ইনস্টাগ্রামে আলাপ, সেই থেকে বন্ধুত্ব, ঘনিষ্ঠতা এবং প্রেম! তবে সেই সম্পর্কের পরিণতি হল ভয়ানক। প্রেমিকের হাতে খুন হন প্রেমিকা। তার পর দেহ স্যুটকেসে ভরে ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ৯৫ কিলোমিটার দূরে নিয়ে গিয়ে যমুনা নদীতে ফেলে দেন ওই যুবক ও তাঁর এক বন্ধু। তবে নদীতে ফেলার আগে প্রেমিকার দেহবন্দি ওই স্যুটকেসের সঙ্গে একটি নিজস্বীও তোলেন প্রেমিক। পরে তা আবার সমাজমাধ্যমে পোস্টও করেন।
ঘটনাটি ঘটেছে কানপুরের হনুমন্ত বিহারে। ২১ জুলাই খুনের ঘটনা ঘটলেও দুই অভিযুক্তকে রবিবার গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, ২০ বছর বয়সি আকাঙ্ক্ষা এবং তাঁর দিদি বরা এলাকায় থাকতেন। প্রায় এক বছর আগে ইনস্টাগ্রামে সূরজ নামে এক যুবকের সঙ্গে আলাপ হয় আকাঙ্ক্ষার। পরে সূরজের সাহায্যে স্থানীয় এক রেস্তরাঁয় কাজ পান তিনি। পরে হনুমন্ত বিহারে অন্য একটি রেস্তরাঁয় কাজ নিয়ে চলে যান আকাঙ্ক্ষা। সেখানেই বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকা শুরু করেন তিনি। ওই বাড়িতে আসা-যাওয়া ছিল সূরজের। আকাঙ্ক্ষার পরিবারও জানত দু’জনের সম্পর্কের কথা।
পুলিশ সূত্রে খবর, দু’জনের মধ্যে অশান্তির সূত্রপাত হয় যখন আকাঙ্ক্ষা জানতে পারেন, সূরজের সঙ্গে অন্য এক মহিলার সম্পর্ক রয়েছে। এই নিয়ে প্রায়ই দু’জনের মধ্যে অশান্তি হত। রেস্তরাঁ এবং বাড়িতে অশান্তি চলত। মাঝেমধ্যে দু’জনের মধ্যে হাতাহাতিও হত। অভিযোগ, ২১ জুলাই অশান্তির সময় আকাঙ্ক্ষাকে শ্বাসরোধ করে খুন করেন সূরজ। তার পরে খবর দেন বন্ধু আশিসকে। দু’জনে মিলে দেহ একটি স্যুটকেসে ভরে প্রায় ৯৫ কিলোমিটার দূরে নিয়ে গিয়ে যমুনায় ফেলে দেন।
আরও পড়ুন:
পুলিশ আরও জানিয়েছে, ওই স্যুটকেসের সঙ্গে একটি ছবি তুলে পোস্টও করেছিলেন সূরজ। তবে প্রথমে সেটি কোনও সন্দেহ জাগায়নি। আকাঙ্ক্ষার মা বিজয়শ্রী বলেন, ‘‘২২ জুলাই থেকে মেয়ের মোবাইল ফোন বন্ধ ছিল। বার বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও পারিনি। তখন বরা পুলিশ ফাঁড়িতে জানাই। কিন্তু পুলিশ উদ্যোগী হয়নি। পুলিশ কমিশনারের অফিসে গিয়েও লাভ হয়নি। ৮ অগস্ট পর্যন্ত আকাঙ্ক্ষার খোঁজ না-পেয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করি।’’ ১৬ সেপ্টেম্বর বিজয়শ্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। এফআইআরে নাম থাকা সূরজকে গ্রেফতার করা হয়। জেরার মুখে অভিযোগের কথা স্বীকার করেন সূরজ। সেই সূত্র ধরে আশিসকেও গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, সূরজ জানিয়েছেন, বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছিলেন আকাঙ্ক্ষা। সেই নিয়ে অশান্তির মাঝে রাগের মাথায় শ্বাসরোধ করে খুন করেছেন। পুলিশকে বিভ্রান্ত করতে আকাঙ্ক্ষার মোবাইল ফোন বিহারগামী এক ট্রেনের কোচে ফেলে দিয়েছিলেন সূরজ।