Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
mumbai

স্টান স্বামীর বিরুদ্ধে মাওবাদী যোগসাজসের অভিযোগ মানল আদালত

ঝাড়খণ্ডের ৮৩ বছরের জেসুইট মিশনারি স্টান স্বামীকে গত অক্টোবরে তাঁর রাঁচির বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেছিল এনআইএ।

 স্টান স্বামী।

স্টান স্বামী।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২১ ১৭:৪২
Share: Save:

ভীমা-কোরেগাঁও হিংসার ঘটনার ধৃত খ্রিস্টান মিশনারি স্টান স্বামী বিরুদ্ধে মাওবাদী সংশ্রবের অভিযোগ মেনে নিল আদালত। মুম্বইয়ের বিশেষ এনআইএ আদালতের বিচারক ডি ই কোথালিকর তাঁর পর্যবেক্ষণে জানিয়েছেন, তদন্তকারী সংস্থার পেশ করা রিপোর্টে স্টানের সঙ্গে নিষিদ্ধ সংগঠন সিপিআই(মাওবাদী)-র যোগাযোগের প্রমাণ মিলেছে।

প্রসঙ্গত, সোমবার স্টান জামিনের আবদেনও খারিজ করে দেন বিচারক কোথালিকর। সে সময়ই তিনি তাঁর পর্যবেক্ষণ নথিভুক্ত করেন। মাওবাদীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে স্বামী দেশের নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করার যড়যন্ত্র করেছিলেন বলে তদন্তকারী সংস্থা যে অভিযোগ এনেছিল, তা মেনে নিয়েছেন বিচারক। দলিত সংগঠন এলগার পরিষদের একাংশের সঙ্গেও মাওবাদীদের যোগাযোগ রয়েছে বলেও তাঁর পর্যবেক্ষণে জানিয়েছেন। নভি মুম্বইয়ের তলোজা জেলে বন্দি স্টান গত নভেম্বরে চিকিৎসার প্রয়োজনে জামিনের আবেদন জানিয়েছিলেন।

ঝাড়খণ্ডের ৮৩ বছরের জেসুইট মিশনারি স্টানকে গত অক্টোবরে তাঁর রাঁচির বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেছিল এনআইএ। তাঁর বিরুদ্ধে ২০১৭ সালে পুণে জেলার ভীমা-কোরেগাঁওয়ে মাওবাদীদের সাহায্যে হিংসা ছড়ানোর অভিযোগ তোলা হয়। মাওবাদী ঘনিষ্ঠ সংগঠন এলগার পরিষদ ওই ঘটনায় মরাঠাদের উপর হামলা চালিয়েছিল বলে অভিযোগ। তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ-র তরফে স্বামীর বিরুদ্ধে মোহন নামে এক মাওবাদী কমান্ডারের থেকে ৮ লক্ষ টাকা নেওয়ার যে অভিযোগ তোলা হয়েছিল, তার সারবত্তা স্বীকার করেছেন বিচারক কোথালিকর।

তৃতীয় ইঙ্গ-মরাঠা যুদ্ধে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে মরাঠা পেশোয়াদের চূড়ান্ত পরাজয়কে উৎসব হিসেবে পালান করে এলগার পরিষদ। প্রতি বছর ১ জানুয়ারি সংগঠনের সদস্যেরা ভীমা-কোরেগাঁওয়ের জয়স্তম্ভে জড়ো হন। ১৮১৮ সালে এই দিনেই ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি পেশোয়া শক্তিকে পরাজিত করে। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে সাহায্য করেছিল দলিত ‘মাহার’ জনগোষ্ঠী। তাই ওই দিনটিকে তাঁরা ‘বিজয় দিবস’ হিসেবে পালন করেন। ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর দলিতদের ‘এলগার পরিষদ’-এর এই অনুষ্ঠানের পর দিনই হিংসা ছড়িয়েছিল পুণে জেলার ভীমা-কোরেগাঁও এলাকায়। ২০১৮-র ১ এবং ২ জানুয়ারি মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন এলাকায় দলিত-মরাঠা সংঘর্ষ হয়।

ওই হিংসার ঘটনার তদন্তে নেমে সমাজকর্মী গৌতম নওলখা, ভারাভারা রাও, অরুণ ফেরেরা, রোনা উইলসন, ভারনন গঞ্জালভেস ও সুধা ভরদ্বাজ-সহ বেশ কয়েক জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছিল পুলিশ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে খুনের চক্রান্তে লিপ্ত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় তাঁদের। বিজেপির তরফে তাঁদের ‘শহুরে নকশাল’ বলেও চিহ্নিত করা হয়।

পরবর্তীকালে এনআইএ ঘটনার তদন্তে নেমে ৮ জনের নামে চার্জশিট পেশ করে। স্টান ছাড়াও শিক্ষাবিদ তথা মানবাধিকার আন্দোলনের কর্মী আনন্দ তেলতুম্বড়ে, সমাজকর্মী গৌতম নওলাখা, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হানি বাবু, সমাজকর্মী সাগর গোর্খে, সংস্কৃতিকর্মী রমেশ গাইচোর এবং সমাজকর্মী জ্যোতি জগতপের। তাঁদের প্রত্যেকেই মাওবাদীদের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ করা হয় চার্জশিটে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE