বিহারের ভোটে একা লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েও শেষ পর্যন্ত পিছিয়ে গেল হেমন্ত সোরেনের ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম)। কংগ্রেস এবং আরজেডির ‘রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের’ জন্যই তারা নির্বাচনে লড়তে পারছে না বলে দাবি জেএমএম-এর। এর যোগ্য জবাব দেওয়া হবে বলেও জানিয়ে রেখেছে ঝাড়খণ্ডের শাসকদল।
কংগ্রেস, আরজেডি এবং জেএমএম— প্রত্যেকেই বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র শরিক। ঝাড়খণ্ডের শাসকদল এ বারের বিহার ভোটে প্রার্থী দেওয়ার জন্য আসন সমঝোতার পথ খোলা রেখেছিল। কিন্তু বিরোধী দলগুলির মধ্যে কোনও আসন বোঝাপড়ার তথ্য প্রকাশ্যে আসেনি। এ অবস্থায় শনিবারই হেমন্তের দল জানিয়ে দেয়, তারা কোনও জোটে যাচ্ছে না। বিহারের ছয় আসনে একাই লড়ার সিদ্ধান্ত নেয় তারা। চাকাই, ধামানদাহ, কাটোরিয়া, মণিহারি, জামুই এবং পিরপৈঁতি— এই ছ’টি আসনে তারা প্রার্থী দেবে বলে জানায় জেএমএম।
দ্বিতীয় দফার ভোটের জন্য সোমবারই ছিল মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন। তবে সোমবার বিকেলে জেএমএম নেতা তথা ঝাড়খণ্ডের মন্ত্রী সুদিব্য কুমার জানিয়ে দেন, তাঁরা বিহারের ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন না। তিনি বলেন, “রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবে জেএমএমকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে না-দেওয়ার জন্য আরজেডি এবং কংগ্রেসই দায়ী। জেএমএম এর যোগ্য জবাব দেবে। আরজেডি এবং কংগ্রেসের সঙ্গে আমাদের জোটও পর্যালোচনা করা হবে।” যদিও ‘ইন্ডিয়া’র দুই শরিকের বিরুদ্ধে কোন ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছেন তিনি, তা সুদিব্যের বক্তব্যে স্পষ্ট নয়।
বিহার ভোটের আসন সমঝোতা নিয়ে বিরোধী দলগুলির মধ্যে দফায় দফায় আলোচনার পরেও কোনও সমঝোতাসূত্র বেরিয়ে আসেনি। প্রার্থিতালিকা প্রকাশ না-করেই নিজের মতো করে বিভিন্ন আসনে প্রার্থী দিতে শুরু করেছিল তেজস্বীর দল। সোমবার শেষ পর্যন্ত তারা ১৪৩টি আসনের প্রার্থিতালিকা প্রকাশ করে। অন্য দিকে কংগ্রেসও শুরুর দিকে প্রার্থিতালিকা প্রকাশ না-করে বেশ কিছু আসনে দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করতে শুরু করেছিল সমাজমাধ্যমের পাতায়। পরে অবশ্য কয়েক দফায় প্রার্থিতালিকা প্রকাশ করেছে তারা।
আরও পড়ুন:
গত বৃহস্পতিবার ৪৮ জনের প্রার্থিতালিকা প্রকাশ করে কংগ্রেস। শুক্রবার আরও এক আসনে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়। শনিবার আরও পাঁচ আসনে এবং সোমবার ছয় আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে কংগ্রেস। ২৪৩ আসনের বিহার বিধানসভা নির্বাচনে ১৪৩ আসনে প্রার্থী দিয়েছে আরজেডি। কংগ্রেস প্রার্থী দিয়েছে ৬০টি আসনে। তার মধ্যেও বেশ কিছু আসনে দুই দলকেই প্রার্থী দিতে দেখা গিয়েছে।
চারটি আসনে জোটসঙ্গীদের বিরুদ্ধেই লড়াইয়ে নামছে তেজস্বীর দল। বৈশালী, লালগঞ্জ এবং কাহালগাঁওয়ে কংগ্রেস এবং আরজেডি উভয় শিবিরই প্রার্থী দিয়েছে। তারাপুরে অপর জোটসঙ্গী বিকাশশীল ইনসান পার্টির নেতা মুকেশ সাহনীর বিরুদ্ধেও প্রার্থী দিয়েছেন তেজস্বীরা। বিরোধী জোটের আসন বোঝাপড়ায় এই জটিলতার মাঝে বিহারে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করার সিদ্ধান্ত নিল ঝাড়খণ্ডের শাসক দল।