মাইক্রোসফটের ভারতীয় বংশোদ্ভূত সিইও সত্য নাদেল্লা।
টানা আক্রমণের মুখেও সিএএ এবং এনআরসি প্রসঙ্গে নিজের মতেই অনড় রইলেন মাইক্রোসফটের ভারতীয় বংশোদ্ভূত সিইও সত্য নাদেল্লা। আজ সরাসরি বিজেপির সমালোচনার মুখেও পড়েছেন তিনি।
গত কাল এক মার্কিন ওয়েবসাইটের সম্পাদক বেন স্মিথ নাদেল্লাকে প্রশ্ন করেন, ‘‘বিভিন্ন দেশের সরকারের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপড়েন নিয়ে প্রায়ই আপনাদের মতো সংস্থাকে ভুগতে হয়। ভারতের নয়া নাগরিকত্ব আইন নিয়ে আপনার কোনও মত আছে কি? ভারত সরকার যে ভাবে তথ্যকে ব্যবহার করছে তা নিয়ে কি আপনারা উদ্বিগ্ন?’’ নাদেল্লা বলেন, ‘‘আমি আমার ভারতীয় ঐতিহ্য নিয়ে গর্বিত। হায়দরাবাদে বড় হয়েছি। সেখানে আমরা ইদ, বড়দিন ও দীপাবলি, সবই উদ্যাপন করতাম। আমার মনে হয় এখন যা ঘটছে তা খুব খারাপ।’’
নাদেল্লার বক্তব্য, ‘‘আমেরিকায় অভিবাসী হিসেবে এসেই সাফল্য পেয়েছি। আমি দেখতে চাই এক জন বাংলাদেশি অভিবাসী ভারতে এসে ইউনিকর্নের মতো স্টার্ট আপ তৈরি করুন বা ইনফোসিসের মতো সংস্থার সিইও নিযুক্ত হোন।’’
আরও পড়ুন: শাহিনবাগের রাস্তা খালির মামলা খারিজ দিল্লি হাইকোর্টে
নাদেল্লার বক্তব্য, ‘‘আমি বলছি না কোনও দেশের সীমান্ত নিয়ে সচেতন হওয়া উচিত নয়। আমেরিকা-ইউরোপের মতো ভারতেও অভিবাসন একটি সমস্যা। কিন্তু অভিবাসন, অভিবাসী ও সংখ্যালঘুদের নিয়ে কোনও দেশ যে অবস্থান নেয়, তাতেই তাদের সংবেদনশীলতার পরিচয় পাওয়া যায়।’’
মাইক্রোসফটের সিইও-র বক্তব্য, ‘‘বাজারের শক্তি ও উদার মূল্যবোধের জন্যই ধনতন্ত্র সফল হয়েছে। আমার আশা ভারত এটা বুঝবে। ভাল খবর হল যে ভারতে গণতন্ত্র রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে। কিছু গোপন নেই। তবে আমার বা আমাদের অবস্থান কী তা একেবারে স্পষ্ট।’’
এর পরেই নাদেল্লার বক্তব্য নিয়ে ঝড় শুরু হয়। তাঁকে ট্রোল করতে শুরু করেন অনেকে। ইতিহাসবিদ রামচন্দ্র গুহের মতো অনেকে আবার তাঁর বক্তব্যকে স্বাগত জানান। টি মোহনদাস পাই দাবি করেন, আমেরিকায় বামপন্থীরা নাদেল্লাকে ভুল বুঝিয়েছেন। অনেকে দাবি করেন, কোনও বাংলাদেশি অভিবাসী বৈধ ভাবেই ভারতে এসে নাগরিকত্ব নিয়ে সফল হতে পারেন। নাদেল্লা বিষয়টি পুরোপুরি না বুঝেই মন্তব্য করছেন।
এত সমালোচনার মধ্যেও অবস্থান বদলাননি নাদেল্লা। মাইক্রোসফটের তরফে তাঁর বিবৃতি প্রকাশ করা হয় আজ। তাতেও তিনি বলেছেন, ‘‘সব দেশকেই তার সীমান্ত স্থির করতে হবে, জাতীয় স্বার্থরক্ষা করতে হবে। এই বিষয়গুলি মাথায় রেখেই সব দেশ তাদের অভিবাসন নীতিও স্থির করবে। আমাকে তৈরি করেছে আমার ভারতীয় ঐতিহ্যই। বহু সংস্কৃতির মিলনক্ষেত্র ভারতে বড় হয়েছি। পরে অভিবাসীর অভিজ্ঞতা হয়েছে আমেরিকায়। আমি এমন ভারতই চাই যেখানে কোনও অভিবাসী স্টার্ট আপ শুরু করতে পারেন বা বহুজাতিক সংস্থার প্রধান হতে পারেন।’’
এর পরে নাদেল্লার বিরুদ্ধে সরাসরি তোপ দাগে বিজেপি। বিজেপি সাংসদ মীনাক্ষী লেখি টুইটারে লেখেন, ‘‘সত্য নাদেল্লার মন্তব্য থেকেই প্রমাণিত হয় সাক্ষরদেরও শিক্ষিত হওয়া প্রয়োজন। সিএএ-র উদ্দেশ্যই হল বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে নির্যাতিত সংখ্যালঘুদের সুযোগ দেওয়া। আমেরিকায় যদি ইয়েজ়িদিদের বদলে সিরিয়ার মুসলিমদের এমন সুযোগ দেওয়া হয় তবে কেমন পরিস্থিতি হবে?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy