অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন ফাইল চিত্র।
মোদী সরকার কর্পোরেট সংস্থার কর কমানোয় সেখান থেকে রাজস্ব আয় কমে গিয়েছে। সেই অভাব মেটাতেই কেন্দ্রীয় সরকারকে এখন পেট্রল-ডিজেলে শুল্ক বাড়িয়ে সাধারণ মানুষের থেকে কর আদায় করতে হচ্ছে বলে কংগ্রেস অভিযোগ তুলল।
পেট্রল-ডিজেলের দাম নিয়ে প্রশ্নের মুখে গতকাল অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বলেছিলেন, ইউপিএ জমানার তেল-বন্ডে সুদ মেটাতে হচ্ছে বলেই সরকারের পক্ষে পেট্রেল-ডিজেলের শুল্ক কমিয়ে দাম কমানো সম্ভব হচ্ছে না। আজ পাল্টা জবাবে কংগ্রেস যুক্তি দিয়েছে, গত সাত বছরে মোদী সরকার পেট্রল-ডিজেলের শুল্ক থেকে ২২.৩৪ লক্ষ কোটি টাকা আদায় করেছিল। সেখান থেকে মাত্র ৭৩,৪৪০ কোটি টাকা তেল-বন্ডের সুদ মেটাতে খরচ হয়েছে। কংগ্রেসের অভিযোগ, মোদী সরকার তিন গুণ কর বাড়িয়েছে। পেট্রোপণ্যে ভর্তুকি ১২ ভাগ কমিয়েছে।
২০১৯-এ আমেরিকা সফরে যাওয়ার আগে কর্পোরেট করের হার কমিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। অর্থনীতিবিদদের হিসেবে, তার ফলে দু’বছরে কর্পোরেট কর থেকে আয় প্রায় ২ লক্ষ কোটি টাকা কমে যায়। ২০১৮-১৯-এ ৬.৬৩ লক্ষ কোটি টাকা কর্পোরেট কর থেকে আয় হয়েছিল। ২০২০-২১-এ তা কমে ৪.৫৭ লক্ষ কোটি টাকায় নেমে আসে। এই লোকসান মেটাতেই সরকারকে পেট্রেল-ডিজেল থেকে কর আদায় করতে হচ্ছে। কর্পোরেট কর শুধুমাত্র শিল্প সংস্থাকেই দিতে হয়। কিন্তু পেট্রল-ডিজেলের কর গরিব-ধনী সকলের উপরেই চাপে।
মোদী সরকারের প্রথম বছরে তেল থেকে কর আদায় হয়েছিল ৭৪ হাজার কোটি টাকা। ২০২০-২১-এ তা বেড়ে ৩.৬ লক্ষ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। অন্য দিকে, ইউপিএ-সরকারের শেষ বছরে জ্বালানিতে ভর্তুকির পরিমাণ ১.৪৭ লক্ষ কোটি টাকা। ২০২০-২১-এ তা মাত্র ১২ হাজার কোটি টাকায় নেমে এসেছে। পেট্রল-ডিজেলের দামে সরকারি নিয়ন্ত্রণ তুলে নেওয়ার আগে সরকারকে রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলিকে কম দামে জ্বালানি বেচার জন্য ভর্তুকি মেটাতে হত। রাজকোষ ঘাটতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ইউপিএ জমানায় নগদ ভর্তুকির বদলে তেল-বন্ডের পথ নেওয়া হয়। প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম বলেন, ‘‘ইউপিএ সরকার তেলে ভর্তুকি দিত। সেই টাকা জোগাড় করার জন্যেই তেল সংস্থাগুলিকে বন্ড ছাড়তে হয়েছে। মোদী সরকার বিপুল পরিমাণে কর আদায় করেছে পাশাপাশি ভর্তুকিও কমিয়েছে। ফলে এ সব নিয়ে কথা বলার কোনও অধিকার তাদের নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy