Advertisement
E-Paper

বাংলাদেশকে এড়িয়ে কলকাতা থেকে উত্তর-পূর্বের নতুন পথ বানাচ্ছে ভারত, মায়ানমারের সেই রাখাইনের বন্দর দিয়েই

‘ন্যাশনাল হাইওয়েজ় অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড’-এর এক কর্তা জানিয়েছেন, ভারত-মায়ানমার ‘কালাদান মাল্টিমোডাল ট্রানজিট ট্রান্সপোর্ট প্রকল্প’ হবে বাংলাদেশকে এড়িয়ে।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০২৫ ১৮:৫৯
New North-East link to Kolkata will be via sea and , giving Bangladesh a miss

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

শিলিগুড়ির ‘চিকেন নেক’ ছাড়া বিকল্প ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু গত ৫ অগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পরে বদলে গিয়েছে পরিস্থিতি। এই আবহে উত্তর-পূর্বাঞ্চলে যোগাযোগের জন্য বিকল্প পথের রূপরেখা চূড়ান্ত করতে চলেছে কেন্দ্র। যার ‘ভরকেন্দ্র’ হবে কলকাতায়।

বাংলাদেশে রাজনৈতিক পালাবদলের পরে ঢাকায় ক্ষমতায় এসেছে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। হাসিনা জমানায় ‘ট্রানজ়িট রুট’ নিয়ে সমঝোতার ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় অগ্রগতি হলেও তা থমকে গিয়েছে। এই আবহে সমুদ্র ও মায়ানমারের সড়কপথ ব্যবহার করে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সংযোগরক্ষাকারী বিকল্প পথের রূপরেখা চূড়ান্ত করা হয়েছে বলেছে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে।

ওই প্রতিবেদন জানাচ্ছে, ‘ন্যাশনাল হাইওয়েজ়় অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড’ (এনএইচআইডিসিএল)-এক কর্তা ওই প্রকল্পের কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, মেঘালয়ের রাজধানী শিলং থেকে অসমের বরাক উপত্যকার প্রাণকেন্দ্র শিলচর পর্যন্ত প্রায় ১৬৭ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি চার লেনের জাতীয় সড়ক নির্মাণের প্রস্তাব করেছে ভারত সরকার। ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক প্রকল্পের এই রাস্তা যাবে মায়ানমার সীমান্তের অদূরের পাঁচগ্রাম পর্যন্ত। নির্মাণের দায়িত্বে থাকবে এনএইচআইডিসিএল।

এই বিকল্প পথের সমুদ্র -যোগাযোগ হবে কলকাতা থেকে মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশের সিট্টে বন্দর পর্যন্ত। সিট্টে থেকে বঙ্গোপসাগর ছেড়ে মায়ানমারের কালাদান নদীপথে সে দেশের পালেটয়া যাবে ওই জলপথ। এর পরে সড়কপথে মিজ়োরামের জ়োরিনপুই পর্যন্ত যোগাযোগ স্থাপন করা হবে। নতুন শিলং-শিলচর জাতীয় সড়ক এই যোগাযোগ ব্যবস্থাকে সম্প্রসারিত করবে। পরবর্তী পর্যায়ে জ়োরিনপুই থেকে লুংলেই হয়ে আইজ়ল পর্যন্ত সংযুক্ত হবে। ইউনূস গত মার্চ মাসে চিন সফরে গিয়ে বলেছিলেন, ‘‘উত্তর-পূর্ব ভারত স্থলবেষ্টিত এবং ঢাকা এই অঞ্চলের জন্য সমুদ্রের একমাত্র অভিভাবক।’’ তার পরেই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় নতুন প্রকল্পের রূপরেখা তৈরি হয়েছে বলে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দাবি।

তবে মায়ানমারের সঙ্গে ‘কালাদান মাল্টিমোডাল ট্রানজিট ট্রান্সপোর্ট প্রকল্প’ ২০৩০ সালের মধ্যে বাস্তবায়িত করার লক্ষ্য স্থির হলেও, তা পূরণ হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। কারণ, গৃহযুদ্ধ বিধ্বস্ত মায়ানমারের বড় অংশই সে দেশের সামরিক জুন্টা সরকারের হাতছাড়া। যে রাখাইন প্রদেশের জল এবং স্থলপথ ব্যবহার করে নয়াদিল্লি বিকল্প পথে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতে চাইছে, তার ৮০ শতাংশেরও বেশি বিদ্রোহী সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির দখলে। সেখানে রোহিঙ্গা মুসলিমদের কয়েকটি জঙ্গিগোষ্ঠীও সক্রিয়। গত ৩০ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মন্ত্রিসভা প্রায় ২২,৮৬৪ কোটি টাকার প্রস্তাবিত ‘কালাদান মাল্টিমোডাল ট্রানজিট ট্রান্সপোর্ট প্রকল্পে’ অনুমোদন দিয়েছিল। ইতিমধ্যেই মায়ানমারের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনাও চূড়ান্ত হয়েছে। ভারতীয় অংশে সড়কপথে প্রায় ১৪৫ কিলোমিটার অংশ পড়েছে মেঘালয়ে এবং ২২ কিলোমিটার পড়েছে অসমে। প্রকল্পটি চালু হলে শিলং থেকে শিলচরের যাত্রাপথ সাড়ে আট ঘণ্টা থেকে কমে পাঁচ ঘণ্টায় নেমে আসবে। পণ্য পরিবহণের পাশাপাশি উত্তর-পূর্বাঞ্চলে চিনের মোকাবিলায় আরও দৃঢ় হবে ভারতীয় সেনার অবস্থান।

India-Bangladesh Relation India-Bangladesh Border India-Bangladesh Sheikh Hasina Myanmar Rakhine state Arakan Army
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy