তিনি যখন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল ছিলেন, তখন বার বার আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছিলেন জগদীপ ধনখড়। স্বাস্থ্যের কারণ দেখিয়ে দেশের উপরাষ্ট্রপতি পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন তিনি। সেই নিয়েও শুরু হয়েছে আলোচনা। অতীতেও বার বার আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছেন একদা আইনজীবী ধনখড়। কৃষ্ণসার হত্যা মামলায় তিনিই আদালতে সওয়াল করে সলমন খানকে জামিন পাইয়ে দিয়েছিলেন।
১৯৯৮ সালের ঘটনা। রাজস্থানের জোধপুরে ‘হম সাথ সাথ হ্যায়’ ছবির শুটিংয়ের সময়ে হরিণ শিকার করার অভিযোগ উঠেছিল সলমনের বিরুদ্ধে। জোধপুরের কাছে কানকানি গ্রামে দু’টি কৃষ্ণসার হত্যার ঘটনা ঘটেছিল। ১৯৭২ সালের বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ আইন অনুসারে ওই প্রাণীকে বিরল প্রজাতির তকমা দেওয়া হয়েছিল। জোধপুরে সেই কৃষ্ণসার হত্যার পরে সলমন, তাঁর সহ-অভিনেতা সইফ আলি খান, তব্বু, নীলম, সোনালি বেন্দ্রের হয়ে আদালতে সওয়াল করেছিলেন যে আইনজীবীরা, তাঁদের মধ্যে ছিলেন ধনখড়। সে সময় ধনখড়ের সহকারী ছিলেন আইনজীবী প্রবীণ বালওয়াড়া। তিনি সংবাদমাধ্যম ‘ইন্ডিয়া টুডে’-কে বলেন, ‘‘১৯৯৮ সালে জোধপুর পুলিশ যখন সলমনকে গ্রেফতার করে, তখন জগদীপ ধনখড়ই প্রথম আইনজীবী, যিনি তাঁর হয়ে আদালতে সওয়াল করেন। তাঁকে এবং অন্য অভিযুক্তদের জামিন পাইয়ে দেন।’’ প্রবীণ জানান, ওই মামলায় পরবর্তী কালে সলমনের হয়ে সওয়াল করেননি ধনখড়।
ওই বছরই একটি সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন ধনখড়। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, সলমন কি কৃষ্ণসার হত্যা করেছেন? আইনজীবীসুলভ জবাবই দিয়েছিলেন তিনি। স্পষ্ট করে কিছুই জানাননি। উল্টে তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘‘শুটিংয়ের সেটে ৩০০ জন ছিলেন। ঘটনা কখন ঘটল, কেন কেউ জানেন না?’’ সলমনের আচরণের পরিবর্তন নিয়েও আদালতে সওয়াল করেছিলেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘গ্রেফতারির পরে পুলিশের সঙ্গে সহযোগিতা করেছেন সলমন। তাঁকে জামিন দেওয়ার কারণ রয়েছে।’’ আদালতের শুনানিতে গ্রামবাসীদের বয়ান নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন ধনখড়।
২০১৮ সালের ৫ এপ্রিল কৃষ্ণসার হত্যা মামলায় সলমনকে দোষী সাব্যস্ত করে জোধপুর আদালত। জোধপুর সেন্ট্রাল জেলে দু’দিন ছিলেন তিনি। তার পরে ৫০ হাজার টাকা ব্যক্তিগত বন্ড দিয়ে জামিন পান। জামিনের আরও কিছু শর্ত ছিল। অন্য দিকে, ২০০৩ সালে বিজেপিতে যোগ দেন ধনখড়। ২০১৬ সাল পর্যন্ত দলের আইনি বিভাগ সামলেছেন। ২০১৯ সালে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল হন তিনি। ২০২২ সালে ওই পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে এনডিএ-র উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হন ধনখড়। জয়ীও হন। সম্প্রতি অসু্স্থতার কারণ দেখিয়ে উপরাষ্ট্রপতি পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন ধনখড়। যদিও বিরোধীরা তা মানতে রাজি হননি।