দিল্লির স্বঘোষিত ‘ধর্মগুরু’ চৈতন্যানন্দ সরস্বতীর বিরুদ্ধে একে একে মুখ খুলেছেন ছাত্রীরা। সেই ঘটনার তদন্ত যত এগোচ্ছে, ততই প্রকাশ্যে আসছে চৈতন্যানন্দের নানা কীর্তির কথা। তিনি নাকি ‘দুবাইয়ের শেখ’দের জন্য সঙ্গিনী খুঁজে দিতেন! এমনই এক হোয়াট্সঅ্যাপ চ্যাট প্রকাশ্যে এসেছে। যেখানে চৈতন্যানন্দ এক ছাত্রীকে মেসেজ পাঠিয়ে ‘সঙ্গম সঙ্গী’ (সেক্স পার্টনার)-র খোঁজ করেছেন বলে অভিযোগ।
পুলিশ সূত্রে খবর, ছাত্রীদের পাঠানো ‘বাবা’র সেই সব হোয়াট্সঅ্যাপ মেসেজ উদ্ধার করা হয়েছে। মেসেজে নানা অছিলায় ছাত্রীদের সঙ্গে ‘যৌনতা’ নিয়ে কথা বলতেন তিনি। ছাত্রীদের অভিযোগ, কখনও দেহের গড়ন, কখনও পোশাক, কখনও চুলের প্রশংসা করে নানা ভাবে কু-ইঙ্গিত করতেন ‘বাবা’। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে অভিযুক্তকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ প্রকাশ্যে আসছে। তেমনই নতুন এক হোয়াট্সঅ্যাপ মেসেজ নিয়ে শোরগোল শুরু হয়েছে।
বিতর্কিত ওই মেসেজ তদন্তকারীদের হাতে এসেছে। পুলিশ মেসেজের সত্যতা যাচাই করে দেখছে বলে খবর। ওই মেসেজে ‘বাবা’ এক ছাত্রীকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘‘দুবাইয়ের এক শেখ সেক্স পার্টনার চাইছেন। তোমার কি কোনও ভাল বন্ধু আছে?’’ চৈতন্যানন্দ কোন দুবাই শেখের কথা বলেছেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে তদন্তকারীদের দাবি, অভিযুক্তের আচরণ, স্বভাব ইত্যাদি বুঝতে এ ধরনের মেসেজ খুবই প্রাসঙ্গিক!
প্রসঙ্গত, দিল্লির একটি বেসরকারি ম্যানেজমেন্ট কলেজে ছাত্রীদের যৌন হেনস্থার অভিযোগ ওঠে চৈতন্যানন্দের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত ‘বাবা’ ওই কলেজেরই কলেজেরই অধিকর্তা। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই হুলস্থুল পড়ে যায়। ঘটনার সূত্রপাত ২০২৪ সালের অক্টোবর। এফআইআরে এক ছাত্রী উল্লেখ করেছেন, গত বছরের অক্টোবরে তিনি দিল্লির ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়েছিলেন। ছাত্রীর অভিযোগ, দীপাবলির সময় তাঁকে প্রথম ডেকে পাঠান ‘বাবা’। তাঁর কাছে যেতেই অদ্ভুত ভাবে তাঁর দিকে তাকিয়ে ছিলেন। আর ওই চাহনি তাঁর খুব একটা ভাল লাগেনি বলেই দাবি করেছেন ছাত্রীটি। শুধু ওই ছাত্রী একা নন, কলেজের অনেক ছাত্রীকেই কু-ইঙ্গিত দিতেন ‘বাবা’। নানা ধরনের কু-মন্তব্যও করতেন।
আরও পড়ুন:
ঘটনা নিয়ে শোরগোল পড়তেই গা-ঢাকা দেন চৈতন্যানন্দ। ‘বাবা’র খোঁজে দিল্লি ছাড়াও বিহার, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান এবং উত্তরাখণ্ডে তল্লাশি চালানো হচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত দিন দুয়েক আগে আগরার একটি হোটেল থেকে গ্রেফতার করা হয়।