টোকিয়োর বন্দরে দাঁড়িয়ে রয়েছে ডায়মন্ড প্রিন্সেস।—ছবি এএফপি।
জাপানি জাহাজ ডায়মন্ড প্রিন্সেসে এ বারে করোনা সংক্রমণ ছড়াল দুই ভারতীয় কর্মীর দেহেও।
বুধবার টোকিয়োর ভারতীয় দূতাবাস সূত্রে প্রথমে এই খবর জানানো হয়। পরে বাঙালি জাহাজ-কর্মী বিনয়কুমার সরকারও একই কথা জানান। তাঁর কাছ থেকেই জানা যায়, যে দুই ভারতীয় কর্মীর মধ্যে সংক্রমণ দেখা দিয়েছে, তাঁরা মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা। ওই জাহাজে বিনয়-সহ ছ’জন বাঙালি কর্মী রয়েছেন। টোকিয়োর বন্দরে দাঁড়িয়ে থাকা জাহাজে তাঁরা সকলেই এখন কার্যত ঘরবন্দি। সকলেই বাড়ি ফিরতে চেয়ে আবেদন জানাচ্ছেন। বিনয় বুধবারও একই আবেদন জানিয়ে জাহাজ থেকে টেলিফোনে বলেন, ‘‘আমি তো ভারতের নাগরিক। ভারত সরকারের কাছ থেকে সাহায্য পাওয়ার অধিকার আমার আছে।’’
গত ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে টোকিয়োর বন্দরে দাঁড়িয়ে রয়েছে জাহাজটি। রোজই ভিডিয়ো বা ফোন-বার্তায় তাঁরা দেশের ফেরার জন্য আর্জি জানাচ্ছেন। এ দিন সকালে প্রথমবার বিনয় জানান, জাহাজে নতুন করে ৩৮ জনের দেহে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। তার মধ্যে ১০ জন জাহাজের কর্মী। সব থেকে উদ্বেগের বিষয়, জাহাজের মধ্যে যে ডাক্তারদের দলটি চিকিৎসা করছিল, সেই দলের এক চিকিৎসক আক্রান্ত হয়েছেন। এতে জাহাজের সকলেই আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন, জানান বিনয়।
বিনয় বলেন, ‘‘আপাতত আমাকে কাজ ছেড়ে বিশ্রামে থাকার নির্দেশ দিয়েছে জাহাজ সংস্থা। জাহাজের মধ্যে একটি ঘরে বিশ্রাম নিচ্ছি।’’ তিনি বলেন, ‘‘সব রকম সুযোগ সুবিধা রয়েছে। প্রতি যাত্রীকে থার্মোমিটার, মাস্ক-সহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা হয়েছে। সেই সব নিয়ে অভিযোগ নেই। কিন্তু আক্রান্তের সংখ্যা তো বেড়েই চলেছে। তাতে আতঙ্ক বাড়ছে।’’ সেই সময়ে বিনয় আরও জানান, সংস্থার কর্তারা আশ্বাস দিয়েছেন, ২০ তারিখে তাঁদের দেশে ফেরানো হবে। কিন্তু যতক্ষণ না ফিরতে পারছেন, নিজেকে নিরাপদ মনে করছেন না। তখনও জানা ছিল না, তাঁদের মতো দুই ভারতীয় কর্মীর দেহে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মিলেছে। পরে ভারতীয় দূতাবাস বিষয়টি জানায়। বিনয়ও রাতে জানান, ওই দুই ভারতীয় মহারাষ্ট্রের লোক। তাঁদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
সংবাদসংস্থার সংযোজন: এই জাহাজ থেকেই আর এক বাঙালি কর্মী সোনালি ঠাকুর ফোন করে জানান, যে ভাবে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে তাতে তাঁরা আতঙ্কিত। ‘‘মনে হচ্ছে, আমাদের দেহেও যে কোনও সময় এর সংক্রমণ হতে পারে। কিন্তু আমরা তা চাই না। আমরা বাড়ি ফিরতে চাই,’’ বলেন তিনি। আরও বলেন, ‘‘আমরা চাই ভারত সরকার আমাদের ফিরিয়ে নিয়ে যাক এবং দেশে আমাদের পৃথক থাকার ব্যবস্থা করুক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy