অহমদাবাদ বিমান দুর্ঘটনার জন্য চালক দায়ী এবং ককপিটে গড়বড় ছিল, এই মর্মে প্রতিবেদনের জন্য সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল’ এবং সংবাদ সংস্থা ‘রয়টার্স’-এর তীব্র সমালোচনা করে তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের পথে পাইলটদের সংগঠন দ্য ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান পাইলটস (এফআইপি)। তাদের দাবি, কোনও তথ্যপ্রমাণ ছাড়া গত ১২ জুন এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান দুর্ঘটনার জন্য পাইলটদের দায়ী করা হয়েছে। এ জন্য আইনি নোটিস পাঠিয়ে ‘দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল’এবং ‘রয়টার্স’কে ক্ষমা চাইতে বলেছে পাইলটদের ওই সংগঠন।
অহমদাবাদ বিমান দুর্ঘটনার তদন্ত করছে এয়ারক্র্যাফ্ট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো (এএআইবি)। তদন্তের প্রাথমিক পর্যায়ে যে সব তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছিল, তা মূল্যায়ন এবং ফলাফলের উপর ভিত্তি করে রিপোর্ট তৈরি করেছে তারা। অন্য দিকে, দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানের দুই পাইলটের এই কথোপকথন প্রকাশ্যে আসায় নয়া মাত্রা পায় অহমদাবাদ বিমান দুর্ঘটনা কাণ্ড। ওই কথোপকথনকে তুলে ধরে ‘দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল’ দাবি করে, দুর্ঘটনার জন্য দায়ী ছিলেন উড়ানের পাইলটেরাই। একই দাবি করে ‘রয়টার্স’। প্রথমেই ওই দাবি সমূলে খারিজ করে দেয় এএআইবি। তারা জানায় পাইলটের কারণেই বিমান দুর্ঘটনা, এই রকম তথ্য এখনও প্রমাণিত হয়নি। এ-ও জানানো হয় এয়ার ইন্ডিয়ার এআই ১৭১ বিমান ভেঙে পড়ার কারণ সম্পর্কে এখনই কোনও সিদ্ধান্তে এলে তাড়াহুড়ো করা হবে। এ বার ‘দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল’ এবং ‘রয়টার্স’কে তাদের প্রতিবেদনের জন্য ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ বলে ভর্ৎসনা করল পাইলটদের সংগঠন। বলা হল, ক্ষমা চাইতে। এফআইপি তাদের বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে, ‘‘এই ধরনের কর্মকাণ্ড দায়িত্বজ্ঞানহীন। বিশেষ করে যখন তদন্ত এখনও চলছে।’’ তাদের সংযোজন, ‘‘সাংবাদিকতার সততা বজায় রাখা উচিত এবং সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করতে পারে এমন তথ্য ছড়ানো উচিত নয়।’’
আরও পড়ুন:
সংশ্লিষ্ট আইনি নোটিসে পাইলটদের সংগঠন জানিয়েছে, অনুমানের ভিত্তিতে গুরুতর বিষয় নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ এক রকম অপরাধ। এতে মৃত পাইলটদের যেমন অপমান করা হল তেমনই তাঁদের সহকর্মীদেরও ছোট করা হচ্ছে। এমন প্রতিবেদনের মাধ্যমে শোকসন্তপ্ত পাইলটের পরিবারকে কষ্ট দিয়েছে ‘রয়টার্স।’একই সঙ্গে সমস্ত পাইলটের উপর বাড়তি চাপ তৈরি করেছে। তাঁদের মনোবলে আঘাত হানা হয়েছে। একই সঙ্গে সমস্ত সংবাদমাধ্যমের কাছে এফআইপি-র আবেদন, এএআইবি-র তদন্তপ্রক্রিয়া শেষ না-হওয়া পর্যন্ত অনুমাননির্ভর এমন প্রতিবেদন প্রকাশ করা থেকে তারা যেন বিরত থাকে।
উল্লেখ্য, এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ড্রিমলাইনার ভেঙে পড়া ও ২৪১ জন সওয়ারি-সহ মোট ২৬০ জনের মৃত্যুর ঘটনার এক মাসের মাথায় গত ১২ জুলাই প্রাথমিক রিপোর্ট পেশ করেছে এএআইবি। এখনও চূড়ান্ত রিপোর্ট আসা বাকি। উড়ানের এপিইউ এবং বাঁদিকের পাখা থেকে সংগৃহীত সীমিত পরিমাণ জ্বালানির নমুনা এখনও পরীক্ষাধীন। ক্রু এবং যাত্রীদের ময়নাতদন্তের রিপোর্টও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।