১৭০ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গে আটকে রয়েছেন ৪১ জন শ্রমিক। উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। এদিকে ক্রমেই ধৈর্য্য হারাচ্ছেন আটক শ্রমিকেরা। তাঁদের সুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা যাবে কি না, উঠছে সেই প্রশ্নও। এই পরিস্থিতিতে প্রশাসনের এক আধিকারিক জানালেন, উদ্ধারকাজ শেষ হতে আরও চার থেকে পাঁচ দিন। আটক শ্রমিকদের সুড়ঙ্গের মধ্যে পাইপের মাধ্যমে সরবরাহ করা হচ্ছে ভিটামিন, শুকনো ফল, অবসাদ রোখা ওষুধ।
যে পাহাড়ের সুড়ঙ্গে শ্রমিকেরা আটক, তার উপর থেকে উদ্ধারকারী দল উল্লম্ব ভাবে আর একটি সুড়ঙ্গ খোঁড়ার চেষ্টা করছেন। মধ্যপ্রদেশের ইনদওর থেকে আনা হয়েছে ড্রিল করার যন্ত্র। সেই নিয়েই উল্লম্ব সুড়ঙ্গ খোঁড়ার চেষ্টা চলছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় সে জন্য একটি মঞ্চ তৈরিও শুরু হয়েছে। উদ্ধারকাজ পরিদর্শনের জন্য সেখানে উপস্থিত রয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর দফতরের একটি দল এবং বিশেষজ্ঞেরা। ৪১ জনকে উদ্ধারের জন্য পাঁচটি পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর প্রাক্তন উপদেষ্টা ভাস্কর খুলবে বলেন, ‘‘বিশেষজ্ঞেরা মনে করছেন, একটি পরিকল্পনার উপর ভিত্তি করে উদ্ধারকাজ না চালিয়ে একই সঙ্গে পাঁচটি পরিকল্পনা মেনে যত দ্রুত সম্ভব আটক শ্রমিকদের কাছে পৌঁছনো উচিত।’’ খুলবে জানিয়েছেন, আটকদের উদ্ধারে আরও চার থেকে পাঁচ দিন সময় লাগবে। তাঁর কথায়, ‘‘ঈশ্বর দয়া করলে তার আগেও হতে পারে উদ্ধার।’’
আরও পড়ুন:
রবিবার সুড়ঙ্গ থেকে শ্রমিকদের উদ্ধারের কাজ পরিদর্শনে গিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিতিন গডকড়ী এবং মুখ্যমন্ত্রী পুষ্করসিংহ ধামি। ধামি বলেন, ‘‘যা যা সম্ভব, করা হচ্ছে। সব রকম বিশেষজ্ঞ দল এখানে কাজ করছেন।’’
শুক্রবার বিকট শব্দ শোনা যায় সুড়ঙ্গ থেকে। তার জেরে স্থগিত রাখা হয় উদ্ধারকাজ। ধসের কারণেই ওই শব্দ শোনা গিয়েছিল। তার পরেই পাঁচ পরিকল্পনা মেনে উদ্ধারকাজ চালানোর বিষয়ে বৈঠকে বসেন কেন্দ্রীয় সরকারের শীর্ষকর্তারা। উদ্ধারকাজে সব কেন্দ্রীয় সংস্থার মধ্যে সংযোগ রক্ষার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মাহমুদ আহমেদদাসকে। সুড়ঙ্গে ইতিমধ্যেই একটি ইস্পাতের পাইপ প্রবেশ করিয়ে অক্সিজেন এবং খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে আটকদের।
এ দিকে সুড়ঙ্গে আটক শ্রমিকদের পরিবার ক্রমেই উদ্বিগ্ন হয়ে উঠছে। অভিযোগের আঙুল তুলছে প্রশাসনের দিকে। কয়েক জন শ্রমিকের সঙ্গে কথা বলতে পেরেছেন তাঁদের পরিবারের সদস্যরা। তাঁদের দাবি, শ্রমিকেরা পর্যাপ্ত খাবারের অভাবে দুর্বল হয়ে যাচ্ছেন। চিকিৎসকেরাও মনে করছেন উদ্ধারের পরেই শ্রমিকদের দ্রুত শারীরিক এবং মানসিক চিকিৎসার প্রয়োজন। চারধাম প্রকল্পের অধীনে এই সুড়ঙ্গ তৈরি করা হচ্ছে। এই সুড়ঙ্গ তৈরি হলে কেদারনাথ, বদ্রীনাথ, গঙ্গোত্রী, যমুনোত্রীর মধ্যে সংযোগ বাড়বে।