লাদাখের প্য়াংগং হ্রদের উপর চিনা সেতু। ছবি: সংগৃহীত।
পূর্ব লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় (এলএসি) পুরোদস্তুর ট্যাঙ্ক বাহিনী মোতায়েনের প্রস্তুতি শুরু করেছে চিনা সেনা। এই উদ্দেশ্যে প্যাংগং হ্রদের উত্তর এবং দক্ষিণ তীরের একাংশকে জুড়ে তৈরি করা হচ্ছে পাকাপোক্ত কংক্রিটের সেতু। চিনা পিপল্স লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)-র সেই নির্মীয়মাণ সেতুর উপগ্রহচিত্র সামনে আসতেই নতুন করে তৈরি হয়েছে আশঙ্কা।
২০২২ সালে প্রথম প্যাংগং হ্রদের সবচেয়ে সঙ্কীর্ণ এলাকা খুরনাকে চিনা ফৌজের ‘তৎপরতা’র ছবি সামনে এসেছিল। সে সময় উপগ্রহচিত্র বিশ্লেষণ করে দেখা গিয়েছিল, কাঠ এবং ইস্পাতের সেতু বানাচ্ছে চিনা ফৌজ। কিন্তু ‘দ্য প্রিন্ট’ প্রকাশিত প্রতিবেদনে দাবি, সাম্প্রতিক উপগ্রহচিত্র বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে অদূরের মূল কংক্রিটের সেতুটি বানানো জন্য ‘সার্ভিস ব্রিজ’ হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে কাঠ ও ইস্পাতের ওই অস্থায়ী সেতুটি।
লাদাখের দুর্গম এলাকায় সেতু নির্মাণের উদ্দেশ্যে ভারী ক্রেন-সহ নানা সরঞ্জাম মজুত করেছে পিএলএ। উপগ্রহচিত্র বিশেষজ্ঞ ড্যানিয়েল সাইমন ওই প্রতিবেদনে জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে ট্যাঙ্ক, সাঁজোয়া গাড়ি-সহ ভারী সামরিক সরঞ্জাম মোতায়েনের উদ্দেশ্যেই ওই সেতু বানানো হচ্ছে। ঘটনাচক্রে, ওই সেতুন দক্ষিণ তীরের অংশেই ২০২০-২১ সালে মুখোমুখি অবস্থানে ছিল ভারতীয় এবং চিনা সেনা। ভবিষ্যতে ফের এমন পরিস্থিতি তৈরি হলে এলএসি লাগোয়া বিস্তীর্ণ অংশে ওই সেতুর মাধ্যমে দ্রুত সেনা, অস্ত্র এবং রসদ পাঠাতে পারবে পিএলএ। কারণ, সেতু তৈরি হয়ে গেলে প্যাংগংয়ের ওই দুই প্রান্তে চিনা সেনাশিবিরের দূরত্ব ২০০ কিলোমিটার থেকে কমে দাঁড়াবে ৫০ কিলোমিটার।
প্রসঙ্গত, ২০২০-র এপ্রিলে প্যাংগং হ্রদের উত্তরে ফিঙ্গার এরিয়া-৮ থেকে অনুপ্রবেশ করে চিনা ফৌজ। চলে আসে ফিঙ্গার এরিয়া-৪-এর কাছে। জুন মাসে গালওয়ান উপত্যকায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পরে নতুন করে দ্বিপাক্ষিক শান্তি আলোচনা শুরু হয়। তারই মধ্যে হ্রদের দক্ষিণে হেলমেট টপ থেকে রেচিন লা— বেশ কিছু উঁচু এলাকায় দখল নেয় ভারতীয় সেনার ‘মাউন্টেন স্ট্রাইক কোর’। দফায় দফায় আলোচনার পরে ফেব্রুয়ারিতে দু’পক্ষের সেনাই মুখোমুখি অবস্থান থেকে কিছুটা পিছিয়ে যায়। কিন্তু অতীতে ভারতীয় সেনা ফিঙ্গার এরিয়া-৮ পর্যন্ত টহল দিলেও নয়া সমঝোতা অনুযায়ী তা ফিঙ্গার এরিয়া-৪ পর্যন্ত সীমাবদ্ধ হয়ে গিয়েছে বলে সূত্রের খবর। এ বার বিতর্কিত সেই এলাকাতেই সেতুনির্মাণের কাজ চালাচ্ছে চিন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy