার জেরে পাক সেনার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে সূত্রের খবর। যদিও পাকিস্তানের তরফে এখনও এ বিষয়ে কোনও তথ্য জানানো হয়নি। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ‘ব্যাপক’ বলেই মনে করা হচ্ছে। এরই মাঝে আবার পাক সেনার জনৈক আধিকারিকের একটি ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে (ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন)। ভিডিয়োয় কোনও তারিখ উল্লেখ করা না থাকলেও তাতে দেখা যাচ্ছে, নিহত সেনাদের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন ওই আধিকারিক।
আরও পড়ুন:
পাশাপাশি, ভারতীয় সেনার তরফে জানানো হয়েছে, বুধবার সন্ধ্যায় একই এলাকায় ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে জখম হয়েছেন সেনার এক জুনিয়র কমিশন্ড অফিসার (জেসিও)। মেন্ধারের বাসিন্দা ওই জেসিও নিয়ন্ত্রণরেখার কাছাকাছি টহল দিচ্ছিলেন। সে সময়েই দুর্ঘটনাটি ঘটে। আহত জওয়ানকে সেনা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
২০২১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি ভারত ও পাকিস্তান যুদ্ধবিরতি চুক্তি পুনর্নবীকরণ করার পর থেকে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘনের ঘটনা বিশেষ ঘটেনি। তবে গত সাত দিনে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর নানা ধরনের হামলার ঘটনা উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়েছে। মঙ্গলবারই আইইডি বিস্ফোরণে নিহত হয়েছেন দুই সেনা জওয়ান। আহত হয়েছেন আরও এক জন। এর আগে সোমবারও কুপওয়ারা জেলায় নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর তল্লাশি অভিযানের সময় কারনা এলাকা থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। তারও আগে গত ৪-৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে কৃষ্ণা ঘাটি সেক্টর হয়ে পুঞ্চে ঢোকার চেষ্টা করছিল সাত পাকিস্তানি অনুপ্রবেশকারী। ভারতীয় জওয়ানদের লক্ষ্য করে গুলি চালাতে শুরু করে তারা। শেষমেশ যদিও দু’পক্ষের গুলির লড়াইয়ে সাত জনেরই মৃত্যু হয়েছে। সেনার এক সূত্রের দাবি, নিহত সাত জনের মধ্যে দু’-তিন জন পাক সেনাও রয়েছেন। এ ছাড়া, নিহতদের মধ্যে বাকিরা অল বদর জঙ্গিগোষ্ঠীর সদস্য বলেও দাবি করা হয়েছে। ভারতীয় সেনার লেফটেন্যান্ট জেনারেল নবীন সচদেব জানিয়েছেন, সম্প্রতি নিয়ন্ত্রণরেখা সংলগ্ন জেলাগুলিতে সন্দেহজনক কাজকর্ম বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই সূত্র ধরেই নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর এলাকাগুলিতে নজরদারি আরও বৃদ্ধি করা হয়েছে। পাশাপাশি স্থানীয় থানার সহযোগিতায় তল্লাশি অভিযানও চলছে।