প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র
ইয়েতিরা কবে এসে এখানে থাকবে, সেই ভেবে আর বেলা বাড়িয়ে লাভ নেই! ইতিমধ্যেই ড্রাগনের গর্জন পৌঁছে গিয়েছে সেই অভয়ারণ্যে। এই বেলা ভারতকে ওই অঞ্চলে রাস্তা তৈরির অনুমতি দিলে ভুটানেরই কৌশলগত এবং বাণিজ্যিক লাভ।
সম্প্রতি ভুটানের ‘ইয়েতি করিডর’-কে ব্যবহার করে সেখানে রাস্তা তৈরির অনুমতি চেয়েছে সাউথ ব্লক। কূটনৈতিক সূত্রে এ খবর জানা গিয়েছে। ওই ভূখণ্ড ব্যবহার করতে পারলে অসমের গুয়াহাটি থেকে অরুণাচলের তাওয়াং পর্যন্ত যাত্রাপথের দূরত্ব এবং সময় কমানো সম্ভব হবে বলে জানা গিয়েছে। সূত্রের বক্তব্য, অতীতে নয়াদিল্লির তরফে এই প্রস্তাব দেওয়া হলেও বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে সাড়া দেয়নি থিম্পু। এবং এই অনাগ্রহের পিছনে চিনের প্রতি আনুগত্যই যে প্রধান এমনই মনে করছে সাউথ ব্লক।
কিন্তু পরিস্থিতি কিছুটা বদলেছে বলেই নতুন করে এই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে ভারতের পক্ষ থেকে। ভুটানের পূর্ব সেক্টর (তাওয়াং-এর সীমান্তবর্তী) হঠাৎ করেই দাবি করেছে বেজিং। এই দাবির মাধ্যমে চিনের আসল উদ্দেশ্য নিঃসন্দেহে অরুণাচলপ্রদেশের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলা। কিন্তু এই দাবি সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে ভুটানের কাছে বিপদজনক, বিশেষ করে যখন এই এলাকা নিয়ে আগে কোনও বিতর্কই ছিল না। তাৎপর্যপূর্ণভাবে ভুটানের পূর্ব সেক্টরে ওই ইয়েতি করিডর সংলগ্ন এলাকাই চিনের বর্তমান দাবির মধ্যে পড়ছে। নয়াদিল্লির বক্তব্য, সেখানে ভারত এবং ভুটানের যৌথ উদ্যোগে প্রকল্প তৈরি হলে ভুটানের জন্য তা কৌশলগত ভাবে গুরুত্বপূর্ণ হবে।
বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, গুয়াহাটি থেকে তাওয়াং পৌঁছতে এখন লাগে ১৫ ঘণ্টা। ভুটানের ওই জমি ব্যবহার করলে এই সময় কমে দাঁড়াবে ৯ ঘণ্টা। বিষয়টি কৌশলগতভাবে ভারতের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তার কারণ, গালওয়ান উপত্যকার পর, অরুণাচল সীমান্তে চিনের সম্প্রসারণবাদের পরবর্তী নজির যে দেখা যাবে না, সে বিষয়ে আর তত নিশ্চিত নয় সাউথ ব্লক। সে ক্ষেত্রে অরুণাচল সীমান্তে চিনের কোনও সামরিক পদক্ষেপ হলে, ভারত দ্রুত নয়া রাস্তা (প্রস্তাবিত) দিয়ে সেখানে দ্রুত পৌঁছতে পারবে। ভারতের তরফে এই প্রস্তাবও ভুটানকে দেওয়া হয়েছে যে তাদের বর্ডার রোড অর্গানাইজেশন (বিআরও) ওই রাস্তা তৈরি করে দেবে।
সূত্রের খবর, নয়াদিল্লির তরফে থিম্পুকে বলা হয়েছে, দু’টি দেশেরই নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগ অভিন্ন। এই রাস্তা তৈরির বিষয়টি শুধু ভারত নয়, ভুটানের জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ঘটনা হল যেখান দিয়ে এই রাস্তাটি যাওয়ার কথা, সেখানে রয়েছে ভুটানের সাকতেং অভয়ারণ্য। প্রাচীন স্থানীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, এই অঞ্চলটিই নাকি ছিল ইয়েতিদের বাসস্থান। এখানে বাস করেন দ্রোকপা উপজাতি, যারা চতুর্দশ শতকে তিব্বত থেকে এখানে চলে এসেছেন। দ্রোকপা-রা এখনও বিশ্বাস করেন, এই অভয়ারণ্যে বাস করে ইয়েতিরা!
ভারত অবশ্য ওই এলাকায় ড্রাগনের নিঃশ্বাস নিয়েই চিন্তিত!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy