সীমান্ত সংঘাতের আবহে পারস্পরিক মতপার্থক্য ভুলে নরেন্দ্র মোদী সরকারের পাশে দাঁড়াল আরএসএস। আজ একটি বিবৃতিতে আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত বলেন, পহেলগাম জঙ্গি হামলার পরে প্রত্যাঘাতের প্রয়োজন ছিল। সঙ্ঘপ্রধানের মতে, দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ও পাকিস্তানে থাকা জঙ্গি পরিকাঠামো ও জঙ্গিদের সাহায্যকারীদের ধ্বংস করার এক দিকে যেমন দরকার আছে, তেমনই হিন্দু পর্যটকদের উপরে যে নৃশংস হামলা হয়েছিল তার ন্যায়বিচারের জন্যও এর প্রয়োজন ছিল।
গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পহেলগামে জঙ্গি হামলার জবাবে মঙ্গলবার রাতে ‘অপারেশন সিঁদুর’ চালায় ভারত। গত কাল রাতেও হানা-পাল্টা হানায় উত্তপ্ত ছিল দু’দেশের সীমান্ত ও প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা-সংলগ্ন এলাকা। আজ এ নিয়ে মুখ খুলে সরকারের সমর্থনে সরব হলেন সঙ্ঘ নেতৃত্ব। লোকসভা নির্বাচনের সময় থেকেই বিজেপি ও আরএসএসের সম্পর্কে চিড় ধরার ইঙ্গিত ছিল। মাঝে বিভিন্ন রাজ্যের নির্বাচন উপলক্ষ্যে দুই শিবির কাছে এলেও, ফের বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মতপার্থক্য চওড়া হয়। আজ ভাগবত ও আরএসএসের সাধারণ সম্পাদক দত্তাত্রেয় হোসবলে একটি যৌথ বিবৃতিতে যে ভাবে সরকারের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন, তাতে মনে করা হচ্ছে পহেলগাম জঙ্গি হামলা ও তার পরে ‘অপারেশন সিঁদুর’ দু’পক্ষের দূরত্ব অনেকটাই কমিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে।
আজ ভাগবতেরা জানিয়েছেন, ‘অপারেশন সিঁদুর’ দেশের আত্মমর্যাদা ও মনোবল বাড়িয়েছে। পাকিস্তানে থাকা জঙ্গি ঘাঁটি লক্ষ্য করে ওই অভিযান চালানোর জন্য কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে অভিনন্দনও জানিয়েছেন আরএসএস শীর্ষ নেতৃত্ব। ভাগবতেরা বলেছেন, জাতীয় সঙ্কটের সময়ে দেশবাসী সরকার ও সশস্ত্র বাহিনীর পাশে রয়েছে। সীমান্ত এলাকায় ধর্মীয় স্থানে ও নিরীহ জনতার উপরে পাক সেনা যে হামলা চালাচ্ছে তারও নিন্দা করেছে আরএসএস।
সীমান্তে উত্তেজনার সুযোগে দেশে দেশবিরোধী শক্তি তৎপর হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। আজ ভাগবতও নিজের বিবৃতিতে সেই আশঙ্কা ব্যক্ত করে বলেছেন, এই সময়ে কোনও দেশবিরোধী শক্তি যাতে সামাজিক ঐক্য ও সম্প্রীতি নষ্ট করতে না পারে সে বিষয়ে দেশবাসীকে সতর্ক থাকতে হবে। বিবৃতিতে আরএসএস নেতৃত্ব দেশের প্রতিটি নাগরিককে দেশপ্রেম দেখাতে, সামরিক বাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসনকে যখন, যেখানে, যেমন ভাবে প্রয়োজন সেই ভাবে সহযোগিতা করে জাতীয় ঐক্য ও দেশের সুরক্ষা বজায় রাখার আর্জি জানিয়েছেন।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)