উত্তরপ্রদেশে তিনি সুইটি, হরিয়ানায় তিনি আবার সীমা, বিহারে নেহা, গুজরাতে সেই তরুণীই আবার কাজল! চার রাজ্যে চার পরিচয়ে বিয়ে করেছেন। তার পর টাকাপয়সা গয়নাগাটি নিয়ে উধাও হয়ে গিয়েছেন। এ রকম একের পর এক যুবককে নিজের প্রেমের জালে ফাঁসিয়েছেন। তার পর তাঁদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা থেকে বিয়ে। কিন্তু সেই বিয়েও আবার কয়েক ঘণ্টার। এ ভাবেই চার রাজ্যে ১২ যুবককে প্রতারণার শিকার বানিয়েছেন তরুণী। শেষে পুলিশের জালে ধরা পড়লেন তিনি। উত্তরপ্রদেশ থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে সুইটি ওরফে সীমা ওরফে কাজলকে।
পুলিশ সূত্রে খবর, সুইটির প্রতারণার জাল চার রাজ্য জুড়ে ছড়িয়ে ছিল। তাঁর নিজস্ব একটি দলও রয়েছে। সেই দলে রয়েছেন ৪-৫ জন। কী ভাবে প্রতারণার জাল বিস্তার করেছিলেন সুইটি? পুলিশ জানতে পেরেছে, অনলাইনে পাত্র-পাত্রীর বিজ্ঞাপন দেখে সেখান থেকে তাঁর শিকার বাছতেন। তার পর তাঁর সঙ্গে আলাপ জমাতেন। বাড়ত ঘনিষ্ঠতা। সেই আলাপ বিয়ের দোরগোড়া পর্যন্ত পৌঁছোত। তার পর বিয়ের মণ্ডপ থেকেই অপহৃত হতেন সুইটি। বিয়ের দিন তাঁর দলকে প্রস্তুত থাকতে বলতেন কখন কী ভাবে তাঁকে অপহরণ করতে হবে। শুধু তা-ই নয়, বিয়েতে পাওয়া টাকা, গয়না-সহ তাঁকে যেন অপহরণ করা হয়, সে ভাবে দলকে নির্দেশ দেওয়া থাকত।
আরও পড়ুন:
এ ভাবে কখনও বিহারে, কখনও হরিয়ানায়, কখনও উত্তরপ্রদেশে, কখনও আবার গুজরাতে একের পর এক বিয়ে করেছেন। আর গয়নাগাটি, টাকাপয়সা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়েছেন সুইটি। পুলিশ জানিয়েছে, সুইটির আসল নাম গুলশানা রিয়াজ় খান। উত্তরপ্রদেশের জৌনপুরের এক দর্জির সঙ্গে বিয়ে হয়েছে তাঁর। কিন্তু বিলাসবহুল জীবন গুলশানাকে আকৃষ্ট করত। আর সেই বিলাসবহুল জীবনের জন্য টাকা দরকার ছিল। আর এখান থেকেই গুলাশানার সুইটি, নেহা, সীমা এবং কাজল হয়ে ওঠার কাহিনি শুরু। বৃহস্পতিবার ফাঁদ পেতে গুলশানা এবং তাঁর দলবলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁদের কাছ থেকে প্রচুর গয়না এবং নগদ টাকা উদ্ধার হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, চার রাজ্যে ১২টি বিয়ে করেছেন গুলশানা। শুধু টাকাপয়সা হাতানোর জন্যই সেই বিয়ে করেছিলেন তিনি। উত্তরপ্রদেশেই একটি অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমেছিল পুলিশ। বেশ কয়েকটি সূত্র ধরেই গুলশানার হদিস মেলে। তার পরই তাঁকে ধরতে একটি বিশেষ দল গঠন করা হয়। অবশেষে বৃহস্পতিবার গ্রেফতার হয় গুলশানা।