Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
National News

নেতা সরে গিয়েছেন, সেটাই কংগ্রেসের বড় সমস্যা, রাহুলের ইস্তফা নিয়ে বিস্ফোরক খুরশিদ

একটি সংবাদ সংস্থাকে খুরশিদ বলেছেন, ‘‘আমরা কেন হারলাম, সেটা নিয়ে আলোচনা করতে একজোট হতেই পারলাম না। আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হল, আমাদের নেতাই সরে গিয়েছেন।’’

রাহুল গাঁধীর ইস্তফার সিদ্ধান্তের সমালোচনা করলেন সলমন খুরশিদ। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

রাহুল গাঁধীর ইস্তফার সিদ্ধান্তের সমালোচনা করলেন সলমন খুরশিদ। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০১৯ ১৫:১৯
Share: Save:

লোকসভা ভোটের পর থেকেই ব্যাকফুটে কংগ্রেস। রাহুল গাঁধী সভাপতির পদ ছেড়েছেন। ‘স্টপ গ্যাপ’ হিসেবে এসেছেন সনিয়া গাঁধী। কিন্তু ছন্নছাড়া দলীয় নেতৃত্ব। এই পরিস্থিতিতে এ বার কার্যত গাঁধী পরিবারের নেতৃত্ব নিয়েই উঠে গেল প্রশ্ন। প্রশ্ন তুললেন বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা সলমন খুরশিদ। রাহুলের সরে যাওয়ার সিদ্ধান্তকে যেমন ‘সবচেয়ে বড় সমস্যা’ বলে সমালোচনা করেছেন, তেমনই সনিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন ‘আন্তরিক’ ভাবে দলের হাল না ধরার। দলের বর্ষীয়ান গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে এই রকম আক্রমণ আসায় স্বাভাবিক ভাবেই অস্বস্তিতে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব।

লোকসভা ভোটের আগে দলের ভার ছিল রাহুল গাঁধীর উপর। কিন্তু ভোটের ফল ঘোষণার পর পরই দলের ভরাডুবির দায়িত্ব নিজের কাঁধে নিয়ে সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দেন রাহুল। তাঁর সেই ইস্তফা নিয়েও প্রায় দু’মাস ধরে টানাপড়েন, দড়ি টানাটানি চলেছে। তার পর ইস্তফা যখন গৃহীত হল, তখনও নতুন নেতা ঠিক করতে পারল না দলের কার্যকরী কমিটি। এই পরিস্থিতিতে নতুন সভাপতি নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন দায়িত্ব নেন সনিয়া গাঁধী।

অর্থাৎ যে সময়ে ভরাডুবির পর্যালোচনা করে ঘুরে দাঁড়ানোর ছক সাজানোর কথা, সেই দীর্ঘ সময়টাই নেতা নির্বাচন নিয়ে ব্যয় করে ফেলেছে কংগ্রেস। দলের বিপর্যয়ের চেয়েও দলের নেতাদের সামনে বড় প্রশ্নচিহ্ন তৈরি হয়েছে নেতা নির্বাচন। আর এই বিষয়টি নিয়েই কার্যত প্রথমবার প্রশ্ন তুলে দিলেন সলমন খুরশিদ। একটি সংবাদ সংস্থাকে খুরশিদ বলেছেন, ‘‘আমরা কেন হারলাম, সেটা নিয়ে আলোচনা করতে একজোট হতেই পারলাম না। আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হল, আমাদের নেতাই সরে গিয়েছেন।’’

আরও পড়ুন: কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের দিওয়ালির উপহার, মহার্ঘ ভাতা বাড়ল ৫%, কার্যকর জুলাই থেকে

আরও পড়ুন: দশমী কাটতেই ভারী বৃষ্টি, চলবে আরও ৪৮ ঘণ্টা, রবিবার থেকে মিলবে শরতের আমেজ

কংগ্রেস সভাপতি হিসেবে সনিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন দায়িত্বভার গ্রহণ নিয়ে খুরশিদের মূল্যায়ন, ‘‘একটা শূন্যস্থানের মতো তৈরি হয়েছে। সনিয়া গাঁধী তাতে প্রবেশ করলেন। কিন্তু এমন একাধিক ইঙ্গিত রয়েছে, যাতে মনে হয়েছে তিনি নিজেকে ‘স্টপ গ্যাপ’ হিসেবে ভাবছেন। আমার আশা, সেটা যেন না হয়।’’

রাহুল গাঁধীর সভাপতি ছাড়া নিয়ে এই প্রথম প্রশ্ন তুললেন দলের কোনও নেতা। সাধারণত বিপদের সময় ছেড়ে যাওয়া বোঝাতে ইংরেজিতে ‘ওয়াক অ্যাওয়ে’ শব্দবন্ধ ব্যবহার হয়। খুরশিদের বক্তব্যে এই শব্দবন্ধই ঘুরে ফিরে এসেছে। এবং নিজের অবস্থান যে স্পষ্ট, সেটা ফের বুঝিয়েছেন অন্য একটি সংবাদমাধ্যমে প্রায় একই কথা বলে। সেখানে তাঁর বক্তব্য, ‘‘দল হিসেবে আজ আমরা কোথায়— এটা ভেবে আমি প্রচণ্ড ব্যথিত উদ্বিগ্ন। যাই ঘটুক, আমরা দল ছাড়ব না। আমরা এমন নই যে দলের ভাল সময়ে সব কিছু নেব, কিন্তু দুর্দিনে দল ছেড়ে যাব।’’

খুরশিদ আক্ষেপের সুরে বলেছেন, ‘‘আমাদের সমস্ত আর্জি উপেক্ষা করে রাহুল চলে গেলেন। উনি এখন আর দলের সভাপতি নন। এটাই সম্ভবত দলের ইতিহাসে সবচেয়ে সঙ্কটের মুহূর্ত যখন নেতারা ভরসা হারাচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে উনি থাকলে আমরা সব সমস্যা আরও ভাল ভাবে বুঝতে পারতাম এবং আগত সমস্যাগুলি মোকাবিলায় আগাম পরিকল্পনা করা যেত।’’ একই সঙ্গে তাঁর পরামর্শ, সনিয়া গাঁধীর উচিত সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া এবং কংগ্রেসের স্থায়ী সভাপতি হওয়া।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE