স্বামী সোনম ওয়াংচুকের গ্রেফতারি নিয়ে মুখ খুললেন স্ত্রী গীতাঞ্জলি জে অ্যাংমো। ধৃত পরিবেশকর্মী ওয়াংচুকের ‘পাক-যোগ’ রয়েছে কি না, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে লাদাখ পুলিশ। এই সূত্রেই আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে গত ফেব্রুয়ারিতে ওয়াংচুকের সস্ত্রীক পাকিস্তান সফরের বিষয়টি। রবিবার তার ব্যাখ্যা দেন সোনম-পত্নী। তিনি জানান, রাষ্ট্রপুঞ্জ এবং পাক সংবাদমাধ্যম আয়োজিত জলবায়ু সম্মেলনে যোগ দিতেই পাকিস্তানে গিয়েছিলেন তাঁরা। সোনমের পাকিস্তান-যোগ সম্পর্কে যা প্রচার করা হচ্ছে, তা মিথ্যা এবং অবমাননাকর বলেও দাবি করেছেন তিনি।
রবিবার সমাজমাধ্যমে সোনমের স্ত্রী গীতাঞ্জলি লেখেন, “ভারত যদি পাকিস্তানের সঙ্গে ক্রিকেট খেলতে পারে, তা হলে দেশের এক জন বীর (সোনম) সেখানে (পাকিস্তানে) রাষ্ট্রপুঞ্জের সম্মেলনে যোগ দিতে পারবেন না?” একই সঙ্গে তিনি জানান, রাষ্ট্রপুঞ্জের আমন্ত্রণেই তাঁরা ‘ব্রিদ পাকিস্তান’ শীর্ষক সম্মেলনে যোগ দিতে গিয়েছিলেন। সেখানে সোনম প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জলবায়ু সংক্রান্ত উদ্যোগের প্রশংসা করেছিলেন বলেও জানান গীতাঞ্জলি।
সম্প্রতি পাকিস্তানের হয়ে চরবৃত্তি করার অভিযোগে লাদাখে এক জন গ্রেফতার হন। লাদাখের ডিজি এসডি সিংহ জামওয়াল জানান, ওই ব্যক্তি ওয়াংচুকের বিভিন্ন বিক্ষোভ কর্মসূচির ভিডিয়ো সীমান্তের ও পারে পাঠাতেন। এই প্রসঙ্গে গীতাঞ্জলি বলেন, “এটা তো তা হলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ব্যর্থতা। যদি পাকিস্তানের চর এখানে (লাদাখ) ঘুরে বেড়ায়, তা হলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক কী করছে? তারা তাদের কাজ করতে ব্যর্থ হয়েছে। আমি তাদের উত্তর চাই।” লাদাখের সাম্প্রতিক হিংসার জন্য নিরাপত্তা বাহিনীর দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছেন গীতাঞ্জলি। দাবি করেছেন লাদাখে স্বতন্ত্র আইনসভা এবং ওই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলের অন্তর্ভুক্ত করার দাবি তোলার জন্যই চার বছর আগে থেকে সোনমকে হেনস্থা করা হচ্ছে।
পৃথক রাজ্যের দাবিতে বিক্ষোভের জেরে গত বুধবার অশান্ত হয়েছিল লাদাখ। ওই অশান্তির মাঝে চার জনের মৃত্যু হয়। জখম হন আরও অনেকে। ওই ঘটনার পরে শুক্রবার সোনমকে গ্রেফতার করে লাদাখ পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে জাতীয় নিরাপত্তা আইনে মামলা রুজু করা হয়। গ্রেফতারির পরে লাদাখের বাইরের একটি জেলে নিয়ে আসা হয় তাঁকে। বর্তমানে রাজস্থানের জোধপুরের একটি জেলে রাখা হয়েছে ওয়াংচুককে। শনিবার লাদাখের ডিজিপি জানান, সোনমের জন্যই গত বুধবার ওই অশান্তি ছড়িয়েছিল।
‘থ্রি ইডিয়টস’ সিনেমায় আমির খানের ‘র্যাঞ্চো’ চরিত্রটি বানানো হয়েছিল পরিবেশকর্মী ওয়াংচুকের আদলেই। তাঁর গ্রেফতারি প্রসঙ্গে শনিবার লাদাখ পুলিশের ডিজি বলেছিলেন, “তদন্তে (সোনমের বিরুদ্ধে) যা পাওয়া গিয়েছে, তা এখনই প্রকাশ্যে আনা যাবে না। তদন্ত প্রক্রিয়া এখনও চলছে। আপনারা চাইলে তাঁর প্রোফাইল এবং অতীত জানতে চান, তা সবটাই ইউটিউবে রয়েছে।”